চাটমোহরে যুবকের মাথা ফাটানো পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত

পাবনা ও চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৭: ০৬

বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল সরানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবককে মেরে মাথা ফাটানোর অভিযোগে পাবনা চাটমোহর থানার পুলিশ কনস্টেবল সিরাজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে করা হয়েছে। 

আজ রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মাসুদ আলম। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘শনিবার সকালের ঘটনার পর বিকেলে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

গতকাল শনিবার সকালে চাটমোহর পৌর এলাকার মহিত কলোনির চৌধুরীপাড়া এলাকায় মকবুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। আহত যুবক মকবুল হোসেন উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের টলটলিপাড়া গ্রামের মৃত শফিউদ্দিন প্রামানিকের ছেলে। 

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম চাটমোহর থানার কনস্টেবল এবং থানার ওসির বডিগার্ড। তিনি ভুক্তভোগী মকবুলের ভাই সবেদ প্রামানিকের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। 

ভুক্তভোগী মকবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, কয়েক দিন ধরে তাঁর ভাই সবেদ প্রামানিকের বাড়ির কাজ চলছিল। ভাই বিদেশে থাকায় এসব কাজের দেখাশোনা করছিলেন তিনি। শনিবার কাজের জিনিসপত্র নেওয়ার সময় গেটের সামনে রাখা পুলিশ কনস্টেবলের মোটরসাইকেলটি সরাতে বলেন মকবুল। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড দিয়ে তাঁকে মাথায় আঘাত করেন কনস্টেবল সিরাজুল। এতে মকবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন তিনি। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে মকবুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করলে বাধা দেন কনস্টেবল সিরাজুল। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিলে সটকে পড়েন সিরাজুল। পরে আহত মকবুলকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

এ বিষয়ে মকবুলের চাচা আব্দুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মকবুলকে মারপিট করার পর চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে থানায় নিয়ে রেখেছে শুনে আমি থানায় যাই। বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপারকে (চাটমোহর সার্কেল) জানানোর পর আমি আমার ভাতিজাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। মকবুলের মাথায় চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। হাতের আঙুলেও আঘাত পেয়েছে।’ 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মকবুল হোসেন একবার সকাল সাতটার দিকে ডাকাডাকি করলে আমি গেট খুলে দিয়ে ঘুমাতে যাই। ৯টার কাছাকাছি সময়ে সে এসে আবার ডাকাডাকি শুরু করলে আমি গেট খুলে দেই। সে বারবার দ্রুত মোটরসাইকেল সরাতে বলে। একপর্যায়ে সে বলে ভালো না লাগলে বাসা ছেড়ে দেন। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সে বলে, আপনি ক্ষমতার গরম দেখাচ্ছেন? এ সময় কাঠের বাটাম দিয়ে আমি তাঁকে মারি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’ 

সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) হাবিবুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি একটি প্রশিক্ষণে আছি। ইতিমধ্যে ওই পুলিশ সদস্যকে পাবনা পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত