Ajker Patrika

‘ঋণের দায়ে কৃষকদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে’

পাবনা প্রতিনিধি
‘ঋণের দায়ে কৃষকদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে’

পাবনার ঈশ্বরদীতে ঋণ খেলাপি মামলায় গ্রেপ্তার ১২ জনসহ ৩৭ জন কৃষককে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. শামসুজ্জামান এ আদেশ দেন। 

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছিলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ওই ১২ কৃষক। তাঁদের দাবি, সেই ঋণ পরিশোধও করে দেন তাঁরা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে পুলিশ গেলে তাঁরা জানতে পারেন, ঋণ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সুমন জানান, একই মামলায় পলাতক ২৫ জন আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। তাঁদেরও জামিন দেওয়া হয়েছে। 

পাবনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেছেন, ‘বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসায় এরই মধ্যে আমাদের কাছে নির্দেশনা এসেছে কোনো কৃষক যেন হয়রানির শিকার না হয়। সেজন্য কৃষকদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই নির্দেশে কাজ শুরু করেছি। কোনো কৃষক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেইলক্ষ্যে সবকিছু জেনে তাদের যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন করা হবে।’ 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি দল বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে ১৬ লাখ টাকা ঋণ নেন। জনপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেন এক একজন কৃষক। ঋণের টাকা কিছু টাকা পরিশোধ করলেও, বেশিরভাগ টাকা বকেয়া থেকে যায়। খেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন। 

গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কৃষকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত পরোয়ানাভুক্ত ৩৭ জনের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। 

কৃষক পরিবারগুলোর দাবি, ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক ঋণ পরিশোধ করেছেন। পাস বই ও জমা স্লিপও রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেই টাকা হয়তো জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। 

আজ আদালত চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় সভাপতি, বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ বলেন, ‘যে কৃষক সকালে ঘুম থেকে উঠে সারা দেশের মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদনে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন, তাঁদের হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’ 

রোববার জামিন নিয়ে আদালত চত্বর ছাড়েন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকামামলার বাদী বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বলেন, ‘কৃষকেরা ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের অফিশিয়াল ব্যবস্থা নিয়েছি। তারা তাদের আইনগত সহায়তা পেয়েছেন।’ 

এ ব্যাপারে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সি বলেন, ‘জামিন হওয়ার পরে কৃষকদের সঙ্গে আমি বলেছি। তাদের কাছ থেকে সবকিছু শুনেছি। তারা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে নজর রাখা হবে।’ 

আদালতে শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সুমন, অ্যাডভোকেট কাজী সাজ্জাদ ইকবাল লিটন ও অ্যাডভোকেট মইনুল ইসলাম মোহন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত