মাগরিবের আজান কানে পৌঁছাতেই বিক্রেতাশূন্য হয়ে যায় কাঁচাবাজার

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২২, ২২: ৪৮
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২২, ০৯: ৩১

সূর্য অস্ত যাচ্ছে, বাজারে কেনাবেচা কেবল শুরু হয়েছে। যথানিয়মে বাজারের মসজিদে মাগরিবের আজান শেষ। দোকানিরা দোকান সাজিয়ে বাতি জ্বালিয়ে চললেন নামাজে। প্রতিটি দোকানে একই অবস্থা! ক্রেতা থাকলেও সে সময় দোকানে বসে নেই কোনো বিক্রেতা। আজান শোনার পরেই ফাঁকা হয়েছে পুরো সবজির বাজার।

এমন দৃশ্য চোখে পড়ে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার অমরপুর ইউনিয়নের শান্তির বাজারে। আজ শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় তোলা এমন একটি ছবি অল্প সময়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে পৌঁছায়।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘মাগরিবের নামাজ পড়তে সবজির বাজার হয়ে পাশের মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যাই। এমন দৃশ্য প্রতিদিনের হলেও হঠাৎ বিষয়টা আমার নজরে আসে এবং সেই মুহূর্তের কিছু ছবি ফেসবুকে আপলোড করি। কিন্তু ভাবতে পারি নাই, এত দ্রুত এভাবে ছবিগুলো ভাইরাল হবে।’ 

মাগরিবের নামাজের মুহূর্তে একযোগে দোকান রেখে মসজিদে যান বিক্রেতারা। ছবি: সংগৃহীত

সবজি কিনতে আসা স্থানীয় একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার প্রতিনিধির। এ সময় আসাদুল্লাহ আল-গালিব নামে ওই ক্রেতা বলেন, ‘আমি সবজি কিনতে এই শান্তির বাজারে নিয়মিত আসি। কাঁচাবাজার কিনতে এসে প্রায় সময় মসজিদে মাগরিবের আজান হয়ে যায়। আমি অনেক সময় খেয়াল করেছি, এই সবজির বাজার মাগরিবের নামাজের সময় ফাঁকা থাকে। বিক্রেতারা সবাই একসঙ্গে নামাজে যান। তাই বাজারের ভেতরে আর কোনো ক্রেতা প্রবেশ করে না।’ 

ওই এলাকার ইউপি সদস্য আশিকুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, বাজারটি অনেক ছোট। সেখানে একটি ছোট দোতলা মসজিদ আছে। এই বাজারের অধিকাংশ মানুষ নামাজ পড়ে। আমার জানামতে, সবজির বাজারের বিক্রেতারা সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। তাই মাগরিবের নামাজের সময় অল্প হওয়ায় নামাজের সময় ফাঁকা হয়ে যায় বাজারটি। 

কাঁচাবাজারের ভেতরে চা ব্যবসায়ী মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘নামাজের সময় আমিও দোকান খোলা রেখেই নামাজে যাই। সে সময় কোনো বিক্রেতাই থাকে না।’ 

মাগরিবের নামাজের মুহূর্তে একযোগে দোকান রেখে মসজিদে যান বিক্রেতারা। ছবি: সংগৃহীতসবজি বিক্রেতা মো. হামিদুল ইসলাম, দুলাল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, মইনুদ্দিন ইসলামসহ আরও অনেকের সঙ্গে কথা হলে তারা আজকের পত্রিকাকে জানান, এই বাজার মসজিদের জায়গায় অবস্থিত। প্রতি বিক্রেতার দোকানের ভাড়া মসজিদ কমিটিকে দেওয়া হয়, যা মসজিদ উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। নামাজ পড়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নিজে থেকেই সবাই একসঙ্গে নামাজে যান। আর মাগরিবের ওয়াক্ত খুব অল্প সময়ে শেষ হয় বলে সবাই একসঙ্গে যান। 

এ বিষয়ে বাজার মসজিদের ইমাম মো. আব্দুল লতিফের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শান্তির বাজার একটি মসজিদভিত্তিক বাজার। তাই এখানে মোটামুটি সব ব্যবসায়ীই নামাজ পড়েন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত