ভোটে হেরে টাকা ফেরত চাইছেন আ.লীগ নেতা!

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২২, ১০: ৩৭
Thumbnail image

জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে হেরে গিয়ে ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত চাইছেন বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ। তার পক্ষ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সদস্যদের টাকা ফেরত দিতে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে ইউপি সদস্যদের অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

গত ১৭ অক্টোবর বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বগুড়া সদর ওয়ার্ডে সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ। নির্বাচনে তিনি পান ৪২ ভোট। বিপরীতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ টিপু ১০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য মাহমুদা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাহফুজুল ইসলাম রাজকে ভোট দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন নারী সদস্যের জন্য আমাকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভোটের কয়েক দিন আগে দুই দফায় আমাকে হাতখরচ বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। রাজ ভোটে হেরে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক রুমী আমাকে ফোন করে টাকা ফেরত দিতে বলেন।’

মাহমুদা বেগম আরও বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, টাকা খরচ হয়ে গেছে। টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে বাড়িতেও ফিরতে সাহস পাচ্ছি না।’ একই ইউনিয়নের আরেক নারী সদস্য রানীমা খাতুন বলেন, ‘টাকা ফেরত না দেওয়ায় আমাকে অপমান-অপদস্ত করা হয়েছে। আমি বর্তমানে আমার মায়ের বাড়িতে অবস্থান করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গোপনে টাকা দিয়ে এখন হইচই করে টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে।’ ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম খান নান্নুও বলেছেন, ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর কাছেও টাকা ফেরত চেয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, মাহফুজুল ইসলাম রাজ ভোটের আগের দিন ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তাঁদের টাকা দিয়েছেন। অনেক ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর তিনি এখন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রুমী বলেন, ‘আমি কারো কাছে টাকা ফেরত চাইনি। কোনো মেম্বর আমার সামনে এসে বলতে পারবে না।’

মাহফুজুল ইসলাম রাজ টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়া সদরের কোনো ইউপি সদস্য বলতে পারবেন না, আমি তাঁদের সম্মানী দেইনি। কিন্তু তারপর ইউপি সদস্যদের অনেকেই দুই পক্ষ থেকেই টাকা নিয়েছেন। টাকা নেওয়ার পরও আমাকে ভোট দেননি অনেকেই।’ তবে নিজে টাকা ফেরত চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে কারও কাছে টাকা ফেরত চাইনি। যাঁদের মাধ্যমে ইউপি সদস্যরা দুই পক্ষের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছেন, তাঁরা টাকা ফেরত চাইতে পারেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত