নির্মাণের ৪ বছরেই পরিত্যক্ত ইকোপার্ক 

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৫৬
Thumbnail image

রাজশাহীর পুঠিয়ার নন্দনপুরে সন্ধ্যা নদীর তীরে নির্মিত ইকোপার্কটি মাত্র চার বছরেই পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পার্ক নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করার কারণে পার্কটির অবকাঠামো বেশি দিন টেকসই হয়নি।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পুঠিয়া জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সন্ধ্যা নদীতে ক্রসড্যাম ও তীরে ইকোপার্ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। ভূ-উপরিস্থ সেচ কর্মসূচি প্রকল্পের অর্থায়নে কাজটি বাস্তবায়ন করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এই কাজে ব্যয় করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষে গত ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ইকোপার্কটি উদ্বোধন করা হয়।

আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের নন্দনপুর ইকোপার্ক ঘুরে দেখা গেছে, পরিচ্ছন্নতার অভাবে পার্কের পুরো এলাকা ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়ে গেছে। ক্রসড্যামের ওপরে দর্শনার্থীদের চলাচলে নির্মিত ছোট সেতুটি ঠিক আছে। তবে শিশুদের বিভিন্ন খেলাধুলার সামগ্রী জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। ইকোপার্ক এলাকায় স্থাপিত চারটি সোলার বাতিও দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে আছে। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীদের নদীতে ঘুরে বেড়ানোর কাজে ব্যবহারকৃত নৌকাটিও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া পার্ক এলাকার পুরো নদী আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে আছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব বলেন, সরকার এখানে মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ কাজ হয়েছে নামে মাত্র। তার ওপর পার্কটিতে খুবই নিম্নমানের কাজ হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বছর না ঘুরতেই সেগুলো জরাজীর্ণ হতে শুরু হয়। পার্ক উদ্বোধনের পর শুরুর দিকে কিছু লোকজন এলেও গত দুই বছর ধরে এখানে আর কেউ আসে না। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এই পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। এখন পুরো পার্ক এলাকা পরিত্যক্ত।

জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে ইকোপার্কে নির্মিত খেলাধূলার উপকরণজামরুল আলী নামের একজন চাষি বলেন, কৃষকদের সেচ সুবিধার্থে সন্ধ্যা নদীতে ক্রসড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ কিছু প্রভাবশালী লোক নদীতে মাছ চাষ করছেন। তাঁরা খরার সময় এই নদী থেকে সেচের পানি তুলতে বাধা দেন।

সাবেক পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বলেন, সন্ধ্যা নদী খনন ও স্থানীয় চাষিদের সেচ সুবিধার্থে এখানে তিনটি ক্রসড্যাম এবং একটি বড় পরিসরে ইকোপার্ক নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। পরে অর্থ সংকটের কারণে নদীতে মাত্র একটি ক্রসড্যাম ও তীরে ছোট পরিসরে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এই কাজের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ বলেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সময় মানুষ প্রায় বদ্ধ জীবনযাপন করেছেন। এখন পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে। পরিবার নিয়ে অনেকেই বেড়াতে বের হচ্ছেন। শুনেছি নন্দনপুর ইকোপার্কটি নানা জটিলতার কারণে কিছুটা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বরাদ্দ পেলে খুব দ্রুত পার্কের সংস্কার কাজ শুরু করব। তবে নদী থেকে সেচের পানি তুলতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত