দড়িয়াপুরের মেঠো পথে লাগেনি ইটের ছোঁয়া

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ০৯
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ২২

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দড়িয়াপুর গ্রাম। এই গ্রামের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এখনো পর্যন্ত এই মেঠো পথে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। ফলে বর্ষা মৌসুমসহ সারা বছরই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীকে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একাধিকবার আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। এ ছাড়া পুরো রাস্তার কোথায়ও নেই কোনো সোলার লাইট, যে কারণে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই চলে মাদক ও জুয়ার আসর। এতে করে যুবসমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। 
 
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের সর্বশেষ গ্রাম দড়িয়াপুর। এই গ্রামের পশ্চিম ও উত্তর দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা, দক্ষিণ ও পূর্বদিকে রানীনগর উপজেলা আর মাঝখানে দড়িয়াপুর গ্রাম। এই গ্রামে কয়েক হাজার লোকের বসবাস। এখানে চকউজির স্কুল থেকে দড়িয়াপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে রানীনগর কালীবাড়ি বাজার পর্যন্ত একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা চলে গেছে। 

২০০৩ সালে এখানে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু রাস্তা মেরামতের কাজে মাটি কিংবা ইটের তেমন কোনো ব্যবহার করা হয়নি। ফলে চকউজির স্কুল থেকে রমজান লাঠিয়ালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় একটু বৃষ্টি হলে কাঁদায় পরিণত হয়। এ ছাড়া রাস্তার মাঝে মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে জলাশয় তৈরি হয়। এমতাবস্থায় গ্রামবাসীর হেঁটে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। 
 
এ বিষয়ে দড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রউফ রিপন বলেন, 'দড়িয়াপুর গ্রামের এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনই পাশের চকউজির, প্রান্নাথপুর, চণ্ডীপুর, চকবুলাকিসহ শতাধিক গ্রামের মানুষ রানীনগর বাজারে যাতায়াত করে। এ ছাড়া কৃষকের উৎপাদিত সবজিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য নিয়ে বাজারে যেতেও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।' 

দড়িয়াপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস লেবু বলেন, 'বর্তমান সরকার নাকি শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেবে। কিন্তু আমরা এই গ্রামের বাসিন্দারা আজ পর্যন্ত কোনো সুবিধার মুখ দেখলাম না। আমাদের চলাচলের একমাত্র মেঠো পথে এখন পর্যন্ত ইটের ছোঁয়া লাগল না। তাহলে সরকারের উন্নয়ন কোথায় হচ্ছে? বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, সরকার যেন এই মেঠো পথকে আধুনিক রাস্তায় পরিণত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।' 

গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি শিক্ষক আমজাদ হোসেন মাস্টার এ বিষয়ে বলেন, 'গ্রামটি সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহায়তায় মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের কাজে গ্রামবাসী যুক্ত। আমি বহুবার পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন মহলে গ্রামের এ পরিস্থিতির কথা একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।' 

প্রান্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, 'বর্তমানে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে একেবারে বঞ্চিত এমন গ্রাম মনে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। তাই এই গ্রামের প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন জ্ঞাপন করছি।' 

এ বিষয়ে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, 'এই রাস্তার সার্বিক তথ্য আমার জানা। কিন্তু রাস্তাটি আধুনিকায়ন করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তার জোগান দেওয়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। উপজেলা প্রশাসন চাইলে রাস্তাটি প্রকল্প আকারে বরাদ্দ নিয়ে আসতে পারে।' 

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়ের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা রিসিভ না করার কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত