Ajker Patrika

মা ও মেয়েকে নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার ৪, গণগ্রেপ্তারের আতঙ্ক

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
মা ও মেয়েকে নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার ৪, গণগ্রেপ্তারের আতঙ্ক

রংপুরের বদরগঞ্জে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মা ও মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন গ্রাম পুলিশ সদস্য জান্নাতুলসহ চারজন। অন্য গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জিয়াউল হক (৪০), দুলু মিয়া (৪৮) ও মহির হোসেন (৫০)। এ ঘটনায় অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ওই গ্রামে পুরুষ শূন্য হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ইউপি সদস্য আকমল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘এজাহারে নাম ছিল না জিয়াউল হক ও মহির হোসেনের। তাদের ওই ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন অনেকেই। দিনের বেলায় কেউ কেউ গ্রামে আসলেও অপরিচিত কাউকে দেখামাত্রই পালাচ্ছেন। পুলিশের ভয়ে অনেক নারীও রাতে বাড়িতে থাকছেন না এবং অনেকের বোরো ধান পরিপক্ব হলেও জমিতে যেতে পারছেন না।’ 

গ্রামের গৃহবধূ ফরিদা বেগম ও আবু তালেব বলেন, ‘মেয়েটিকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হোক এটা আমরাও চাই। তবে অযথা যেন নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়।’ 

এদিকে কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী মেয়েটিকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বদরগঞ্জ শহরে ভুক্তভোগীর ভাইয়ের বাসায় রেখে আসেন এবং পরবর্তীতে তিনি এলাকার ইউপি সদস্য আকমল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাটি ধামা চাপা চাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠে। এ কারণে তাঁরাও ওই মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এমন ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় এলাকা ছেড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদও বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সোমবার তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দুপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি। 

ওই ইউনিয়নের ইউপি সচিব আশিকুর রহমান বলেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান পরিষদে বসছেন না।’ 

তবে ইউপি সদস্য আকমল হোসেন এলাকায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মা মেয়েকে নির্যাতনের দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। পরে থানার এসআই মাহাবুরের নির্দেশে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে আপসের কথা বলেছিলাম। এতে দোষের কি? 

তবে উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব বলেন, ‘আমি ওই ইউপি সদস্যকে আপসের নির্দেশ দিইনি। যদি আমার নাম বলে থাকেন তাহলে মিথ্যা বলেছেন সেই ইউপি সদস্য।’ 

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অযথা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। যাঁরা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁদেরকেই ধরা হচ্ছে।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত চারজনের মধ্যে তিনজনের নাম এজাহারে ছিল, শুধু মহিরের নাম ছিল না। কিন্তু মহির মেয়েটিকে নির্যাতন চালিয়েছিলেন-এমন তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

গ্রামে পুরুষ শূন্যের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘যাঁরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন, হয়তো তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তা না হলে গ্রাম ছাড়ার কথা নয়। কারণ ওই ঘটনায় গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। প্রকৃত আসামিকে ধরতে রাতভর অভিযান চালানো রয়েছে।’ 
 
এর আগে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ‘ঈদের পরদিন ৪ মে (বুধবার) সন্ধ্যায় এক তরুণী ভ্যানে করে বদরগঞ্জ শহরে যাচ্ছিলেন। পথে এলাকার চার যুবক ভ্যানের এক যাত্রীসহ ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে পরিত্যক্ত বাড়িতে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। মেয়েটি চিৎকার দিলে যুবকেরা তাঁকে চরিত্রহীন অপবাদ দিয়ে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সঙ্গে ভ্যানের অপরিচিত যাত্রীকেও বাঁধা হয়। পরে তাঁরা প্রচার চালান, তরুণী এই ছেলের সঙ্গে দেহ ব্যবসার উদ্দেশ্যে শহরে যাচ্ছিলেন। এ কথা শুনে মেয়েটির ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধারে তাঁর মা এগিয়ে আসলে তাঁকেও গাছে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় মেয়েটির বাবা সেখানে গেলে তাঁকেও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। 

তরুণী অভিযোগ করেন, ওই দিন রাত ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাছের সঙ্গে বেঁধে তাঁদের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন গ্রামপুলিশ জান্নাতের নেতৃত্বে এলাকার ১৫ থেকে ২০ জন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এসে তাঁদের উদ্ধার করে বদরগঞ্জ শহরে তাঁর ভাইয়ের বাসায় রেখে আসেন। 

তরুণী বলেন, ‘এলাকার লোটাস, নুরুজ্জামান, মিল্টন ও বাটুল মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়েছেন। জখম স্থানগুলোর ছবি তুলে পুলিশকে দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নির্যাতনকারীরা সোমবার সকালে ইউপি সদস্য আকমলকে সঙ্গে নিয়ে আবার গাছে বেঁধে মারার হুমকি দিয়েছেন।’ 

মেয়েটির মা বলেন, ‘মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার মেয়েকে রাস্তা থেকে ধরে এনে মারধর করেছেন। মেয়েকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁরা আমাকেও গাছে বেঁধে মারধর করে গ্রামছাড়া করেন। পরে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু গ্রামপুলিশ জড়িত থাকায় দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।’ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার গ্রামপুলিশ সদস্যসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বদরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই তরুণীর বাবা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে দুই যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ: পর্যটক সেজে লামায় লুকিয়ে ছিলেন ৫ আসামি

কক্সবাজার প্রতিনিধি
পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজার শহরে স্থানীয় দুই যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে বান্দরবানের লামা উপজেলার মিরজিরি এলাকায় মাতামুহুরী রিভার ভিউ রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমি উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কামরুল হাসান বাবু (২৬), ইমরান উদ্দিন খোকা ওরফে আরিয়ান খোকা (২৫), আব্দুল কাইয়ুম (৩৩), মো. সাকিব (২০) এবং আরেকজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর। তাঁদের বাড়ি সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

ওসি ছমি উদ্দিন বলেন, ৯ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজার শহরের কলাতলী বাইপাস সড়কে বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন উত্তরণ আবাসিক এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফারুক নামের দুই যুবদল কর্মী। এই ঘটনার পর থেকে পাঁচ আসামি পর্যটকের ছদ্মবেশে বান্দরবানের লামায় আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদ পেয়ে লামায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বাইপাস সড়কের উত্তরণ আবাসিক এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন দুই যুবদল কর্মী সাইফুল ইসলাম (৩৫) ও মোহাম্মদ ফারুক (৩৪)। তাঁরা শহরের বাইপাস সড়কের চারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় মৎস্যজীবী লীগের নেতা আটক

ভোলা প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে আটক মো. মোশারফ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে আটক মো. মোশারফ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ মৎস্যজীবী লীগের এক নেতাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ভোলার কোস্ট গার্ডের সদস্যরা সদর উপজেলার ব্যাংকের হাট-সংলগ্ন এলাকা থেকে তাঁকে আটক করেন।

আটক ব্যক্তির নাম মো. মোশারফ হোসেন (৬০)। তিনি মৎস্যজীবী লীগের টাস্কফোর্স প্রতিনিধি বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।

কোস্ট গার্ড জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল দিবাগত রাত ১টায় ভোলার কোস্ট গার্ড বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোশারফ হোসেনকে আটক করে।

কোস্ট গার্ড ভোলা দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সূর্যের দেখা নেই, কনকনে ঠান্ডায় কাবু জনজীবন

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

আকাশে সূর্যের কোনো দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় মোড়া ঠাকুরগাঁও শহর। সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে। কনকনে ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে সড়কের পাশে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে শীতার্ত লোকজন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা ঘুরে এই দৃশ্য চোখে পড়ে।

গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ জেলায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। যদিও ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো আবহাওয়া অফিস নেই, তবে জেলার ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, সকাল ৭টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে বাতাসের কারণে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০ ডিগ্রির মতো।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানপাট তখন বন্ধ। পশ্চিম দিক থেকে আসা হিমেল বাতাস শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কম। জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষ বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হলেও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় ফুটপাতে আশ্রয় নেওয়া দরিদ্র লোকজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ। তাদের অনেকেরই গরম কাপড় নেই। তাই ঠান্ডা থেকে বাঁচতে কাগজ, পলিথিন ও ছেঁড়া কাপড় জ্বালিয়ে রাত ও সকাল পার করছে তারা।

সকালে সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক হাসান রাব্বির সঙ্গে। সড়কের পাশে কাগজ ও পলিথিন জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে পোহাতে তিনি বলেন, ‘আগে সকাল ৭টায় রিকশা নিয়ে বের হতাম। কিন্তু এখন ঠান্ডা এত বেড়েছে যে আজ ১০টার আগে বের হতে পারিনি। কুয়াশা একটু কমার অপেক্ষা করছি।’ শীতের কারণে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে বলে জানান শহরের কালীবাড়ি এলাকার কলা বিক্রেতা ভূষণ রায়। তিনি বলেন, ‘সোয়েটার, টুপি, মাফলার পরেও শরীর বাঁচে না। শীত কিছুতেই মানছে না।’

এদিকে শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকায় ৮ হাজার ৫০০ কম্বল কেনা হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, এ বছর ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে কম্বল কেনা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৭ হাজার কম্বল এবং বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দেড় হাজার কম্বল পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘আগামীকাল বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে’ এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক ও প্রতিবাদ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাকসু, শাখা ছাত্রশিবির, শাখা ছাত্রশক্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে ‘আগামীকালকে (শুক্রবার) বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক লড়াই করে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের লড়াই শুরু হবে শহীদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আগামীকালকে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এই খুনি হাসিনার দল হাজার হাজার নিষ্পাপ বাংলাদেশের দামাল ছেলেদেরকে হত্যা করেও ওর রক্ত পিপাসা মেটেনি। বিদেশে বসে এখনো বিপ্লবীদের হত্যা করার ছক করছে। আমরা আজ এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদ ওসমান হাদির রক্তের ওপর দিয়ে, শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যে সমস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে বৈধভাবে অবৈধভাবে বাংলাদেশে চাকরি করছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ভারতে পুশব্যাক করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা ওসমান হাদির খুনিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’

মোস্তাফিজুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপর আজ শুক্রবার দুপুরেও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একই ধরনের বক্তব্য লিখে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, শুধু রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। শহীদ ওসমান হাদি ভাই ইনকিলাব মঞ্চের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী প্রক্সি উদীচী, ছায়ানটের কালচারাল হেজেমনির বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল, সেই লড়াই জারি রাখতে হবে। তাদের সকল আধিপত্যবাদী বয়ানকে তছনছ করে দিতে হবে। ইট, পাথরের দেয়াল ভেঙে আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করা যায় না, সেটা হাদি আমাদের শিখিয়েছে।’

অন্য আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গতকাল শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের মৃত্যু-পরবর্তী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রদত্ত আমার বক্তব্যের কিছু শব্দ নিয়ে এই স্পষ্টীকরণ প্রদান করছি। বক্তব্যে ব্যবহৃত “তছনছ” শব্দটির মাধ্যমে ভাঙচুরকে বোঝানো হয়নি। বরং এর অর্থ ছিল শহীদ হাদির যে স্বপ্ন নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে, সর্বদা সচেতন থেকে ফ্যাসিবাদী বয়ানকে মোকাবিলা করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এ প্রসঙ্গে আরও যুক্ত করা প্রয়োজন যে, উদীচীসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। তবে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তিকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত