সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
লোডশেডিং ও রং-সুতাসহ কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জে তাঁত কারখানাগুলোতে কাপড় উৎপাদনে ধস নেমেছে। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁত কারখানাগুলো। জেলার ৩ লাখ তাঁত কারখানার মধ্যে ইতিমধ্যে ১ লাখ কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
আবার কারখানা মালিকেরা ডিজেল চালিত জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ দিয়ে তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করলেও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁত মালিকদের বিদ্যুৎ বিলও দিতে হচ্ছে আবার জেনারেটরও চালাতে হচ্ছে। এতে শাড়ি, লুঙ্গি, ও গামছা উৎপাদনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে তাঁত মালিকদের।
অপরদিকে, তাঁত শিল্পের এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকেরা। আগে যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। পরিবার নিয়ে শ্রমিকদের কোনোমতে দিন কাটছে। অনেকে বদলাচ্ছেন পেশা। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, মহাজন কাপড় বেচতে পারে না, তাই কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। আগে সারা দিনে একজন শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকার কাজ করতেন। এখন সারা দিনে একজন শ্রমিক ৩০০-৪০০ টাকার কাজ করছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন শ্রমিকেরা।
তবে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জের বেলকুচি লিয়াজোঁ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত তাঁত মালিকদের ঋণ দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করা হচ্ছে।
তাঁত মালিক তাঁতি নেতারা জানিয়েছেন, জেলায় প্রায় তিন লাখ তাঁত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি হয়। সুতায় রং দেওয়া, শুকানো, সুতা তৈরি ও কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রতি তাঁকে ৩-৪ জন শ্রমিক প্রয়োজন। এতে মালিক কর্মচারী মিলে প্রায় চার লাখ শ্রমিক এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, বেলকুচি, এনায়েতপুর, রায়গঞ্জ, চৌহালী ও কাজীপুরে কম বেশি তাঁত কারখানা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হয়। বিশেষ করে উল্লাপাড়া, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুর, পাঁচিল বাজারে সপ্তাহে দুই দিন কাপড়ের হাট হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন এসব হাটে। এমনকি সিরাজগঞ্জের কাপড় বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।
বর্তমানে শ্রমিক সংকট, লোডশেডিংয়, রং ও সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে জেলার তাঁত কারখানাগুলোতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। চাহিদামতো বিদ্যুৎ ও শ্রমিক না থাকায় অধিকাংশ তাঁত কারখানা বন্ধের উপক্রম। বেকার হয়ে পড়ছেন শ্রমিকেরা। অনেকে পেশা বদলাচ্ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে আগে যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে শাড়ি, লুঙ্গি, ও গামছা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার যতটুকু উৎপাদন হচ্ছে তাও হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে না বলে তাঁত মালিকেরা জানিয়েছেন। যে কারণে বাধ্য অনেকে তাঁত কারখানা বন্ধ রাখছেন। আবার বর্তমান সুতার বাজারমূল্য যা রয়েছে তাতে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এতে করে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তাঁত মালিক হাজী মো. আবু শাহীন প্রামাণিক বলেন, তাঁত মালিক হিসেবে বর্তমানে আমরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। দিনের বেলায় ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময় তেল, ডিজেল দিয়ে জেনারেটর এর সাহায্যে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে প্রচুর খরচ বেড়ে যায় এবং শ্রমিক থাকে না। বর্তমানে কাপড় ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছে। এর পর শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে কাপড় উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
সাউথ এশিয়া হাইটেক সাটেল ইন্ডাস্ট্রিজ এর ম্যানেজার (আমদানি-রপ্তানি) অনিমেষ সরকার বলেন, ‘বর্তমানে তাঁত শিল্পে শ্রমিক সংকট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় ১ মাস আগে ঈদ হয়েছে এখনো শ্রমিক আসেনি। আমাদের ৪০টি তাঁত মাত্র দুজন শ্রমিক এসেছে। আমাদের লুঙ্গি উৎপাদন হচ্ছে না স্টাফদের বেতন দেব কি করে। প্রতি সপ্তাহে স্টাফদের ঠিকই বেতন দিতে হচ্ছে। শ্রমিকেরা আসে না তার মূল কারণ হচ্ছে তা মজুরি বাড়াতে বলছেন। কিন্তু বাজারে রং-সুতার যে দাম তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না, ফলে মালামাল বিক্রি করতে পারছি না। শ্রমিকদের মজুরি কীভাবে বাড়াব।’
বেলকুচি লাকী সেভেন কটেজের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে তাঁতের দুর্দিন চলছে। তাঁত প্রায় বন্ধের পথে। সুতার দাম বেড়েছে অত্যধিক। সে তুলনাই কাপড়ের দাম বাড়েনি। শ্রমিকদের ঠিকমতো বিল দিতে পারি না। এই শিল্পের ওপর সরকারের নজর নাই। সরকারের কাছে দাবি এই তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে হলো সুতা, রং সহ যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে তার দাম কমানো। তাহলে হয়তো এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।’
বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের শ্রমিক শাহ আলম বলেন, ‘বর্তমানে তাঁত শিল্পের অবস্থা ভালো না। ঈদের আগ থেকেই মহাজনের কেনাবেচা ভালো। মহাজন কাপড় বেচতে পারে না এ জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আগে সারা দিনে ৭০০-৮০০ টাকা কাজ হয়েছে। এখন সারা দিনে ৩০০-৪০০ টাকা হয় না। বিল চাইলে কয় কাপড় বেচতে পারি নাই। আমরা কি করি। কীভাবে সংসার চলে।’
বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হাজী বদিউজ্জামান বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলাকে তাঁত কুঞ্জু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য হলো তাঁত শিল্প। জেলায় ৩ লাখ তাঁত রয়েছে। এই তাঁতে আমরা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে থাকি। করোনার সময় তাঁতের ব্যবসার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আশা ছিল আমাদের ব্যবসাটা ভালো হবে। কিন্তু দেখা গেল করোনার পরে তাঁত শিল্পের জন্য যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে রং, সুতা, তুলা সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যার কারণে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এটি একটি বড় সমস্যা।
‘এখন শ্রমিকের প্রচুর সংকট রয়েছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকেরা ঢাকামুখী হয়েছে। অনেকে মালয়েশিয়ায় চলে গেছে। যে কারণে শ্রমিক সংকট চলছে। আরেকটি কারণ রয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের সমস্যা। জেনারেটর দিয়ে তাঁত চালাইতে গেলে দেখা যায় ১ লিটার তেলের দাম ১১০ টাকা। জেনারেটর দিয়ে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে খরচ বেশি হচ্ছে। যে কারণে কাপড় উৎপাদন করতে পারতেছিনা। সবকিছু মিলেই আজ তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। ইতিমধ্যে জেলায় ৩ লাখ তাঁতের মধ্যে ১ লাখ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এর মূল কারণ শ্রমিক সংকটও কাঁচা মালের দাম বেশি। সরকার যদি তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে চায় তাহলে তাঁত মালিকদের জন্য একটি তাঁত ব্যাংক করা প্রয়োজন। এই ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁতিদের স্বল্প সুদে তাঁত লোন দেওয়া হয় তাহলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।’
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জের বেলকুচি-চৌহালী উপজেলার লিয়াজোঁ অফিসার তন্বী বলেন, ‘আমরা তাঁতিদের স্বাবলম্বী করতে তাদের লোন দিয়ে থাকি। আগে আমাদের লোন ছিল ১৩ হাজার টাকা। এখন আমরা সেই লোন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন দিচ্ছি। ১৯টি তাঁত যাদের আছে তারা প্রান্তিক তাঁতি। তাদের জন্য আমরা লোনের ব্যবস্থা করেছি। তাঁতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। দুর্যোগ সময়ে তাদের সহযোগিতা করে থাকি।’
লোডশেডিং ও রং-সুতাসহ কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জে তাঁত কারখানাগুলোতে কাপড় উৎপাদনে ধস নেমেছে। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁত কারখানাগুলো। জেলার ৩ লাখ তাঁত কারখানার মধ্যে ইতিমধ্যে ১ লাখ কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
আবার কারখানা মালিকেরা ডিজেল চালিত জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ দিয়ে তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করলেও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁত মালিকদের বিদ্যুৎ বিলও দিতে হচ্ছে আবার জেনারেটরও চালাতে হচ্ছে। এতে শাড়ি, লুঙ্গি, ও গামছা উৎপাদনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে তাঁত মালিকদের।
অপরদিকে, তাঁত শিল্পের এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকেরা। আগে যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। পরিবার নিয়ে শ্রমিকদের কোনোমতে দিন কাটছে। অনেকে বদলাচ্ছেন পেশা। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, মহাজন কাপড় বেচতে পারে না, তাই কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। আগে সারা দিনে একজন শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকার কাজ করতেন। এখন সারা দিনে একজন শ্রমিক ৩০০-৪০০ টাকার কাজ করছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন শ্রমিকেরা।
তবে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জের বেলকুচি লিয়াজোঁ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত তাঁত মালিকদের ঋণ দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করা হচ্ছে।
তাঁত মালিক তাঁতি নেতারা জানিয়েছেন, জেলায় প্রায় তিন লাখ তাঁত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি হয়। সুতায় রং দেওয়া, শুকানো, সুতা তৈরি ও কাপড় উৎপাদনের জন্য প্রতি তাঁকে ৩-৪ জন শ্রমিক প্রয়োজন। এতে মালিক কর্মচারী মিলে প্রায় চার লাখ শ্রমিক এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, বেলকুচি, এনায়েতপুর, রায়গঞ্জ, চৌহালী ও কাজীপুরে কম বেশি তাঁত কারখানা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হয়। বিশেষ করে উল্লাপাড়া, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুর, পাঁচিল বাজারে সপ্তাহে দুই দিন কাপড়ের হাট হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন এসব হাটে। এমনকি সিরাজগঞ্জের কাপড় বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।
বর্তমানে শ্রমিক সংকট, লোডশেডিংয়, রং ও সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে জেলার তাঁত কারখানাগুলোতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। চাহিদামতো বিদ্যুৎ ও শ্রমিক না থাকায় অধিকাংশ তাঁত কারখানা বন্ধের উপক্রম। বেকার হয়ে পড়ছেন শ্রমিকেরা। অনেকে পেশা বদলাচ্ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে আগে যেখানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন এখন সেখানে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে শাড়ি, লুঙ্গি, ও গামছা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার যতটুকু উৎপাদন হচ্ছে তাও হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে না বলে তাঁত মালিকেরা জানিয়েছেন। যে কারণে বাধ্য অনেকে তাঁত কারখানা বন্ধ রাখছেন। আবার বর্তমান সুতার বাজারমূল্য যা রয়েছে তাতে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এতে করে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তাঁত মালিক হাজী মো. আবু শাহীন প্রামাণিক বলেন, তাঁত মালিক হিসেবে বর্তমানে আমরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। দিনের বেলায় ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এ সময় তেল, ডিজেল দিয়ে জেনারেটর এর সাহায্যে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে প্রচুর খরচ বেড়ে যায় এবং শ্রমিক থাকে না। বর্তমানে কাপড় ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছে। এর পর শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে কাপড় উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
সাউথ এশিয়া হাইটেক সাটেল ইন্ডাস্ট্রিজ এর ম্যানেজার (আমদানি-রপ্তানি) অনিমেষ সরকার বলেন, ‘বর্তমানে তাঁত শিল্পে শ্রমিক সংকট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় ১ মাস আগে ঈদ হয়েছে এখনো শ্রমিক আসেনি। আমাদের ৪০টি তাঁত মাত্র দুজন শ্রমিক এসেছে। আমাদের লুঙ্গি উৎপাদন হচ্ছে না স্টাফদের বেতন দেব কি করে। প্রতি সপ্তাহে স্টাফদের ঠিকই বেতন দিতে হচ্ছে। শ্রমিকেরা আসে না তার মূল কারণ হচ্ছে তা মজুরি বাড়াতে বলছেন। কিন্তু বাজারে রং-সুতার যে দাম তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না, ফলে মালামাল বিক্রি করতে পারছি না। শ্রমিকদের মজুরি কীভাবে বাড়াব।’
বেলকুচি লাকী সেভেন কটেজের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে তাঁতের দুর্দিন চলছে। তাঁত প্রায় বন্ধের পথে। সুতার দাম বেড়েছে অত্যধিক। সে তুলনাই কাপড়ের দাম বাড়েনি। শ্রমিকদের ঠিকমতো বিল দিতে পারি না। এই শিল্পের ওপর সরকারের নজর নাই। সরকারের কাছে দাবি এই তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে হলো সুতা, রং সহ যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে তার দাম কমানো। তাহলে হয়তো এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।’
বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের শ্রমিক শাহ আলম বলেন, ‘বর্তমানে তাঁত শিল্পের অবস্থা ভালো না। ঈদের আগ থেকেই মহাজনের কেনাবেচা ভালো। মহাজন কাপড় বেচতে পারে না এ জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আগে সারা দিনে ৭০০-৮০০ টাকা কাজ হয়েছে। এখন সারা দিনে ৩০০-৪০০ টাকা হয় না। বিল চাইলে কয় কাপড় বেচতে পারি নাই। আমরা কি করি। কীভাবে সংসার চলে।’
বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হাজী বদিউজ্জামান বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলাকে তাঁত কুঞ্জু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য হলো তাঁত শিল্প। জেলায় ৩ লাখ তাঁত রয়েছে। এই তাঁতে আমরা শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে থাকি। করোনার সময় তাঁতের ব্যবসার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আশা ছিল আমাদের ব্যবসাটা ভালো হবে। কিন্তু দেখা গেল করোনার পরে তাঁত শিল্পের জন্য যে সমস্ত কাঁচামাল রয়েছে রং, সুতা, তুলা সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যার কারণে কাপড় উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এটি একটি বড় সমস্যা।
‘এখন শ্রমিকের প্রচুর সংকট রয়েছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকেরা ঢাকামুখী হয়েছে। অনেকে মালয়েশিয়ায় চলে গেছে। যে কারণে শ্রমিক সংকট চলছে। আরেকটি কারণ রয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের সমস্যা। জেনারেটর দিয়ে তাঁত চালাইতে গেলে দেখা যায় ১ লিটার তেলের দাম ১১০ টাকা। জেনারেটর দিয়ে কাপড় উৎপাদন করতে গেলে খরচ বেশি হচ্ছে। যে কারণে কাপড় উৎপাদন করতে পারতেছিনা। সবকিছু মিলেই আজ তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। ইতিমধ্যে জেলায় ৩ লাখ তাঁতের মধ্যে ১ লাখ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এর মূল কারণ শ্রমিক সংকটও কাঁচা মালের দাম বেশি। সরকার যদি তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে চায় তাহলে তাঁত মালিকদের জন্য একটি তাঁত ব্যাংক করা প্রয়োজন। এই ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁতিদের স্বল্প সুদে তাঁত লোন দেওয়া হয় তাহলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।’
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জের বেলকুচি-চৌহালী উপজেলার লিয়াজোঁ অফিসার তন্বী বলেন, ‘আমরা তাঁতিদের স্বাবলম্বী করতে তাদের লোন দিয়ে থাকি। আগে আমাদের লোন ছিল ১৩ হাজার টাকা। এখন আমরা সেই লোন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন দিচ্ছি। ১৯টি তাঁত যাদের আছে তারা প্রান্তিক তাঁতি। তাদের জন্য আমরা লোনের ব্যবস্থা করেছি। তাঁতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। দুর্যোগ সময়ে তাদের সহযোগিতা করে থাকি।’
থানা হলো জনসাধারণকে সেবা প্রদানের মূল কেন্দ্রস্থল। পুলিশের কাজ হচ্ছে জনগণকে সেবা দেওয়া। আমরা সম্মানিত নগরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে চাই। থানায় আসা একজন ব্যক্তিও যেন সেবা বঞ্চিত না হন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে...
৪ মিনিট আগেঢাকার ধামরাইয়ে তিন দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীরামপুর এলাকার গ্রাফিক্স টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন। এ সময় অবরোধস্থলের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
৯ ঘণ্টা আগেপটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে খালের পানিতে ডুবে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কাকড়াবুনিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
১০ ঘণ্টা আগেযশোরের অভয়নগরে পুকুরে ডুবে এক দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার অভয়নগর গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১০ ঘণ্টা আগে