আট শর্তে ১৬ অপরাধীকে দায়মুক্তি দিয়েছে আদালত

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭: ১৫

২০১৯ সালে মাদক সেবনের অভিযোগে আটক হন নাটোরের লালপুরের বাকনাই গ্রামের মো. কিবরিয়া (৩৬), পুরোনো ঈশ্বরদী গ্রামের মো. মানিক (২৫) ও পাবনার ঈশ্বরদীর মাজদিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম (২০)। লালপুর থানার মাদক মামলায় আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণে তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত হন। নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ আট দফা শর্তে এক বছরের জন্য তাঁদের দায়মুক্তি আদেশ দেন।

নাটোরের লালপুরে আট শর্তে আদালতের আদেশে দায়মুক্তি (প্রবেশন) পেয়েছেন এমন ১৬জন অপরাধী। শর্ত ভঙ্গ করায় একজনের প্রবেশন বাতিল করা হয়েছে। জানা যায়, ‘বাংলাদেশ প্রবেশন অব অফেন্ডার্স’ বিধি মোতাবেক মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত আসামিকে এই দায়মুক্তি দেন আদালত। অপরাধী প্রমাণিত হলেও সংশোধনের সুযোগ দিতে শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এ রায় দেন আদালত।

দায়মুক্তির শর্তগুলো হলো, বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করা, গ্রামের সরকারি রাস্তার পাশে বনজ ও ফলদ বৃক্ষরোপণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া, মাদক সেবন ও পরিবহন এবং বিক্রয় না করা, ধূমপান না করা, গ্রামের স্কুলে স্বেচ্ছাশ্রমে সেবামূলক কাজ করা, মাদকবিরোধী জনমত ও জনসচেতনতায় অংশগ্রহণ করা। এসব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রবেশন কর্মকর্তার অধীন তাঁদের ন্যস্ত করা হয়।

দায়মুক্তির পর মো. কিবরিয়া বলেন, আদালতের শর্তগুলো পালন করা আমাদের দায়িত্ব। এতে সমাজের একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারব।

নাটোর সমাজ সেবা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, নাটোর জেলায় এ পর্যন্ত প্রবেশনে আছেন ১০৫জন। প্রবেশন মেয়াদ শেষ হয়েছে ২জনের। শর্ত ভঙ্গ করায় একজনের প্রবেশন বাতিল হয়েছে।

আইনজীবী দীনাই তাছরীন বলেন, সংশোধনে আগ্রহী যেসব অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর কোনো  মামলা নেই-তাঁদেরই মূলত দায়মুক্তির সুযোগ দেন আদালত। এ ক্ষেত্রে তাঁদেরকে দুজন অভিভাবক ও আইনজীবীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই আদেশে সমাজে মাদকবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে।

নাটোর সমাজ সেবা দপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. তারিক এলাহী বলেন, প্রবেশনকালে তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হয়। মেয়াদ শেষে তাদের মনিটরিং করা হয় না। প্রবেশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দণ্ডিত অপরাধীকে কারাগারে না পাঠিয়ে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে সমাজে বসবাস করার সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া। এতে কারাগারের ওপর চাপ কমে। দণ্ডিত ব্যক্তি একমাত্র উপার্জনক্ষম হলে পরিবারকে আর্থিক দৈন্যর হাত থেকে রক্ষা করেন। এতে একজন অপরাধী যদি নিজেকে মুক্ত করতে পারেন সেটিই বড় অর্জন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত