রাবিতে মৌন মিছিল শেষে শিক্ষার্থীদের আটকের চেষ্টা, ছিনিয়ে নিলেন শিক্ষকেরা

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৪২
Thumbnail image

‘ছাত্র-জনতার খুনিদের প্রতিহত করুন’ ব্যানারে মৌন মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সারা দেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে মুখে লাল কাপড় বেঁধে তারা এই কর্মসূচি পালন করে তারা। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মিছিল শেষ হলে সাদাপোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষকেরা তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের ছিনিয়ে নিয়ে রক্ষা করেন। 

এ সময় দুই সাংবাদিককেও হেনস্তা করা হয়। তাঁদের ‘ইনফর্মার’ বলে পুলিশ তুলে নিতে চায় বলে অভিযোগ উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মৌন মিছিল বের করেন। পরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় এসে কর্মসূচি শেষ করেন। 

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকদের এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে থেকেই সাদাপোশাকে অবস্থান নিতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। কর্মসূচি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু-একজন করে শিক্ষার্থীদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। শিক্ষকেরা তা দেখামাত্রই দৌড়ে গিয়ে তাঁদের বাধা দেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকাল পত্রিকার প্রতিনিধি অর্পণ ধর ও দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের রাজশাহী প্রতিনিধি আমজাদ হোসেনকে তুলে নিতে টানাহিঁচড়া করেন পুলিশ সদস্যরা। 

শিক্ষার্থীদের জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা তবে শিক্ষকদের বাধায় ক্যাম্পাস থেকে কোনো শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যেতে পারেননি পুলিশ সদস্যরা। শিক্ষকেরা ঢাল হয়ে শিক্ষার্থীদের কাজলা গেটে নিয়ে গিয়ে নিরাপদে বের করে দেন। 

এ বিষয়ে জানতে নগরীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী লাবন্য বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে মৌন মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সিভিল ড্রেসে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের আঘাত করে। আমার ভাইদের বিনা কারণে জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। আমাদের অপরাধ কী? আমরা কোনো মামলার আসামি না। তাহলে কেন আমাদের আটক করবে। আমরা সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে আজকের এই মৌন মিছিলে এসেছিলাম।’ 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্য বলেন, ‘আপনাদের কাছে শিক্ষার্থীদের আটক করার কোনো নথিপত্র নেই। সন্দেহের বশে কাউকে আটক করা অন্যায়। আপনারা এমনটা কখনোই করতে পারেন না। এর পরে যদি কোনো ছাত্রের গায়ে হাত পড়ে এবং আমার সহকর্মীদের গায়ে আঘাত লাগে—এটা কিন্তু আমরা মেনে নেব না। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসবে, তাই বলে পুলিশ প্রশাসন প্রকাশ্যে কোনো শিক্ষার্থীকে এভাবে তুলে নিতে পারে না। তাদের নামে কোনো মামলা নেই যে তারা আসামি।’ 

শিক্ষার্থীদের জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশ প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করতে বলি। তবে যদি কোনো বহিরাগত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তখন পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে। বর্তমানে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমার শিক্ষার্থীরা বাসায় আছে। কোনো ছাত্রের হয়রানি হোক আমরা এমনটা কখনোই চাই না। আমরা জানতে পেরে সব শিক্ষার্থীকে কাজল গেট পর্যন্ত নিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত