Ajker Patrika

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেলেন না রাজশাহী বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোকবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৩৫
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেলেন না রাজশাহী বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোকবুল

বিধিবহির্ভূতভাবে ছয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহা. মোকবুল হোসেনের ক্ষমার আবেদন নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি। ফলে তাঁর বেতন গ্রেডের ধাপে অবনতিকরণের লঘুদণ্ড বহাল থাকল।

গত ৩১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলাবিষয়ক শাখার সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আজ সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমানে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. মোকবুল হোসেন ২০২০ সালে ১৫ জানুয়ারি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ছয়জন কর্মকর্তাকে বিধিবহির্ভূতভাবে পদোন্নতির আদেশ দেন। তা ছাড়া তারিখ জেনেও এ-সংক্রান্ত বিষয়ে গঠিত কমিটির তদন্তে অনুপস্থিত থেকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়। একই বিধিমালার বিধি ৪ (২) (ঘ) মোতাবেক ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই প্রজ্ঞাপনমূলে ‘বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকর’ লঘুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তিনি ওই আদেশের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ মার্জনা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

কিন্তু রাষ্ট্রপতি পুনর্বিবেচনার আবেদন নামঞ্জুর করে আগের দণ্ড বহাল রেখেছেন। কাজেই ড. মোহা, মোকবুল হোসেনের ‘বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনতিকরণ’ লঘুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখা হলো।

এর আগে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের এক তদন্তে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ১৫ কর্মকর্তার পদোন্নতিতে অনিয়ম ধরা পড়ে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) বিভাগের পৃথক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৩ থেকে ২৫ নভেম্বর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে সরেজমিন এ বিষয়ে তদন্ত করে।

২০২২ জানুয়ারিতে এ কমিটি দুদক ও মাউশিতে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ওই ১৫ কর্মকর্তার পদোন্নতি স্থগিত এবং গ্রহণ করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর পদোন্নতি স্থগিত এবং গ্রহণ করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রজ্ঞাপনতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ও অধ্যাপক মো. মোকবুল হোসেনের নিজ নিজ আমলে পদোন্নতির এসব অনিয়ম ঘটে। দুই দফায় ১৫ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে নানা অনিয়ম করেছেন তাঁরা। সিলেকশন কমিটিও নিয়ম না মেনে তাঁদের পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল। প্রথমে ২০১৭ সালে ৯ জন সপ্তম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পান। তাঁদের পদোন্নতি দিতে সিলেকশন কমিটি ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে ৪৮ জন কর্মকর্তার মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে।

কমিটির সভাপতি ছিলেন বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। ৪৮ জনের মধ্যে কমিটি ৯ জনকে পদোন্নতির সুপারিশ করলে ২০১৭ সালের ৯ জুলাই তাঁদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। শুধু মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ৯ জনের পদোন্নতির তালিকাটি করা হয়।

ওই মেধাতালিকা থেকে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোকবুল হোসেন আরও ছয়জনকে পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেন। প্রথমে বিতর্কিত ওই মেধাতালিকার ১ থেকে ৯ নম্বর ক্রমিকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হলেও দ্বিতীয় ধাপের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এ ক্রমিক অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্তভাবে দণ্ডপ্রাপ্ত হন অধ্যাপক মোকবুল হোসেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে ড. মোহা. মোকবুল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত