Ajker Patrika

আদালতের নিষেধাজ্ঞায় শেরপুরে থেমে গেল সড়ক উন্নয়নের কাজ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আদালতের নিষেধাজ্ঞায় শেরপুরে থেমে গেল সড়ক উন্নয়নের কাজ

সরকার নির্ধারিত জায়গার পরিবর্তে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে শুরু করা হয়েছে সড়ক উন্নয়নের কাজ। উপায় না দেখে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন ওই ব্যক্তি। এখন আদালতের নিষেধজ্ঞার কারণে বন্ধ হয়েছে সড়ক উন্নয়নের কাজ। মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কায় বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের তিরাইল গ্রামের এক কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন প্রকল্প। এ জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী। 

শেরপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ এই সড়কের উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে চলতি অর্থবছরে এই সড়কের উন্নয়নে বিপরীতে ব্যয় ধরা ছিল এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা। গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে কাজ শুরু করে কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেরিন এন্টারপ্রাইজ। ইতিমধ্যে তারা কাজের প্রায় ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু তিরাইল গ্রামের বাসিন্দা সোলেমান আলী বাদি হয়ে বগুড়ার শেরপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। এই মামলায় আদালত থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

মামলার বাদী সোলায়মান আলীর ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, এই এলাকায় সরকারি রেকর্ডে রাস্তার জন্য ৬৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। কিন্তু অন্যায়ভাবে আমাদের জমিতে সড়ক তৈরি করা হয়েছে। সড়কের কাজ শুরু হওয়ার পরপরই আমরা শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করলে গত জানুয়ারির ২১ তারিখে এলজিইডি’র বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী, ভবানীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ ৮ জনকে বাদী করে আদলতে মামলা করা হয়। আদালতের কারণ দর্শানোর সময় পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো জবাব দেননি। এ সময় আদালতের নির্দেশে তদন্ত কমিশন আমাদের অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে গত ১২ মার্চ আদালত কাজের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

এই আদেশ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) লিয়াকত হোসেন। 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে এলাকার মানুষদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তাদের আশঙ্কা বহুদিনের প্রত্যাশিত সড়কের কাজ বন্ধ হলে আগামী বর্ষায় ভোগান্তি বাড়বে। তারা যেকোনো উপায়ে সড়কের কাজ সম্পন্ন দেখতে চান। আবার অনেকে মনে করেন সরকারের জায়গাতেই সড়কটি হওয়া উচিত, কোনো ব্যক্তির ক্ষতি করে নয়। জমির কাগজ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব অবহেলা করেছেন বলে তাদের মতামত। 

তিরইল গ্রামের সিপন মণ্ডল বলেন, এই সড়কটি এলাকার মানুষের কৃষি পণ্য ও উপকরণ সরবরাহ এবং শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। বর্ষাকালে আমরা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। তাই যেকোনো ভাবেই হোক উন্নয়নকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। 

একই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, সরকারি ভূমি নকশায় যে রাস্তা উল্লেখ করা হয়েছে তার পাশেই একটি পুকুর আছে। কয়েক বছর আগে পুকুর প্রশস্ত করণের নামে সড়কের জমি দখল করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। স্থানীয় প্রশাসন সরকারি জমি উদ্ধার না করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে। এর আইনি সমাধান না করে সড়কের কাজ করা ঠিক হবে না। 

কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক সেলিম মাহমুদ বলেন, আমরা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে নকশা অনুযায়ী কাজ করেছি। এখন সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। 

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘আমরা সড়কের জন্য কোনো জায়গা নির্ধারণ করি না। এলাকার জনগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যমান সড়ক উন্নয়নের কাজ করি। প্রাক্কলনের সময় যেখানে রাস্তা পাওয়া গেছে সেখানেই কাজ শুরু করা হয়েছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত উন্নয়নকাজ বন্ধ থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত