নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
জরাজীর্ণ হলেও চার মাস আগেও বাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। এখন ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা বাড়ির ইটগুলো তিনটি স্তূপ করে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের বাড়ির ইট। মোমবাতি জ্বলছে। ইটের একটি স্তূপের ওপরে ঋত্বিক ঘটকের বড় একটি ছবি। জন্মদিনে যেন এভাবেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজ বাড়িতে ‘ফিরলেন’ ঋত্বিক ঘটক।
রাজশাহী নগরের মিয়াপাড়ায় ঋত্বিক ঘটকের এই পৈতৃক বাড়ি। এ বাড়িতেই শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি সময় কাটিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক। রাজশাহীর সাংস্কৃতিককর্মীদের দাবির মুখে সংরক্ষণের উদ্যোগের মধ্যেই গত ৬ আগস্ট বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লোকজন বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে বলে মনে করেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
ঋত্বিকের পরিবার কলকাতা চলে যাওয়ার পর ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সরকার এ বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে ইজারা দিয়েছিল। ঋত্বিকের ভিটার উত্তর অংশে গড়ে তোলা হয় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের আধুনিক ভবন। আর এই ভবনের দক্ষিণ অংশে ছিল ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বাড়ি।
রাজশাহীর ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরেই ঋত্বিকের বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সরকারও এতে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু নানাভাবেই এতে বিরোধিতা করে আসছিল হোমিওপ্যাথি কলেজ। ফিল্ম সোসাইটি প্রতিবছর ঋত্বিকের জন্মদিনে এ বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এতে অসহযোগিতা দেখা যেত হোমিওপ্যাথি কলেজের। দর্শনার্থীদের কেউ বাড়িটি দেখতে এলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিত না বলেও অভিযোগ আছে। এর মধ্যেই গত ৬ ও ৭ আগস্ট বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এবার ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকীতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় ওই ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। ইটের দুটি স্তূপের মাঝের অল্প একটি ফাঁকা স্থানে করা হয় অতিথিদের বসার জায়গা। দুটি ইটের স্তূপে জ্বালানো হয় অসংখ্য মোমবাতি। একটি স্তূপের ওপর রাখা হয় ঋত্বিক ঘটকের ছবি। অন্য আরেকটি ইটের স্তূপের ওপর ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী’।
হোমিওপ্যাথিক কলেজের ‘বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের’ পক্ষ থেকেও এখানে-ওখানে সাঁটানো কিছু ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়ল। একটিতে লেখা, ‘কতিপয় নামসর্বস্ব ভূমিদস্যু সংগঠনের কবল থেকে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রক্ষায় প্রতিবাদ’। একটি ফেস্টুনে লেখা, ‘আরডিএ কর্তৃক অনুমোদিত কলেজ ও হাসপাতাল বিল্ডিং এর মূল নকশার পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই’।
অন্য একটি ফেস্টুনে লিখে রাখা হয়েছে, ‘মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করুন। তথাকথিত ভাঙা বাড়ি কারও ব্যক্তিগত নয় বরং হোমিও কলেজের নিজস্ব সম্পত্তি’। আরেকটি ফেস্টুনে লেখা, ‘ভূমিদস্যুদের কবল থেকে হোমিও কলেজকে রক্ষা করুন’।
ঋত্বিকের জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব ব্যানার-ফেস্টুনের কথা তুলে ধরলেন সভাপ্রধান ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মাসুদ। বললেন, ‘আমাদের ভূমিদস্যু বলা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এটা লিখে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভূমি অফিসে রেকর্ড আছে এই জমির মালিক ঋত্বিক ঘটকের মা ইন্দুবালা দেবী। এখন যদি আপনাদের (কলেজ কর্তৃপক্ষ) প্রশ্ন করি, আপনারা কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন?’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি কলেজের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কলেজ যেখানে আছে, সেখানেই থাকবে। শুধু ঋত্বিক ঘটকের মূল বাড়ির যে অংশটুকু সেটা সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের এ দাবির মুখে সরকার ৫২ লাখ টাকার প্রকল্পও দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের আগেই ‘ছাত্র-জনতা’ ও ‘দুষ্কৃতকারীদের’ ওপর দায় চাপিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হলো। পাবনায় সুচিত্রা সেনের বাড়িও দখল করে নিয়েছিল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেটা উদ্ধার হয়েছে। এটাও হবে। যারা ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভাঙার সঙ্গে জড়িত তারা অপরাধী। তারা ঐতিহ্যকে হত্যা করেছেন। এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘দিনে দিনে আমরা সাংস্কৃতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছি। ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া তার বড় প্রমাণ। এখন আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়ি নিয়ে আমাদের মন খারাপ করে বসে থাকলে চলবে না। হতাশ হওয়া যাবে না। ভাঙা বাড়ি থেকেই যেন আমরা ফিনিক্স পাখির মতো উঠতে পারি। সামনে ঋত্বিকের ১০০ তম জন্মবার্ষিকী। তার আগেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। ঋত্বিককেন্দ্রীক চলচ্চিত্রচর্চা গতিশীল করতে হবে। আমরা যেন এখানে দায়বদ্ধ হয়ে থাকতে পারি।’
আলোচক হিসেবে কথা বলেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। তিনি বলেন, ‘যে জাতি গুণিজনের কদর করে না, সেখানে গুণীজন জন্মে না। তাই আমরা চাই, যার যেটুকু সম্মান প্রাপ্য, তাকে সেটা দেওয়া হোক। এক সময় ঋত্বিক ঘটকদের জন্য রাজশাহী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সমৃদ্ধ ছিল। এখন সেই কর্মকাণ্ড নেই। এত দিনেও ঋত্বিকের ভিটা সংরক্ষণ কেন হয়নি, সেটা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি উদ্ধার করে এখানে স্মৃতি কমপ্লেক্স কিংবা জাদুঘর করা উচিত। এ উদ্যোগ যারা নিয়েছেন, তারা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। অচিরেই যেন এই কাজটা বাস্তবায়ন হয়, এটাই আমার চাওয়া।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—রাজশাহীর প্রবীণ সাংবাদিক ও আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ. আল-মামুন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মাদ তাওকীর ইসলাম, ডিরেক্টরস অ্যান্ড অ্যাক্টরস গিল্ড, রাজশাহীর সভাপতি ওয়ালিউর রহমান বাবুসহ সাংস্কৃতিককর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সবনাজ মোস্তারি স্মৃতি। খেলাঘর আসর, রাজশাহীর শিল্পীদের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন।
তিন দিনের এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচনা শেষে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’ (১৯৫৮) প্রদর্শিত হবে। আর অনুষ্ঠানের শেষদিন বুধবার সন্ধ্যায় আলোচনার পর প্রদর্শিত হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০)।
জরাজীর্ণ হলেও চার মাস আগেও বাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। এখন ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা বাড়ির ইটগুলো তিনটি স্তূপ করে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের বাড়ির ইট। মোমবাতি জ্বলছে। ইটের একটি স্তূপের ওপরে ঋত্বিক ঘটকের বড় একটি ছবি। জন্মদিনে যেন এভাবেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজ বাড়িতে ‘ফিরলেন’ ঋত্বিক ঘটক।
রাজশাহী নগরের মিয়াপাড়ায় ঋত্বিক ঘটকের এই পৈতৃক বাড়ি। এ বাড়িতেই শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি সময় কাটিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক। রাজশাহীর সাংস্কৃতিককর্মীদের দাবির মুখে সংরক্ষণের উদ্যোগের মধ্যেই গত ৬ আগস্ট বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লোকজন বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে বলে মনে করেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
ঋত্বিকের পরিবার কলকাতা চলে যাওয়ার পর ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সরকার এ বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে ইজারা দিয়েছিল। ঋত্বিকের ভিটার উত্তর অংশে গড়ে তোলা হয় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের আধুনিক ভবন। আর এই ভবনের দক্ষিণ অংশে ছিল ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বাড়ি।
রাজশাহীর ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরেই ঋত্বিকের বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সরকারও এতে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু নানাভাবেই এতে বিরোধিতা করে আসছিল হোমিওপ্যাথি কলেজ। ফিল্ম সোসাইটি প্রতিবছর ঋত্বিকের জন্মদিনে এ বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এতে অসহযোগিতা দেখা যেত হোমিওপ্যাথি কলেজের। দর্শনার্থীদের কেউ বাড়িটি দেখতে এলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিত না বলেও অভিযোগ আছে। এর মধ্যেই গত ৬ ও ৭ আগস্ট বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এবার ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকীতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় ওই ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। ইটের দুটি স্তূপের মাঝের অল্প একটি ফাঁকা স্থানে করা হয় অতিথিদের বসার জায়গা। দুটি ইটের স্তূপে জ্বালানো হয় অসংখ্য মোমবাতি। একটি স্তূপের ওপর রাখা হয় ঋত্বিক ঘটকের ছবি। অন্য আরেকটি ইটের স্তূপের ওপর ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী’।
হোমিওপ্যাথিক কলেজের ‘বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের’ পক্ষ থেকেও এখানে-ওখানে সাঁটানো কিছু ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়ল। একটিতে লেখা, ‘কতিপয় নামসর্বস্ব ভূমিদস্যু সংগঠনের কবল থেকে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রক্ষায় প্রতিবাদ’। একটি ফেস্টুনে লেখা, ‘আরডিএ কর্তৃক অনুমোদিত কলেজ ও হাসপাতাল বিল্ডিং এর মূল নকশার পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই’।
অন্য একটি ফেস্টুনে লিখে রাখা হয়েছে, ‘মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করুন। তথাকথিত ভাঙা বাড়ি কারও ব্যক্তিগত নয় বরং হোমিও কলেজের নিজস্ব সম্পত্তি’। আরেকটি ফেস্টুনে লেখা, ‘ভূমিদস্যুদের কবল থেকে হোমিও কলেজকে রক্ষা করুন’।
ঋত্বিকের জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব ব্যানার-ফেস্টুনের কথা তুলে ধরলেন সভাপ্রধান ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মাসুদ। বললেন, ‘আমাদের ভূমিদস্যু বলা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এটা লিখে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভূমি অফিসে রেকর্ড আছে এই জমির মালিক ঋত্বিক ঘটকের মা ইন্দুবালা দেবী। এখন যদি আপনাদের (কলেজ কর্তৃপক্ষ) প্রশ্ন করি, আপনারা কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন?’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি কলেজের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কলেজ যেখানে আছে, সেখানেই থাকবে। শুধু ঋত্বিক ঘটকের মূল বাড়ির যে অংশটুকু সেটা সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের এ দাবির মুখে সরকার ৫২ লাখ টাকার প্রকল্পও দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের আগেই ‘ছাত্র-জনতা’ ও ‘দুষ্কৃতকারীদের’ ওপর দায় চাপিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হলো। পাবনায় সুচিত্রা সেনের বাড়িও দখল করে নিয়েছিল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেটা উদ্ধার হয়েছে। এটাও হবে। যারা ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভাঙার সঙ্গে জড়িত তারা অপরাধী। তারা ঐতিহ্যকে হত্যা করেছেন। এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘দিনে দিনে আমরা সাংস্কৃতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছি। ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া তার বড় প্রমাণ। এখন আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়ি নিয়ে আমাদের মন খারাপ করে বসে থাকলে চলবে না। হতাশ হওয়া যাবে না। ভাঙা বাড়ি থেকেই যেন আমরা ফিনিক্স পাখির মতো উঠতে পারি। সামনে ঋত্বিকের ১০০ তম জন্মবার্ষিকী। তার আগেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। ঋত্বিককেন্দ্রীক চলচ্চিত্রচর্চা গতিশীল করতে হবে। আমরা যেন এখানে দায়বদ্ধ হয়ে থাকতে পারি।’
আলোচক হিসেবে কথা বলেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। তিনি বলেন, ‘যে জাতি গুণিজনের কদর করে না, সেখানে গুণীজন জন্মে না। তাই আমরা চাই, যার যেটুকু সম্মান প্রাপ্য, তাকে সেটা দেওয়া হোক। এক সময় ঋত্বিক ঘটকদের জন্য রাজশাহী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সমৃদ্ধ ছিল। এখন সেই কর্মকাণ্ড নেই। এত দিনেও ঋত্বিকের ভিটা সংরক্ষণ কেন হয়নি, সেটা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি উদ্ধার করে এখানে স্মৃতি কমপ্লেক্স কিংবা জাদুঘর করা উচিত। এ উদ্যোগ যারা নিয়েছেন, তারা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। অচিরেই যেন এই কাজটা বাস্তবায়ন হয়, এটাই আমার চাওয়া।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—রাজশাহীর প্রবীণ সাংবাদিক ও আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ. আল-মামুন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মাদ তাওকীর ইসলাম, ডিরেক্টরস অ্যান্ড অ্যাক্টরস গিল্ড, রাজশাহীর সভাপতি ওয়ালিউর রহমান বাবুসহ সাংস্কৃতিককর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সবনাজ মোস্তারি স্মৃতি। খেলাঘর আসর, রাজশাহীর শিল্পীদের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন।
তিন দিনের এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচনা শেষে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’ (১৯৫৮) প্রদর্শিত হবে। আর অনুষ্ঠানের শেষদিন বুধবার সন্ধ্যায় আলোচনার পর প্রদর্শিত হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০)।
নড়াইলে মাদক মামলায় তাসলিমা বেগম (৫০) নামের এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. সাইফুল আলম এ দণ্ডাদেশ দেন। রায়ে একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
১৪ মিনিট আগেচট্টগ্রামে এস আলম সংশ্লিষ্ট তিন ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ রোববার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বিঘ্ন ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
৩১ মিনিট আগেবান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) ৩ সদস্য নিহত হয়েছে। আজ রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আইএসপিআর জানায়, বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার গহিন জঙ্গলে সেনাবাহিনী কর্তৃক কেএনএ-এর গোপন আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়
৩৬ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের অ্যারোসল কারখানায় বিস্ফোরণে ১০ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগে