রাজশাহীতে সশস্ত্র আওয়ামী লীগ, সামনে এলেন না আন্দোলনকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৫: ৩৮
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ০৫

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধে সশস্ত্র অবস্থায় মাঠে নেমেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের সশস্ত্র অবস্থানের কারণে আজ রোববার আন্দোলনকারীরা শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র রেলগেট এলাকায় আসেননি। তাঁরা নগরীর তালাইমারী হয়ে ভদ্রা পর্যন্ত আসার পর আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ফিরে গেছেন।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন শুরুর প্রথম দিন আন্দোলনকারীরা রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে তাঁরা তালাইমারী মোড় হয়ে ভদ্রায় আসেন। তালাইমারী মোড় ও ভদ্রা এলাকায় পুলিশের লাগানো কয়েকটি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন তাঁরা।

আগের দিন গতকাল শনিবার আন্দোলনকারীরা একইভাবে রুয়েটের সামনে থেকে ভদ্রা হয়ে রেলগেট পর্যন্ত আসেন এবং বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালান। এ জন্য আজ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের প্রতিরোধের জন্য রেলগেট এলাকায় অবস্থান নেন। তাঁদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দেখা গেছে।

এদিকে দেড় কিলোমিটার পূর্বে শিক্ষার্থীদের হাতেও ছিল লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক, লোহার পাইপ ও রড। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা আর সামনে না এগিয়ে ফিরে যান। তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে ভদ্রায় আসেন এবং ১টার দিকে ফিরে যান। উত্তেজনা থাকলেও রেলগেট কিংবা ভদ্রা এলাকার কোথাও পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

ভদ্রা এলাকায় আন্দোলনকারীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। তাঁদের কয়েক দফা ধাওয়া দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে। মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। যুবদলের রাজশাহী মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনিকে মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলতে তাঁর মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়নি।

রাজশাহীর রেলগেট এলাকায় বক্তব্য দেন খায়রুজ্জামান লিটনরেলগেট এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আগের দিন এই রেলগেটে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। এটি কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, বঙ্গবন্ধু-জাতীয় চার নেতাকে মানে না, এটি তাদের কাজ। এরা শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছে। তাদের শক্ত হাতে প্রতিরোধ করা হবে। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার জামিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্দোলনরতরা সকাল থেকে বিক্ষোভ করলেও পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সরকারি স্থাপনা ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কেউ জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির চেষ্টা করলে পুলিশ তা প্রতিরোধ করবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত