Ajker Patrika

গাইবান্ধা বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী, ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৪, ১০: ৫৯
Thumbnail image

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নদীতীরবর্তী ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে জেলায় ১৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

আজ শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারি, মোল্লার ইউনিয়নে বিভিন্ন চরে ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের তীরে চরাঞ্চলে নির্মিত ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেক টিনশেড ঘর ভেঙে পড়েছে। অনেকে নৌকায় করে ঘরের নিরাপদে জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। শাক-সবজি, কাঁচা মরিচ, ঢ্যাঁড়স, করলা পুঁইশাক তিন-চার দিন আগেই পানির নিচে তলে গেছে। নতুন করে পাটে পচন ধরছে। 

গাইবান্ধার সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের সেদাই ও গোপালপুর চর এলাকার বন্যার পানিগাইবান্ধা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৫টি, সুন্দরগঞ্জে ৭ টি, সাঘাটায় ৮টি ও ফুলছড়িতে ৭ টি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মোট ২৮ হাজার ৯২৮টি পরিবার। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৫১৮ টি, সুন্দরগঞ্জে ৪ হাজার ৭০০ টি, সাঘাটায় ১৩ হাজার ২৯০টি ও ফুলছড়িতে ৭ হাজার ৪২০ টি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ১৮১টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২৪টি, সুন্দরগঞ্জে ৪৮টি, সাঘাটায় ৩৬ এবং ফুলছড়িতে ২৩ টি, সাদুল্যাপুরে ৩৩ টি, পলাশবাড়ীতে ৬টি ও গোবিন্দগঞ্জে ১১টি। 

কামারজানি ইউনিয়নের খারজানি গ্রামের আব্দুল ছালাম বলেন, ‘গত কয়েক দিন থেকে নদীত খুব পানি বাড়ছে। রাতে আমাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে। রান্না করতে পারছি না। খুবই কষ্টে আছি ভাই।’

গাইবান্ধার সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের সেদাই ও গোপালপুর চর এলাকার বন্যার পানিগিদারি ইউনিয়নের ফলিয়ার ঘোব গ্রামে মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘খুবই কষ্ট করে খাবারের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু প্রাকৃতিক কাজ সারতে সমস্যায় পড়েছি। বিশেষ করে নারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন বেশি।’ 

চিরারকুটি চরের বাসিন্দা নাইজা বেগম বলেন, বাড়ি-ঘর বন্যার পানিত ডুবে গেছে। বাড়ি-ঘর ভাঙ্গে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছি। 

জেলার গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা। পাঠদান বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, জেলার চারটি উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গতকাল থেকে পানিতে নিমজ্জিত। এ কারণে ৭০টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৫টি বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয়ে আগের মতো পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হবে। 

গাইবান্ধার সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের সেদাই ও গোপালপুর চর এলাকার বন্যার পানিজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোছা. রোকসা বেগম ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। 

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জুয়েল মিয়া বলেন, বন্যাকবলিত চারটি উপজেলায় এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব বিতরণ শুরু হয়েছে। পানিবন্দীদের উদ্ধারের জন্য নৌকা, স্পিডবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। জেলা ও উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। ইউনিয়নভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম, কৃষি টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম ও লাইভস্টক টিম গঠন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত