Ajker Patrika

আদালতের নিয়োগ পরীক্ষায় ‘অনেকেই মোবাইল দেখে লিখেছে’

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে নিয়োগ পরীক্ষার পর নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাটোরে নিয়োগ পরীক্ষার পর নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর আদালতে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, মোবাইল ফোন থেকে দেখে উত্তর লেখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। আজ শনিবারের এ ঘটনায় তাঁরা পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটরের একটি, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটরের সাতটি, বেঞ্চ সহকারী, নাজির ও অফিস সহকারী কাম অপারেটরের ১০টি, জারিকারকের ছয়টি ও অফিস সহায়কের ১০টি পদে শনিবার সকালে লিখিত পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয় নাটোরের নবাব সিরাজ উদ্-দৌলা (এনএস) সরকারি কলেজ কেন্দ্রে।

পরীক্ষা শেষে কলেজের বাইরে এসে হট্টগোল শুরু করেন অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, কতিপয় পরীক্ষার্থী আগে থেকেই লেখা কাগজ নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন এবং তা দেখে খাতায় উত্তর লেখেন। তাঁরা পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র পেয়ে সেটি দেখে কাগজে উত্তর লিখে নিয়ে আসেন।

সাঁটলিপিকার পদে পরীক্ষা দিতে ঢাকা থেকে আসা রাসেদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের ১০১ নম্বর রুমে অনেকেই মোবাইল দেখে লিখেছে। প্রশ্ন ফাঁস না হলে কীভাবে এবং কেন তাদের মোবাইল দেখে লিখতে হলো?’

বেঞ্চ সহকারী পদে পরীক্ষা দিতে পঞ্চগড় থেকে আসেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার শুরু থেকেই অনিয়ম হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট পরে যাকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে সে সাদা কাগজে লেখা উত্তরসহ ধরা পড়েছে। কেউ হাতে, কেউ মোবাইলে, কেউ কাগজে উত্তর এনেছে। আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মীয়স্বজন হওয়ায় যাদের প্রবেশপত্র বাতিল হওয়ার কথা ছিল তাদের প্রবেশপত্র দিয়ে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

মো. তারেকুজ্জামান নামের আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমি সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের পরীক্ষা দিতে আসি। পরীক্ষা দেওয়ার সময় লক্ষ করি একটি কাগজের লেখা থেকে হুবহু উত্তরপত্রে লিখছে কয়েকজন পরীক্ষার্থী। এর প্রতিবাদ করায় ইনভিজিলেটর একজনকে বহিষ্কার করে। এটাই প্রমাণ করে এই পরীক্ষা সুষ্ঠু হয়নি।’

পরীক্ষার্থী লিটন সরকার আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মতো অনেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা খরচ করে এই রোজার মধ্যে পরীক্ষা দিতে এসেছে। অথচ প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য এই কষ্ট বৃথা হতে যাচ্ছে।’

এ নিয়ে কথা হলে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ওপর দায়িত্ব ছিল সিট প্ল্যান বসানো এবং পরীক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। আমরা সেটি করেছি। জজকোর্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সিলগালা করা খাতা নিয়ে এসে বিতরণ করে তাঁরাই গ্রহণ করেছেন। আমরা শুধু পর্যবেক্ষণ করেছি মাত্র।’

কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল বারী মির্জা জানান, তাঁদের ওপর দায়িত্ব ছিল কেউ যেন কোনো প্রকার ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে না পারেন বা অন্য কোনো প্রকার অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন, সে বিষয়টি খেয়াল রাখার। বাকি ব্যবস্থাপনা করেছেন জজকোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে জানতে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত