বোন ক্যানসারের রোগী, ভাগনের দোকান দখলে ‘বিএনপি নেতা’ ২ ভাইয়ের হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
Thumbnail image
সংবাদ সম্মেলনে কান্নারত মতিউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছয় বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন শামসুন নাহার রুনা। শিক্ষক মতিউর রহমান চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে ক্লান্ত। পরিবারের ব্যয় মেটাতে একটি মুদি দোকান দিয়েছেন শামসুন নাহারের ছেলে মাহমুদুল হাসান অন্তর। সেই দোকানটিই দখলে নিতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে শামসুন নাহারের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রাজশাহী নগরের দাসপুকুর মহল্লায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী শামসুন নাহার রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলা শাখার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শামসুন নাহারের স্বামী মতিউর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, শামসুন নাহারের বড় ভাই রওসনুর রহমান রোকন ও শফিউর রহমান মামুন তাঁর ভাগনে অন্তরের দোকানটি দখলে নিতে চান। এ জন্য হামলা চালিয়েছেন। হামলায় তাঁর প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে শামসুন নাহার বলেন, ‘বিরোধের সূত্রপাত ১১ বছর আগে। পাঁচ ভাইবোনদের মধ্যে আমার বাবা-মা আমাদের দুই বোনকে ১২ ছটাক করে জমি লিখে দেন। আমার জীবিত বাবা-মায়ের নামে এখনো তিন কাঠা জমি আছে, যা আমার তিন ভাই পাবেন। সেই জমি দ্রুত লিখে দেওয়াসহ আমাদের দেওয়া জমি থেকে ১১ লাখ টাকা দাবি করেন রোকন। আমরা দুই বোন অযৌক্তিক সেই দাবি মেনে না নিলে আমার ভাই ক্ষিপ্ত হয়।’

শামসুন নাহার আরও বলেন, ‘শুধু ভাই বলে আমরা এত দিন চুপ ছিলাম। কিন্তু সে এতটাই নিচে নেমে গেছে যে নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য দোকানে এসে চাঁদা দাবি করে। সম্প্রতি দুই দফায় ৭ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে টাকা দেয়নি। রোকন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় মহানগর বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে থাকার পরিচয় দিয়ে ক্ষমতা দেখাচ্ছে। অথচ নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিই নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে কান্নারত মতিউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে কান্নারত মতিউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

শামসুন নাহারের স্বামী মতিউর রহমান কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমার স্ত্রী ছয় বছর ধরে ক্যানসার বয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁর চিকিৎসায় আমরা সর্বস্বান্ত। চিকিৎসায় একটু সহায়তা করতে আমি শিক্ষক হয়েও আমার ছেলেকে মুদি দোকান করে দিয়েছি। আরেক ছেলে টিউশনি করে। আমি বিএনপি করেও আজ কেন নির্যাতিত হচ্ছি, সেটাই আমার এখন প্রশ্ন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইলে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন শামসুন নাহারের ভাই রওসনুর রহমান রোকন। নগর বিএনপির পদে না থাকলেও এই পরিচয় দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কী পদে আছি নিজেই জানি না, লোকজন বলে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে নেই। এ রকম অভিযোগ থানায় করা হলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত