রাজশাহীতে ওএমএসের নতুন ডিলার নিয়োগে সুপারিশের চাপ

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯: ২৬

রাজশাহী মহানগর এলাকায় খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রির (ওএমএস) পুরোনো ডিলাররা বাদ পড়ছেন। নতুন করে ডিলার নিয়োগের জন্য আবেদন নিয়েছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন আবেদন নেওয়ার পর থেকে সুপারিশের চাপে পড়েছেন তাঁরা। স্থানীয় বিএনপির নেতারা তাঁদের কর্মী-সমর্থককে ডিলার নিয়োগের জন্য চাপ দিয়েছেন। তবে নিয়ম মেনেই সবকিছু হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরের ৩০টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন ওএমএস ডিলার রয়েছেন। আওয়ামী সরকারের শাসনামলের পুরো সময়টিই এই ডিলাররা ওএমএসের পণ্য বিক্রি করেছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সুপারিশে তাঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া এই ডিলারদের বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন ১৯ জন ডিলার ওএমএসের পণ্য বিক্রি করে থাকেন। সম্প্রতি নতুন ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে ৩৬৭ জন আবেদন করেন। ওএমএসের বিভাগীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে ডিলার নিয়োগ চূড়ান্ত করবে। এই কমিটির সভাপতি বিভাগীয় কমিশনার। আর সদস্যসচিব আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। আবেদন নেওয়ার পর থেকেই সুপারিশের চাপে পড়েছেন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ডিলার নিয়োগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন নেতা তাঁদের নিজ নিজ ওয়ার্ডের ডিলার নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছেন। দু-একজন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়েও তালিকা দিয়ে এসেছেন।

মহানগর যুবদলের সাবেক এক নেতা আজকের পত্রিকার কাছে দাবি করেছেন, গত মঙ্গলবার মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১০০ জনের একটি তালিকা দিয়ে এসেছেন। তাঁদের সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তিনি চাপ দিয়েছেন বলে ওই নেতা দাবি করেন।

তবে জানতে চাইলে মামুন-অর-রশিদ দাবি করেন, তিনি কখনোই আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে যাননি। অন্য কোনো অফিসেও তিনি এখন পর্যন্ত যাননি। মামুন বলেন, ‘অনেকেই এটা করে যে বিভিন্ন অফিসে যায় এবং বলে “আমাকে মামুন ভাই পাঠিয়েছে।” এটা হতে পারে। তবে আমি এখন পর্যন্ত কোনো অফিসে কোনো সুপারিশ নিয়ে যাইনি।’

তবে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন, ডিলার নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে বিএনপির নেতা মামুন-অর-রশিদ তাঁর দপ্তরে গেছেন। মাইন উদ্দিন বলেন, ‘উনি (মামুন-অর-রশিদ) এসেছিলেন। আরও কয়েকজন এসেছেন। তাঁরা বলেছেন, “এগুলো একটু দেখবেন।” সুপারিশটা এ রকম, “আমার একটা লোক আছে, একটু দেইখেন।” এই দেখার চাপেই আছি। তবে কমিশনার স্যার (বিভাগীয় কমিশনার) খুব স্ট্রং। তিনি নিয়মের বাইরে যাবেন না।’ 

খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন আরও বলেন, ‘অনেকেই বিক্ষিপ্তভাবে সুপারিশ করেছেন। তালিকা দেওয়ার আইনগত ভিত্তি নেই। আমাদের কিছু করারও নেই। কারণ সুপারিশ করলেও যদি কাগজপত্র ঠিক না থাকে, দোকান না থাকে, তাহলে বাদ পড়বে। এখন আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। ১৯টি পয়েন্টের জন্য ডিলার নিয়োগ করা হবে। কতজন নিয়োগ করা হবে, সে সিদ্ধান্ত হয়নি।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত