Ajker Patrika

তারাগঞ্জে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১: ২০
তারাগঞ্জে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর বড়গোলা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন অভিভাবকও শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এবং পরে আবার বেলা ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত তাঁরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা।

তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসব। সেখানে বিষয়টি নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত হবে।’

জানা গেছে, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর বড়গোলা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী ২১ জন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যই সাতজন। অভিযোগ উঠেছে, আধিপত্য বিস্তারের জন্য গোপনে প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমান নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্ত্রী, ভাই, ভাতিজা, ভাতিজা বউকে চাকরি পাইয়ে দেন। এরপর গড়ে তোলেন দুর্নীতির সাম্রাজ্য।

রংপুর শহরে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল বাড়ি, গ্রামে করেছেন কোটি টাকার জমি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রধান শিক্ষকের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হন অভিভাবক ও  শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন প্রধান শিক্ষক ও তাঁর পরিবারের লোকজন।

গত বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান কেন ইউএনওকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এরপর আজ রোববার মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বড়গোলা এলাকায় ঘনিরাপুর বড়গোলা উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৯৬ সালে ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান আলিয়ার রহমান। এরপর তাঁর বড় ভাই মফিজাল রহমানকে কৌশলে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করেন।

বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ২১ জন। এর মধ্যে সাতজনই প্রধান শিক্ষকের স্বজন।

বড়গোলা গ্রামের অভিভাবক মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমান ও সভাপতি মফিজাল মিলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গোপনে ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজা বউকে নিয়োগ পাইয়ে দেন।

২০০০ সালে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী আলেয়া বেগম সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৪ সালে ভাতিজা আজম আলী, ২০১৬ সালে ভাতিজার স্ত্রী মোরশেদা বেগমকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।

এরপর ২০২২ সালে আরেক ভাতিজা আজমির সরকারকে পিয়ন ও ভাতিজার স্ত্রীকে মালি পদে নিয়োগ দেন। ২০২৩ সালে প্রধান শিক্ষক তাঁর আরেক ভাজিতাকে ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ দেন।

অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পরিবারের শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যাপারে কেউ কথা বলতে পারেন না। অন্য শিক্ষকেরাও ভয়ে থাকেন। এই সুযোগে প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম করেন। কেউ কিছু বললে হুমকি–ধমকি দেন।

Rangpur-2শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রতি মাসে ৫০ টাকা, বই বিতরণে রসিদ ছাড়াই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রতিটি পরীক্ষার ফি বাবদ ৬০০-৮০০, এসএসসি পরীক্ষার নিবন্ধনের নামে ৮০০ টাকা, ফরম পূরণের সময় বোর্ড ফির চার গুণ অতিরিক্ত টাকা, নম্বরপত্র উত্তোলনে ৩০০ টাক, প্রশংসাপত্রের জন্য ৪০০ এবং সনদ উত্তোলন বাবদ ৪০০ টাকা বাধ্যতামূলক আদায় করেন প্রধান শিক্ষক।

এগুলোর কোনো রসিদ দেন না। এভাবে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গত কয়েক বছরে টাকা আদায় করে অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন। রংপুর শহরে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাই নিজের জমি–জায়গা দিয়ে অনেক কষ্টে এই বিদ্যালয় আমার ভাইসহ প্রতিষ্ঠা করেছি। নিয়ম অনুযায়ী আমার ভাই মফিজাল রহমান সভাপতি হয়েছেন। বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একটি মহল প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্টের জন্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসব করাচ্ছে।’

অভিভাবক নাজির উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক তাঁর ইচ্ছামতো বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। সব বিদ্যালয় থেকে এখানে লেখাপড়ার খরচ অনেক বেশি। তাঁদের দাপটে কেউ কথা বলতে সাহস পান না। বিদ্যালয়ের অর্থ প্রধান শিক্ষকের পুরো পরিবার লুটপাট করে খেয়েছেন।

ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুলে কোনো কাগজ স্বাক্ষর করতে গেলেও টাকা লাগে। কিছু বললে হেড স্যার টিসি দেওয়ার হুমকি দেন। উনার স্ত্রী, ভাতিজারাও ভয় দেখান। এ জন্য স্যারের পদত্যাগের দাবিতে আমরা সড়কে দাঁড়াইছি। পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়ক ছাড়ব না।’

তারাগঞ্জের ইউএনও রুবেল রানা বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরই ৮ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত