রাবিতে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজির সংবাদ হওয়ায় দোকান তুলে দেওয়ার হুমকি 

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪, ২২: ০৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় দফায় দফায় হুমকির শিকার হচ্ছেন নাজমুল হোসেন নামের ভুক্তভোগী ওই খাবারের দোকানি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব নিজে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। 

আগামী রোববারের মধ্যে দোকান তুলে দেওয়ার আল্টিমেটামও দিয়ে গেছেন গালিব। আজ শুক্রবার বিকেলে গালিব দোকনিকে ডেকে নিয়ে এই হুমকি ও আল্টিমেটাম দেন। তবে দোকানে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও দোকান তুলে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গালিব। 

এ ছাড়া সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে একাধিক নেতা একাধিকবার গিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দোকানি। 

এর আগে গত মঙ্গলবার ইফতারির পর নাজমুল নামের ওই দোকানির কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন দুই ছাত্রলীগ নেতা। এ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড আজকের পত্রিকার হাতে আসে। রেকর্ডটিতে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে এক খাবারের দোকানির কাছে দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা গেছে। 

এ সময় তাদের বলতে শোনা যায়, ‘বিষয়টি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ‘কনসার্নে’ আছে।’ এমনকি তাঁরা দোকানিকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, ‘সাংবাদিক-মামবাদিকদের বললে সেটা ভুল সিদ্ধান্ত হবে। আর চাঁদাবাজির নিউজ-টিউজ হলো, আপনি দেখলেন। কি হইলো? আমারও কিছুই হবে না।’ এর ভিত্তিতেই একাধিক নিউজ হয় তাদের বিরুদ্ধে। এসব নিউজের জন্যই তাঁকে এখন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। 

আজ শুক্রবার দোকানি নাজমুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘গালিব ভাই এসে বলে গেছে আগামী রোববারের মধ্যে তাঁরা আমার দোকান উঠিয়ে দেবে।’ গালিব ভাই বলেছে, ‘এই দুই দিনই তুই ব্যবসা করে নে, এরপর তোর মেয়াদ শেষ।’ 

দোকানি নাজমুল হোসেন আরও বলেন, ‘আমি নাকি গালিবের রেকর্ড করে আপনাদের দিয়েছি। আমি বলেছি, ভাই দেখেন আমার ফোনে রেকর্ডিং আছে নাকি। আমার ফোনে তো মেমোরি কার্ডই নাই।’ এরপর গালিব ভাই আরও বলেছে, ‘‘সাংবাদিককে বলবি না কোন বালকে বলবি বলেক। কি করতে পারে দেখব।’’ এসব বলে জিয়া হলের দিকে চলে গেছে।’’’ 

দোকানির স্ত্রী বলেন, ‘ভাই সাধে কি আমরা এখানে দোকান দিয়েছি। আমি বাড়ির মহিলা মানুষ। আমি কেন এখানে দোকান দিয়ে খাবার বিক্রি করব। কষ্ট হচ্ছে তাই এখানে ব্যবসা করতে হচ্ছে। না হলে আপনার ভাই খাবার বিক্রির জন্য কি আমাকে এখানে নিয়ে আসে?’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘আমি গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি বলেছি, তোমার ‘বৈধ’ ব্যবসা। তুমি কেনো টাকা দিবে? এরপর থেকে কিছু হলে তুমি আমাকে জানাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের যেসব বৈধ দোকান আছে সেগুলো ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে। তবে ওই দোকানটি বৈধ কি না তা খোঁজ নিতে হবে।’ 

উল্লেখ্য, চাঁদা দাবি করা ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ এবং শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ওই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ। এদের মধ্যে সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী এবং মিনহাজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত