‘পালিয়ে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেছি, কেউ অপহরণ করেনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ২০: ৪৬
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ২১: ৪৮

‘স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেছি। কেউ আমাকে অপহরণ করেনি কিংবা জোর করেও বাড়ি থেকে নিয়ে আসেনি’— পালিয়ে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করায় থানায় অভিযোগের মুখে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেছেন রাজশাহীর ফাতেমা তাবাসসুম খান।

আজ মঙ্গলবার সকালে ব্যবসায়ী স্বামী ফজলে রাব্বীকে পাশে নিয়ে রাজশাহী নগরীর আসাম কলোনি এলাকায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি  হন ২১ বছর বয়সী এই তরুণী। 

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফজলে রাব্বীর (২৬) সঙ্গে ঘর ছাড়েন ফাতেমা তাবাসসুম খান (২১)। রাতেই রাজশাহী শহরের একটি কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা। মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে গতকালই থানায় মৌখিকভাবে অপহরণের অভিযোগ করা হয়।

ফাতেমার বাড়ি রাজশাহী নগরীর রামচন্দ্রপুর বৌবাজার এলাকায়। স্বামীর বাড়িও রামচন্দ্রপুর বৌবাজার এলাকায়। তিনি ব্যবসা করেন।

স্বামী ফজলে রাব্বীর অভিযোগ, ফাতেমাকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। তাই তিনি এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধু গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফাতেমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। রাতেই তাঁরা বিয়ে করেন। 

কেন এই সংবাদ সম্মেলন তা জানতে চাইলে ফাতেমা তাবাসসুম খান বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসেছি। এখন শুনছি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণের মামলা করা হচ্ছে। আমি জানিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।’ 

ফজলে রাব্বী বলেন, চার বছর ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক চলছে। কিন্তু ফাতেমার বাবা-মা বিয়ে দিতে রাজি নন। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এতেও প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে না পেরে ২০১৯ সালের দিকে ফাতেমাকে সৌদি আরবে নিয়ে জোর করে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ফাতেমা সেখানে সংসার করতে পারেননি। দেড় বছর পর ২০২১ সালে দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই বাড়িতে তাঁর ওপর নির্যাতন চলছিল। 

রাব্বীর দাবি, ‘এখন ফাতেমার পরিবার থেকে হয়তো অপহরণের মামলা করা হবে। পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করবে। জেল খাটতে হবে। এর সবই জানি। সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখছি। আর আস্থা রাখছি ফাতেমার ওপর। মামলা হলে ফাতেমা আদালতে গিয়ে বলবে যে, কেউ তাকে অপহরণ করে আনেনি। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে সে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসে বিয়ে করেছে।’ 

বাড়িতে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফাতেমার ছোট ভাই তামিম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্যাতনের অভিযোগ একেবারেই অসত্য। ফজলে রাব্বি ১০-১৫ জন গুন্ডা নিয়ে বোনকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন তাঁকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। জিম্মি অবস্থায় যে কথা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ফাতেমা তাই বলছে।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতেই ফাতেমার পরিবার অপহরণের অভিযোগ করেছে। মামলা করতে এলে আইনগতভাবে দেখা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত