জন্মসনদ না পাওয়ায় উপবৃত্তিবঞ্চিত ৪ হাজার শিক্ষার্থী

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৫: ১২
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৫: ৩২

জন্মসনদ না পাওয়ায় চলতি অর্থবছরে নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ইউনিয়ন ও পৌরসভা কার্যালয়ে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও মিলছে না জন্মসনদ। শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিযোগ, কখনো সার্ভার সমস্যা, কখনো জেলা কার্যলয়ে দেরি হচ্ছে এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার তথ্য কর্মকর্তা আকমল হোসেন রাজু বলেন, ‘করার কিছুই নেই। শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের এক দিনেই জন্মসনদ দেওয়া যাচ্ছে। তবে এর ওপরে যাদের বয়স, তাদের নিয়ম মেনে জেলা অফিসের মাধ্যমে দেওয়ায় এই দেরি হচ্ছে।’

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উৎসাহ দিতে এবং শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়া রোধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে থাকে। এ উপজেলায় ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় রয়েছে ৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় ১৮ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। উপবৃত্তির তালিকায় নাম নিবন্ধের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৭ ডিজিটের জন্মসনদ চাওয়া হয়। এর বিপরীতে ১৪ হাজার ৬০৫টি অবেদন জমা পড়ে। জন্মসনদ না পাওয়ায় ৩ হাজার ৮৪৫ জন আবেদন করতে ব্যর্থ হন।

সৈয়দপুর রেলওয়ে সাবঅর্ডিনেট কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিউলি সুলতানা বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন শিক্ষার্থীর মধ্য ৪৩ জন উপবৃত্তির অর্থ পেয়েছে। জন্মসনদের অভাবে ৫৭ জনের আবেদনই করা হয়নি। উপবৃত্তি না পাওয়া শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা হতাশ হয়েছেন।’

এ বিষয়ে ইসমত আরা নামের একজন অভিভাবক জানান, তাঁর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল থেকে জন্মসনদ চাওয়ায় সৈয়দপুর পৌরসভার জন্মসনদ শাখায় প্রায় ৮ মাস আগে আবেদন করেও সনদ পাচ্ছেন না। মাসের পর মাস ঘোরানো হচ্ছে তাঁকে। নানা বাহানায় সময়ক্ষেপণ করছে কর্তৃপক্ষ।

সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মণ্ডল বলেন, ‘জন্মসনদের অভাবে প্রায় ৪ হাজার শিশু শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি না পাওয়া দুঃখজনক। সরকারি নির্দেশনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া সব শিক্ষার্থীই উপবৃত্তি পাবে। তাই বিষয়টির সঠিক সমাধানে জন্মসনদ কর্তৃপক্ষের খুব শিগগির যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

সৈয়দপুর পৌর প্যানেল মেয়র মো. শাহিন হোসেন বলেন, ‘সনদের জন্য যারা আবেদন করেছে, তাদের দ্রুত দেওয়া হয়েছে। সৈয়দপুর থেকে নীলফামারী ও ঢাকা এই তিন অফিস সমন্বয় করায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আমরা শতভাগ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তার পরও দীর্ঘ সময় অতিবাহিতের অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত