রাজশাহীতে লিচুর দাম আকাশছোঁয়া

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মে ২০২১, ১২: ৫১

রাজশাহী: গ্রীষ্মের শুরুতে রাজশাহীর বাজারে আসতে শুরু করেছে সুস্বাদু লিচু। তবে লিচুর দাম আকাশছোঁয়া। প্রতি ১০০ পিস লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায়। যা নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, বাগানে লিচু কম। তাই দাম বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়াল বলেন, এবার তাপমাত্রা বেশি থাকায় লিচুর ফুল নষ্ট হয়েছে। খরার কবলে অনেক লিচুর গুটিও ঝরেছে। তাই উৎপাদন কম। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।

আজ শুক্রবার সকালে মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদ চত্বরে একটি অটোরিকশায় করে বোম্বাই জাতের লিচু আনেন জেলার বাঘা উপজেলার চাষি তৌহিদুল হক। অটোরিকশাটি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী লিচুগুলো কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন।

আনিসুর রহমান নামে এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘কতদামে লিচু কিনলাম সেটা তো নিজের চোখেই দেখলেন। ২৮০ টাকায় কিনে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছি। সারাদিন রোদের মধ্যে বসে এসব লিচু এখন বিক্রি করতে হবে। কাঁচামাল নষ্টও হবে। একটু বেশি দামে বিক্রি না করলে লাভ হবে না।’

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বড় মসজিদ চত্বরে খুচরা বিক্রেতা কুরবান আলী ১০০ লিচু বিক্রি করছিলেন ৩৮০ টাকা দরে।  তিনি বলেন, ‘আপনারা তো খালি লিখবেন দাম বেড়ে গেল, দাম বেড়ে গেল। কিন্তু আমরা বাগানে গিয়ে লিচু পাচ্ছি না। যে সামান্য লিচু পাওয়া যাচ্ছে, দাম বেশি। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়েই কিনে আনতে হচ্ছে। এরপর তো আর কম দামে বিক্রি করা যায় না।’

বিক্রেতারা বাগানে লিচুর সংকটের কথা জানালেও মহানগরীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে লিচু বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। রেলগেট এলাকায় লিচু কেনার সময় জুলেখা বেগম নামে এক গৃহিনী বললেন, ‘কয়দিন আগে দেশি লিচু প্রথমে উঠে। সেটার দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু ওই লিচুটা ছিল টক। এখন ভাল লিচু আসার সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়ে গেছে। এত দাম খুবই অস্বাভাবিক।’

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রাজশাহীতে এ বছর ৫৩০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ি, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু গাছ রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৭ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা আছে। আর রাজশাহীর লিচুতে জেলার চাহিদাও মেটে না। চাহিদা মেটাতে লিচু আসে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি এবার সবখানেই লিচুর উৎপাদন কম। আর উৎপাদন কম বলেই দাম বেশি। এবার হুট করেই লিচু শেষ হয়ে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি লিচু খেয়ে নিতে হবে। তা না হলে পরে পাওয়া যাবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত