Ajker Patrika

যৌন হয়রানির ঘটনায় বিচার চাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে: রাবি অধ্যাপক 

রাবি প্রতিনিধি
যৌন হয়রানির ঘটনায় বিচার চাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে: রাবি অধ্যাপক 

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানির ঘটনায় বিচার চাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক তানজিমা জোহরা হাবিব। আজ শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি: বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। 

অধ্যাপক তানজিমা জোহরা হাবিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক ও সহপাঠী দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হতে পারে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানির ঘটনার তুলনায় অভিযোগ কম আসে। এই বিষয়ে আমাদের বিচার চাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। যার ফলে অনেক ঘটনা আমাদের আড়ালেই থেকে যায়। আবার অনেকেই জানে না, এ ঘটনায় কী করণীয় অথবা কোথায় অভিযোগ করতে হয়।’ 

আজ শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির সদস্য-সচিব সহযোগী অধ্যাপক রনক জাহান। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, রাবির সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের জজ জিয়াউর রহমান, এ্যাডভোকেট ইসমত আরা, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া ও সহযোগী অধ্যাপক সাদেকা বান, আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল আলিম প্রমুখ। 

এ ছাড়া সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ অধিকর্তা, হল প্রাধ্যক্ষ, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় সভাপতিগণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

জবি উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি হচ্ছে। জাতীয় মহিলা পরিষদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে ৭১৫ জন নারী নির্যাতন ও ২২৬ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাঁরা নির্যাতিত হওয়া সত্ত্বেও সমাজে তাঁদেরকে হেয় হতে হয়েছে। শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রে নয় ছেলেরাও হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন তথ্যে উঠে এসেছে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলছে তা নিয়ে তাঁরা কোথাও কোনো অভিযোগ করতে পারছে না। শিক্ষক কর্তৃক অনেক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হলেও তাঁরা অভিযোগ করতে পারেনা। নারীদের একটা প্লাটফর্ম নিশ্চিত করতেই হবে, যেখানে নারীরা তাঁদের কথা বলতে ও তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারবেন।’

সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘একজন মানুষ যখন তাঁর শুভ চিন্তাগুলো হারিয়ে ফেলে তখন তার মানসিক রোগ হয়, মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয়। সে তাঁর যৌক্তিক কারণে নানাবিধ হীন অপরাধ করে। তবে এটা ঘটে যেতে থাকলে সমাজে তা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আমরা দেখি সমাজে যদি কোনো অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে তাহলে তা আইনের আওতায় আনা হয়। কিন্তু তাঁকে সচেতন করার জন্য যে কার্যক্রম প্রয়োজন তা নেওয়া হয় না। আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসুক, তবে তাকে সচেতন করার পর। তারপরেও যদি তারা অপরাধ করতে থাকে, তবে তাকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। এমনকি সে হতে পারে পুরুষ, নারী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী অথবা কর্মচারীসহ যে কেউ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত