Ajker Patrika

রুদ্র যমুনার পেটে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি

আশরাফুল আলম, কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ)
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১২: ৪৮
রুদ্র যমুনার পেটে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় রুদ্ররূপ ধারণ করেছে যমুনা নদী। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, বিদ্যালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। গত কয়েক দিনের ভাঙনে প্রত্যন্ত তেকানী ইউনিয়নের কান্তনগরের হাড্ডির ঘাট পুরোটাই বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নটির বিভিন্ন এলাকা ও নিশ্চিন্তপুরের ডিগ্রী দোরতা গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু কিছু এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও ভাঙন অব্যাহত আছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তেকানী ইউনিয়নের কান্তনগর, চরকান্তনগর ও চর আদিত্যপুরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এসব এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। ভিটেহারা এসব মানুষের কেউ বসবাস করছেন অন্যের বাড়িতে, কেউ আবার উজানে কিনারবেড় চরে নতুন স্বপ্ন নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন। সর্বগ্রাসী যমুনার পেটে গেছে ওই অঞ্চলের অন্তত দেড় শ বিঘা ফসলি জমি। ভাঙনে কান্তনগর কমিউনিটি ক্লিনিক, চরকান্তনগর তালুকদারবাড়ি মসজিদ নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা ধসে গেছে নদীগর্ভে। চরকান্তনগরের কড়িতলা জামে মসজিদটি বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

ভাঙনে ভিটেহারা কান্তনগরের আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া বলেন, ‘দেখতি দেখতি আমাগোর সব ঘরবাড়ি ভাইঙ্গ্যা নদীত চইল্যা গ্যালো। চোহের সামনেই সব হারাইলাম। কিছুই কইরব্যার পাইরল্যাম না।’

ভাঙনের কবলে পড়া সিরাজগঞ্জে কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ডিগ্রী দোরতা উচ্চ বিদ্যালয় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।তেকানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম সিবন চাকলাদার বলেন, ‘ভাঙনে আমাদের সবকিছুই হারিয়ে যাচ্ছে। জিও ব্যাগ ফেলতেছি, কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। আমাদের জন্য স্থায়ী কোনো কিছু করে দিতে হবে যাতে আর না ভাঙে।’

তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ বলেন, ‘ভিটেহারা মানুষগুলো এখন চরের মধ্যে বসবাস করছে। ভাঙন অব্যাহত আছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উপজেলায় জমা দিয়েছি। এখনো কোনো সহায়তা পায়নি নদীভাঙা মানুষ।’

অন্যদিকে চরাঞ্চলের আরেক ইউনিয়ন নিশ্চিন্তপুরের ডিগ্রী দোরতায়ও ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ইউনিয়নকে রক্ষায় নির্মিত বাঁধের প্রায় সোয়া কিলোমিটার ধসে গেছে। অর্ধশতাধিক ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি চলে গেছে নদীতে। শেষ রক্ষা হয়নি ডিগ্রী দোরতা উচ্চবিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়টির চালা খুলে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে এক দিন আগেই। ঘরের জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, ‘যমুনার ভাঙন থেকে আমরা বিদ্যালয়টিকে রক্ষা করতে পারলাম না। ভাঙন রোধে তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছে না চরাঞ্চলবাসী। কিছু কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নিলে চরাঞ্চল রক্ষা করা কঠিন হবে।’

এ ব্যাপারে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার বলেন, ‘ভাঙনকবলিতদের তালিকা হচ্ছে। সরকারি কোনো বরাদ্দ এলেই তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আসলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তো  অনুদানের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ভাঙনস্থলে। এখনো কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। তবে চরাঞ্চল রক্ষায় একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণের কাজ চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত