Ajker Patrika

এমপির সুপারিশে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় চিহ্নিত রাজাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০: ০৮
এমপির সুপারিশে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় চিহ্নিত রাজাকার

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সুপারিশে স্থানীয় চিহ্নিত রাজাকার ইসমাইল হোসেন গাইন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাগমারার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তুলেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ওই ব্যক্তির সনদ বাতিলের দাবি জানান।

ইসমাইল হোসেন গাইনের বাড়ি শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে। তাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত বেসামরিক গেজেট নম্বর-২৬৩। ইসমাইল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়ায় স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত পরিবারগুলোর সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়েজ উদ্দিন মিলমালত। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন রাজাকার বাহিনীর অন্যতম সদস্য ইসমাইল হোসেন গাইন। ২০২১ সালের ১৫ জুন বাগমারা উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি রাজাকার ইসমাইল হোসেন গাইনের নাম জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) পাঠায়। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত হওয়ায় আমাদের সম্মানহানি ঘটেছে। তাই ইসমাইল হোসেনের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য আমি বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব ও জামুকার মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। লিখিত অভিযোগে বাগমারার শতাধিক স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষর করেছেন।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জামুকার মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ইসমাইল হোসেন গাইনকে গত বছরের ১৬ জুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ঢাকায় ডাকেন। এরপর মন্ত্রী উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানির সময় ইসমাইল হোসেন গাইনের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বাগমারা উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

তৎকালীন ইউএনও ফারুক সুফিয়ান তদন্ত শুরু করেন। তিনি যুদ্ধকালীন কমান্ডার আলী খাজা এম এম মজিদসহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের লিখিত জবানবন্দি নেন। নির্যাতিতরা ইসমাইল হোসেন গাইনের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে লিখিতভাবে জানান। এরপর ইউএনও নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় বদলি হয়ে যান, থেমে যায় তদন্তের গতি। যোগদান করেন নতুন ইউএনও সাইদা খানম। তিনি নতুন করে তদন্ত শুরু করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়েজ উদ্দিন মিলমালত বলেন, ‘সর্বশেষ ইসমাইল হোসেন গাইনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন এনামুল হক। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি জামুকায় শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সেখানে উপস্থিত হলে কর্মকর্তারা জানান, এমপি এনামুলের উপস্থিতিতে শুনানি হবে। এরপর আমরা সেখান থেকে ফিরে আসি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, আব্দুস সালাম, ইউসুফ আলী খন্দকার বুলবুল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খোদা বক্স, ফজুলর রহমান, আলী, আজাজুল ইসলাম প্রমুখ। 

বক্তব্য জানার জন্য ইসমাইল হোসেন গাইনের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করা যায়নি। 

সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, ‘উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে শুনেছিলাম তিনি মুক্তিযোদ্ধা। আর অন্তর্ভুক্তির জন্য যাঁরাই আমার সুপারিশ নিতে এসেছেন, আমি সবার জন্যই সুপারিশ করেছি। শুধু ইসমাইলের একার জন্য সুপারিশ করিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত