রিমন রহমান, রাজশাহী
পুরো শহর নিয়ে সংসদীয় আসন রাজশাহী-২। এ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০০৮ সাল থেকেই পর পর তিন মেয়াদে ১৪ দলের মনোনয়নে তিনি এখানে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ জন্য নিজ দলের হাতুড়ি প্রতীক বাদ দিয়ে ভোট করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে। এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। তাঁর দলের নেতারা আশা করছেন, এবারও বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করবে আওয়ামী লীগ।
তবে বিভাগীয় এই শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে দিতে চান না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহীর মানুষকে বারবার ধোঁকা দিয়েছেন। শহরের যা উন্নয়ন করার তা করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বাদশার তেমন অবদানই নেই। নিজ দলের এমপি থাকলে ত্বরান্বিত হতো উন্নয়ন। তাই তাঁরা এবার এ আসনে নিজেদের দল থেকে এমপি প্রার্থী চান।
এবার ফজলে হোসেন বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করা হলেও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ আলাদা প্রার্থী নিয়ে ভোটের মাঠে নামবে—এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছেন দলটির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা ও নগর যুবলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি রমজান আলী। তাঁরা এবার নৌকার মাঝি বদলের দাবি তুলেছেন।
কেন এ দাবি
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগের ভোটে এমপি হলেও এই দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের রাজশাহীর শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্যও করেন তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ফজলে হোসেন বাদশা তাঁর ৪৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। সেই ইশতেহারের কিছুই পূরণ করতে পারেননি। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ভূমিকা রাখেননি উন্নয়নে।
গত নির্বাচনের আগে বাদশার প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে ছিল ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সংগীত, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি মহাবিদ্যালয় স্থাপন, বিশ্বমানের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা, ভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা, রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও হাসপাতালের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন, বস্তিবাসীদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত, বস্তি উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় তাঁদের সুলভে আবাসন সৃষ্টি, পদ্মা নদীকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু স্থাপন এবং আধুনিক মানের একটি আর্কাইভ ও জাদুঘর স্থাপন করা।
এর পাশাপাশি বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরকে বিশ্বপরিসরে তুলে ধরা, রাজশাহী বিমানবন্দরটিকে কার্গো ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নীত করা, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু, রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বিমান সার্ভিস চালু, ঢাকা-রাজশাহী একাধিক বিরতিহীন ট্রেন চালু, রাজশাহীর সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি জাতীয় মহাসড়ককে ৪ ও ৬ লেনে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিশ্রুতি ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দুই হাজার শয্যায় উন্নীত করার। তিনি হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে থাকলেও তা পারেননি। অন্যান্য প্রতিশ্রুতিগুলোরও কিছুই তিনি পূরণ করতে পারেননি পাঁচ বছরে। তিনি তাঁর ঐচ্ছিক তহবিলের অর্থ স্বজনপ্রীতি করে বরাদ্দ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘ভোটের সময় ফজলে হোসেন বাদশা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেননি। এগুলো বাস্তবায়ন করতে হলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা দরকার ছিল। তিনি সেটা রাখেননি। এখন তিনি ভোট চাইতে গেলে মানুষ তাঁর কাছে প্রশ্ন করবে গতবারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের খবর কি? তিনি জবাব দিতে পারবেন না। তাই এবার আমরা কোনো ভাড়াটে এমপি চাই না। আমরা এবার আমাদের দল থেকেই এমপি প্রার্থী চাই।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। আমরা ভোট দিয়ে তাঁকে এমপি বানাই। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। এই যে এখন হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে আছি, তিনি নেই। আমাদের সঙ্গে না থাকুক, তিনি তাঁর দলের সঙ্গে তো রাজশাহীর মাঠে থাকতে পারতেন। সেটাও আমরা দেখিনি।’
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ‘রাজশাহী একটা বিভাগীয় শহর। এখানকার উন্নয়ন করতে হলে সিটি মেয়র ও এমপির সমন্বয় থাকা দরকার। সেই সমন্বয়টা এমপি ফজলে হোসেন বাদশা করেন না। তাই আমরা নিজ দলেরই এমপি চাই। তাহলে মেয়রের সঙ্গে হাতে হাত রেখে শহরটাকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’
আসন চায় জাসদও
জোটের কারণে আওয়ামী লীগ আবারও ওয়ার্কার্স পার্টিকে এ আসন ছেড়ে দিচ্ছে কি না তা ভেবে অস্বস্তিতে আছেন দলটির স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে আসনটি দাবি করছে আরেক শরিক দল জাসদ। দলটি তাঁদের মহানগরের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলীকে মনোনয়ন দিয়েছে।
শিবলী বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আসনটা তো ওয়ার্কার্স পার্টিকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এমপি ১৪ দলের এমপি হতে পারেননি। ফজলে হোসেন বাদশা শুধু ওয়ার্কার্স পার্টিরই এমপি হয়ে থেকেছেন। ১৫ বছরের মধ্যে তিনি ১২ বছরই শরিক দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন। ভোটের সময় ছাড়া অন্য সময় কোনোরকম যোগাযোগ রাখেননি। জনগণ থেকেও তিনি বিচ্ছিন্ন। বর্তমানে তিনি অসুস্থও। তাই চাই, এ আসনটা এবার জাসদকে দেওয়া হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে যদি ১৪ দলের প্রার্থী করা নাও হয়, তবুও আমাদের নিজ দলের মশাল প্রতীক নিয়ে আমার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। সারা দেশেই কিছু আসন এ রকম ওপেন থাকবে। রাজশাহী সদর আসনটিও ওপেন সিট হিসেবে থাকবে। আমি নির্বাচন করতে চাই।’
ওয়ার্কার্স পার্টিতেও প্রস্তুতি
সদর আসনে ১৪ দলের প্রার্থী আসলেই কে হচ্ছেন তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কিছুদিন ধরে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এই দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার হাতেই নৌকা তুলে দেওয়া হবে ধরে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন কমিটিও করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিজ দলের ভেতর থেকে প্রার্থী করার দাবির বিষয়ে কথা বলতে ফজলে হোসেন বাদশাকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ধরেননি।
ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রকম দাবি তোলা হয়। তবে এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঠেকাতে ১৪ দলের ঐক্যের বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, এবারও আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদককেই এখানে ১৪ দলের প্রার্থী করা হবে।’
পুরো শহর নিয়ে সংসদীয় আসন রাজশাহী-২। এ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০০৮ সাল থেকেই পর পর তিন মেয়াদে ১৪ দলের মনোনয়নে তিনি এখানে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ জন্য নিজ দলের হাতুড়ি প্রতীক বাদ দিয়ে ভোট করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে। এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। তাঁর দলের নেতারা আশা করছেন, এবারও বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করবে আওয়ামী লীগ।
তবে বিভাগীয় এই শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে দিতে চান না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহীর মানুষকে বারবার ধোঁকা দিয়েছেন। শহরের যা উন্নয়ন করার তা করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বাদশার তেমন অবদানই নেই। নিজ দলের এমপি থাকলে ত্বরান্বিত হতো উন্নয়ন। তাই তাঁরা এবার এ আসনে নিজেদের দল থেকে এমপি প্রার্থী চান।
এবার ফজলে হোসেন বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করা হলেও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ আলাদা প্রার্থী নিয়ে ভোটের মাঠে নামবে—এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছেন দলটির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা ও নগর যুবলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি রমজান আলী। তাঁরা এবার নৌকার মাঝি বদলের দাবি তুলেছেন।
কেন এ দাবি
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগের ভোটে এমপি হলেও এই দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের রাজশাহীর শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্যও করেন তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ফজলে হোসেন বাদশা তাঁর ৪৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। সেই ইশতেহারের কিছুই পূরণ করতে পারেননি। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ভূমিকা রাখেননি উন্নয়নে।
গত নির্বাচনের আগে বাদশার প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে ছিল ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সংগীত, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি মহাবিদ্যালয় স্থাপন, বিশ্বমানের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা, ভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা, রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও হাসপাতালের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন, বস্তিবাসীদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত, বস্তি উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় তাঁদের সুলভে আবাসন সৃষ্টি, পদ্মা নদীকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু স্থাপন এবং আধুনিক মানের একটি আর্কাইভ ও জাদুঘর স্থাপন করা।
এর পাশাপাশি বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরকে বিশ্বপরিসরে তুলে ধরা, রাজশাহী বিমানবন্দরটিকে কার্গো ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নীত করা, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু, রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বিমান সার্ভিস চালু, ঢাকা-রাজশাহী একাধিক বিরতিহীন ট্রেন চালু, রাজশাহীর সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি জাতীয় মহাসড়ককে ৪ ও ৬ লেনে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিশ্রুতি ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দুই হাজার শয্যায় উন্নীত করার। তিনি হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে থাকলেও তা পারেননি। অন্যান্য প্রতিশ্রুতিগুলোরও কিছুই তিনি পূরণ করতে পারেননি পাঁচ বছরে। তিনি তাঁর ঐচ্ছিক তহবিলের অর্থ স্বজনপ্রীতি করে বরাদ্দ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘ভোটের সময় ফজলে হোসেন বাদশা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেননি। এগুলো বাস্তবায়ন করতে হলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা দরকার ছিল। তিনি সেটা রাখেননি। এখন তিনি ভোট চাইতে গেলে মানুষ তাঁর কাছে প্রশ্ন করবে গতবারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের খবর কি? তিনি জবাব দিতে পারবেন না। তাই এবার আমরা কোনো ভাড়াটে এমপি চাই না। আমরা এবার আমাদের দল থেকেই এমপি প্রার্থী চাই।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। আমরা ভোট দিয়ে তাঁকে এমপি বানাই। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। এই যে এখন হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে আছি, তিনি নেই। আমাদের সঙ্গে না থাকুক, তিনি তাঁর দলের সঙ্গে তো রাজশাহীর মাঠে থাকতে পারতেন। সেটাও আমরা দেখিনি।’
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ‘রাজশাহী একটা বিভাগীয় শহর। এখানকার উন্নয়ন করতে হলে সিটি মেয়র ও এমপির সমন্বয় থাকা দরকার। সেই সমন্বয়টা এমপি ফজলে হোসেন বাদশা করেন না। তাই আমরা নিজ দলেরই এমপি চাই। তাহলে মেয়রের সঙ্গে হাতে হাত রেখে শহরটাকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’
আসন চায় জাসদও
জোটের কারণে আওয়ামী লীগ আবারও ওয়ার্কার্স পার্টিকে এ আসন ছেড়ে দিচ্ছে কি না তা ভেবে অস্বস্তিতে আছেন দলটির স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে আসনটি দাবি করছে আরেক শরিক দল জাসদ। দলটি তাঁদের মহানগরের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলীকে মনোনয়ন দিয়েছে।
শিবলী বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আসনটা তো ওয়ার্কার্স পার্টিকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এমপি ১৪ দলের এমপি হতে পারেননি। ফজলে হোসেন বাদশা শুধু ওয়ার্কার্স পার্টিরই এমপি হয়ে থেকেছেন। ১৫ বছরের মধ্যে তিনি ১২ বছরই শরিক দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন। ভোটের সময় ছাড়া অন্য সময় কোনোরকম যোগাযোগ রাখেননি। জনগণ থেকেও তিনি বিচ্ছিন্ন। বর্তমানে তিনি অসুস্থও। তাই চাই, এ আসনটা এবার জাসদকে দেওয়া হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে যদি ১৪ দলের প্রার্থী করা নাও হয়, তবুও আমাদের নিজ দলের মশাল প্রতীক নিয়ে আমার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। সারা দেশেই কিছু আসন এ রকম ওপেন থাকবে। রাজশাহী সদর আসনটিও ওপেন সিট হিসেবে থাকবে। আমি নির্বাচন করতে চাই।’
ওয়ার্কার্স পার্টিতেও প্রস্তুতি
সদর আসনে ১৪ দলের প্রার্থী আসলেই কে হচ্ছেন তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কিছুদিন ধরে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এই দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার হাতেই নৌকা তুলে দেওয়া হবে ধরে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন কমিটিও করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিজ দলের ভেতর থেকে প্রার্থী করার দাবির বিষয়ে কথা বলতে ফজলে হোসেন বাদশাকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ধরেননি।
ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রকম দাবি তোলা হয়। তবে এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঠেকাতে ১৪ দলের ঐক্যের বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, এবারও আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদককেই এখানে ১৪ দলের প্রার্থী করা হবে।’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘৫ আগস্টের চার দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর চার দিনও টিকতে পারেনি আওয়ামী লীগ। জনরোষে পড়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনা ও তাঁর আত্মীয়স্বজন। তাঁর বিচার জনগণই করবে। তারা নির্বাচনে আসতে পারবে কিনা সেটি জনগণের ওপর নির্ভর করবে...
৩ মিনিট আগেবগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ভাড়াটিয়া মাবিয়া চার লাখ টাকার চুক্তিতে গৃহবধূ সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তবে মাবিয়া চুক্তি করা অটোভ্যানচালক সুমন রবিদাসকে টাকা দেননি।
১৯ মিনিট আগেপাঁচটি গ্রাম ঘেঁষে সরকারি জলাশয় ডাহার বিল। যুগ যুগ ধরে এ বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন জেলেরা। এ ছাড়া দেশীয় মাছ ধরে আমিষের চাহিদা মেটাত এসব গ্রামের মানুষ। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পৌর এলাকার শালঘরিয়াসহ পাঁচ গ্রামের ৬২ বিঘা খাস জলাশয় ডাহার...
২৪ মিনিট আগেবিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি একটা জোরের জায়গা। আমরা আগামী সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০টি প্রকল্পের জন্য টেন্ডার আহ্বান করবো। আমাদের বিদ্যুতের যে সমস্যা এটি বিদ্যুতের সমস্যা না...
৪১ মিনিট আগে