রূপপুর প্রকল্পে লোহা পাচার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫ 

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ভেতর থেকে বাইরে পাচার করার সময় একটি ড্রাম ট্রাকসহ প্রায় ১০ মেট্রিক টন লোহা (রড ও পাইপ) জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগের পুলিশ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও রূপপুর প্রকল্পে সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঈশ্বরদী থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে পাকশীর রূপপুর প্রকল্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যের সহযোগিতায় তাদের আটক করা হয়। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রূপপুর মোড়ের মৃত হাসেম আলীর ছেলে মিরাজ আলী (৩৪), লক্ষ্মীকুণ্ডা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রুবেল ইসলাম রাজন (৩৭), ঠাকুরগাঁও জেলার আরাজী মাটিগাড়া গ্রামের মির্জা বেলাল হোসেনের ছেলে মাজহারুল ইসলাম সাদ্দাম (২৮), ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুলপাড়ার নুর মস্তফার ছেলে কামরুল হাসান রাসেল (৩৭) ও নাটোরের বনপাড়ার বাহিমালি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম (৩৮)। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিরাজ ও ট্রাক চালক আবুল কালাম ছাড়া সবাই রূপপুর প্রকল্পে সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চাকরি ও ব্যবসার সুবাদে যুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

গত সোমবার রাতে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ ও পরে রাতেই তাঁদের ঈশ্বরদী থানায় নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তদন্তের পর আজ তাঁদের নামে মামলা করা হয়। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রূপপুর প্রকল্পের ভেতর থেকে গেট দিয়ে বাইরে পাচার হয়ে যাওয়ার সময় প্রকল্পের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একটি ড্রাম ট্রাকে রাখা প্রায় ১০ মেট্রিক টন লোহা আটক করে। এ সময় ট্রাক চালকের কাছে প্রয়োজনীয় বৈধ কাগজপত্র দেখতে চায় তাঁরা। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় নিরাপত্তা সদস্যরা ট্রাকচালক আবুল কালাম আজাদকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। 

জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাক চালক আরও চারজনের নাম প্রকাশ করেন। পরে তাঁদের চারজনকে প্রকল্প এলাকা থেকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে ড্রাম ট্রাক ও লোহাসহ ওই পাঁচ ব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রাত ১২টার দিকে পাকশীর রূপপুর ফাঁড়ি থেকে আটকদের ঈশ্বরদী থানায় আনা হয়। পুলিশ আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তোষজনক জবাব ও লোহার বৈধ কাগজপত্র পায়নি। এর মধ্যে রূপপুর প্রকল্প কিংবা খোয়া যাওয়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় আজ দুপুরে পুলিশ বেঙ্গল ক্রিমিনাল আইনে আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। 

ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শুনেছি অবৈধভাবে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ট্রাকে করে তাঁরা লোহাগুলো গোপনে রূপপুর প্রকল্পের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যে লোহার রড ও কিছু পাইপ রয়েছে। সব মিলিয়ে মালামাল সাড়ে নয় মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি হবে।’ 

ওসি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা এই লোহা নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত। এমনকি রূপপুর প্রকল্প থেকে মালগুলো কারা পাচার করছে বা নিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কেউ দাবিও করেনি। ফলে আমরা (পুলিশ) বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত