রাজশাহীতে স্কুলশিক্ষক আ.লীগ নেতার হাত-পা থেঁতলে দিল দুর্বৃত্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৪৪
Thumbnail image
পুঠিয়ায় স্কুলশিক্ষক আ.লীগ নেতার হাত-পা থেঁতলে দিল দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর পুঠিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা আলিউজ্জামান মন্টু ওরফে মন্টু মাস্টারকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে হাত-পা থেঁতলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আজ শনিবার উপজেলার বিড়ালদহ মাজারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত আলিউজ্জামান মন্টু রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই এবং পুঠিয়া বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি বিড়ালদহ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল ওয়াদুদ দারা রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য। তখন দুই উপজেলার সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছিলেন মন্টু। দারার হয়ে তিনিই সবকিছু দেখাশোনা করতেন। ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। আবার টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়ারও অভিযোগ আছে।

দুই উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন নিয়োগ-বাণিজ্যের জন্য স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি ‘শিক্ষামন্ত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পান। এখনো তাঁর এই নাম মানুষের মুখে মুখে।

আরও জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মন্টু মাস্টার আত্মগোপনে ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আজ সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বিড়ালদহ মাজারের সামনে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে পেয়ে আটক করেন।

এ সময় তাঁকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। এতে তাঁর হাত-পা থেঁতলে যায়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ফেলে রেখে চলে যান হামলাকারীরা।

পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর দুটি পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভেঙে গেছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি এখনো শুনিনি। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। আপনারাও (সাংবাদিকেরা) খোঁজখবর নেন। কারা এ ঘটনা ঘটাল।’

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কারা পিটিয়েছেন জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘কারা মেরেছে এখনই বলা যাচ্ছে না। দুর্বৃত্তরা মেরেছে।’ ভুক্তভোগী এলাকায় ‘শিক্ষামন্ত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমিও শুনেছি। মানুষে এসব কথা বলে। আরও অনেক কথাই মানুষ বলে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত