চলনবিলের অপরূপ সৌন্দর্য

শাহীন রহমান, পাবনা 
Thumbnail image

বিশাল বিলের বুকজুড়ে জলরাশি। সেই জলের ঢেউ দোলা দিয়ে যায় হৃদয়ে। কিংবা নৌকায় বসে ঝিরিঝিরি হাওয়ায় উদাসী হয় মন। ইচ্ছে করে বিলের পানিতে নেমে পা ভেজাতে। বিলের পানিতে সূর্যাস্তের দৃশ্য নিয়ে যায় ভালো লাগার অন্য জগতে।

পর্যটকদের জন্য এমনই অপরূপ সৌন্দর্য মেলে ধরে আছে চলনবিল। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের এই সময়ে চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। তবে ঘুরতে এসে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। তাই চলনবিলে পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। তবে পর্যটন কেন্দ্র করতে গিয়ে চলনবিলের ক্ষতি যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। 

বিশাল বিলের বুকজুড়ে জলরাশিসম্প্রতি চলনবিলে সরেজমিনে দেখা যায়, দু’চোখের দৃষ্টিসীমা জুড়ে শুধুই জলরাশি। বাতাসে কান পাতলেই ভেসে আসে জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। ওপরে নীল আকাশ আর ছানা কাটা মেঘ নিজেকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। কখনো সূর্য মেঘের আড়ালে মুখ ঢাকলেও জলে তার প্রতিচ্ছবি মুগ্ধতার সৃষ্টি করে। জলের ঢেউয়ের তালে হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায় এক অন্যরকম ভালো লাগা। হঠাৎ দূর থেকে বিশাল বিলের মাঝে লাল সাদা রঙের ব্রিজ মনে হবে একটি দ্বীপ। যেখানে ইচ্ছে করে পানিতে নেমে পা ভেজাতে। অনেকে গা ভিজিয়েও আনন্দ উপভোগ করেন। বেড়ানো শেষে ফেরার পথে চলনবিলের বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য ছড়িয়ে দেয় মুগ্ধতার আবেশ। সূর্যাস্তের আলো শরীরে মেখে বিমোহিত হবেন।

শেষ বিকেলে চলনবিলের অপরূপ সৌন্দর্যচলনবিলে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, 'দেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিলে প্রতিবছরই এ সময়টাতে ভিড় বাড়ে। এ সময়টাতে নৌকায় বেড়ানো অন্যরকম মজা। চলনবিলে বেড়াতে খুবই ভালো লাগে। তবে ভালো থাকার জায়গা, খাওয়ার হোটেল, পাবলিক টয়লেটসহ বেশ কিছু সমস্যা ও সংকট রয়েছে। এগুলো নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভূমিকা রাখতে পারেন। পাশাপাশি চলনবিলে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে আরও ভালো হয়।' 

চলনবিলের জলরাশি, নীল মেঘ, সূর্যাস্ত নিয়ে যায় ভালো লাগার অন্য জগতেএ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চলনবিল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক মমিন মজিবুল হক সমাজী বলেন, 'সরকারের সকল আইন ও বিধিবিধান মেনে এলজিইডি পরিকল্পিত, সমন্বিত ও টেকসই চলনবিল উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। চলনবিলে যদি পর্যটন শিল্পের বিকাশ বিকাশ ঘটাতে হয় তাহলে ইকো টুরিজমের মতো প্যাকেজ গ্রহণ করতে হবে।'

চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব এস এম মিজানুর রহমান বলেন, 'চলনবিলে পর্যটন কেন্দ্র হতেই পারে। এর আগে বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে যেন চলনবিল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ ও এলাকার মানুষ আছে, তাঁদের মতামত নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ এরই মধ্যে এক হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের চলনবিল এখন ৩৫০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।'           

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত