তিস্তা গতিপথ বদলে ব্যাপক ভাঙনপ্রবণ হবে, বাপার উদ্বেগ 

রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২: ৫৯
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩: ৪৫

ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ এবং অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে গতিপথ বদলে গিয়ে তিস্তা নদী ব্যাপক ভাঙনপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার পাশাপাশি টেকসই পরিবেশবান্ধব উপায়ে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংগঠনটি বলছে, উত্তরের প্রাণ-প্রকৃতি নদীনির্ভর। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় তিস্তা, ঘাঘটসহ অনেক নদ-নদীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাঙনের প্রবণতা বেড়েছে। মানুষ ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। কৃষিনির্ভর তিস্তা অববাহিকার জমি হারানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কর্মসংস্থানও হারাচ্ছে। 

গতকাল রোববার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন বাপার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম ফরিদ। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত কয়েক বছর ধরে তিস্তার বাঁ তীরের দিকে সরে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজের আপস্ট্রিম ছাতনাই কলোনি কিংবা থগাখড়িবাড়ী থেকে কুড়িগ্রামের বজরা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙনপ্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এই ভাঙনপ্রবণতাকে উৎসাহিত করছে শুকনো মৌসুমে অবৈধ বালু উত্তোলন। ডান তীরে তালপট্টি, হরিণচড়াসহ বেশ কিছু স্থানে ভাঙনের মূলে রয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। আসছে শুকনো মৌসুমে বালু উত্তোলনের প্রবণতা বাড়বে। এখন থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তিস্তা গতিপথ পরিবর্তন করবে এবং ব্যাপক ভাঙনপ্রবণ হয়ে উঠবে। 

বাপার এই সংগঠক বলেন, ‘তিস্তার জমি অবৈধভাবে দখল করে বাইশপুকুরে রহিমআফরোজের নির্মাণাধীন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, শৌলমারীতে ইন্টারকো পাওয়ার লিমিটেড, সুন্দরগঞ্জের তারাপুরে তিস্তা সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে উঠেছে। এসব প্রকল্পের উন্নয়ন করতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়ছে ভাঙনের প্রবণতা। এসব বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে বাণিজ্যিক স্বার্থে; নয়তো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে। এই পরিস্থিতিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের পাশাপাশি টেকসই পরিবেশবান্ধব উপায়ে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করছি।’

রংপুর শহরের ‘লাইফলাইন’ হিসেবে পরিচিত শ্যামাসুন্দরী খালের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থানভেদে ৬০ থেকে ১২০ ফুট প্রস্থ খালটি এখন ১০-১২ ফুট প্রস্থ নালা। হাজারের ওপর দখলদারদের দখলে রয়েছে এটি। অবৈধ দখল, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, প্রশাসনের উদাসীনতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে প্রাচীনতম এই খাল এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা কেডি খাল, খোকসা ঘাঘট ও ঘাঘটের। অবিলম্বে শ্যামাসুন্দরী খাল খনন এবং দখল ও দূষণমুক্ত করে বাসযোগ্য রংপুর শহর গড়ে তোলার দাবি জানায় বাপা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত