ছোট বোনের লড়াইয়ে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল বড় বোন

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ১০
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ১৯
রীমা আক্তার ও সীমা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাল্যবিবাহের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে পড়ছেন রীমা আক্তার (১৮)। তিনি যখন দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন তাঁর পরিবার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রীমার ছোট বোন সীমা খাতুনের প্রচেষ্টায় বন্ধ হয় সেই বাল্যবিবাহ। এসএসসি পাস করে ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন রীমা।

রীমা আক্তার ও সীমা খাতুন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়নের উত্তর তিলাই গ্রামের কৃষক এনামুল হকের মেয়ে। সংসারের অভাব-অনটনের কারণে কিশোরী রীমাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এনামুল হক।

রীমার বয়স তখন ১৭ বছর। তিনি উপজেলা শিলখুড়ী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর ছোট বোন সীমা তখন একই বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বাল্যবিবাহ রীমার জীবন নষ্ট করে দেবে—এমন চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে সীমার মনে। পরিবারের সদস্যদের কাছে বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরে সীমা। তাদের বোঝায় বাল্যবিবাহ একটি অপরাধ। বাল্যবিবাহ দেওয়া হলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে, এমনকি জেলেও যেতে হতে পারে।

কিশোরী সীমার প্রচেষ্টার কাছে হার মেনে রীমার বিয়ে বন্ধ করে দেয় পরিবার। বাল্যবিবাহের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে রীমা তাঁর পড়া লেখা চালিয়ে যান। তিনি এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন।

সীমা বলে, ‘বাল্যবিবাহ ও এর কুফল সম্পর্কে আগে জানতাম না। এমনকি হটলাইন নম্বরে ফোন দিলে সেবা পাওয়া যায়, সেটাও জানতাম না। যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি, তখন একদিন আমাদের গ্রামে মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির এক আপা (ফিল্ড ফ্যাসিলেটিটর) আসেন। তাঁর কাছে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনের কথা জানতে পারি। সেই যুব সংগঠনে যুক্ত হই। সেখান থেকে বাল্যবিবাহ ও এর কুফল সম্পর্কে জানতে পেরে বড় বোনের বাল্যবিবাহ বন্ধ করি।’  

রীমা বলেন, ‘বিয়েতে আমার মত ছিল না। বিয়ের বয়স না হতেই পরিবার বাল্যবিবাহ দিতে চেয়েছিল। ছোট বোনের চেষ্টায় বাল্যবিবাহের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছি। এসএসসি পাস করে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি।’

রীমা ও সীমার মা রেনুকা বেগম বলেন, ‘অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আমাদের ভুল ছিল। সীমা আমাকে বোঝায় অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে বিভিন্ন সমস্যা হয়। আমি বিষয়টা বুঝতে পেরে ওদের বাবাকে বোঝালে তিনি বিয়ে বন্ধ করে দেন। মেয়ে এখন কলেজে পড়ছে, এতে আমরা খুশি।’

কিশোরী সীমা চায় লেখা পড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আর রীমা চায় পড়াশোনা শেষ করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত