Ajker Patrika

ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ঘটক

এম মেহেদী হাসিন, রংপুর
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ০৭
ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ঘটক

পারিবারিকভাবে বিয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ঘটক। আর এই চরিত্রের কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বয়স্ক একজনের দৃশ্য। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রংপুরের রিদওয়ান নুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে এই যুবক পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঘটকের কাজ।

রিদওয়ান রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর পেশা নির্বাচন নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় চাকরিতে না গিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে স্বাধীন থাকার কথা চিন্তা করতে থাকেন।

এরই মধ্যে বাল্যবন্ধু তৌফিক আহমেদ বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন। সেখানে এগিয়ে আসেন রিদওয়ান। আর এই কাজ করতে গিয়ে তাঁর মধ্যে ঘটকালিকে পেশা হিসেবে নেওয়ার আগ্রহ জন্মে। সেই চিন্তা থেকেই গত বছরের জুলাই মাসে পুরোদমে শুরু করেন ঘটকালি। খুলে ফেলেন ‘ঘটক জি’ নামে ম্যারেজ মিডিয়া প্রতিষ্ঠান।

বন্ধু তৌফিকের বিয়ের মাধ্যমেই প্রথম সফলতা আসে রিদওয়ানের। বর্তমানে তাঁর সেবা নেওয়াদের তালিকায় বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এই কাজে তিনি কিছু নিয়ম মেনে চলেন। শুধু শিক্ষিত পরিবারের বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়েদের জন্য কাজ করেন। যৌতুক নিয়ে বিয়ে করতে আগ্রহীদের কাজ হাতে নেন না।

রিদওয়ান বলেন, ঘটক পেশায় শিক্ষিত লোকের অভাব রয়েছে। স্বল্পশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত লোকজনের কাছে অভিভাবকেরা জিম্মি হয়ে পড়েন। নানা বাহানায় টাকা খসানো হয়। ফলে ঘটককে মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে তাঁর এই উদ্যোগ।

রিদওয়ানের ঘটক পেশায় আসাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বেরোবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কোনো পেশাকে ছোট হিসেবে দেখতে নেই। রিদওয়ানের বিষয়ে শুনেছি। শিক্ষিত তরুণেরা এগিয়ে এলে এই পেশা সমৃদ্ধ হবে। তাঁর সফলতা কামনা করছি।’

রিদওয়ানের প্রথম গ্রাহক এসকে প্যাকেজিংয়ের কর্ণধার তৌফিক বলেন, ‘রিদওয়ান আমার বাল্যবন্ধু। ওর যে বিষয়টা সবচেয়ে ভালো লাগে, সেটা হলো সততা। তাই ওকে বলেছিলাম আমার জন্য জীবনসঙ্গী খুঁজতে। ওর কাজে আমি খুশি।’

মজার বিষয় হলো, ঘটক পেশা বেছে নিলেও রিদওয়ান নিজেই এখনো অবিবাহিত। অনেকেই এটা নিয়ে ঠাট্টা করেন। তবে রিদওয়ান বলছেন, তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে মেনে নিয়ে কোনো মেয়ে আগ্রহী হলে তিনি বিয়ে করবেন।

রিদওয়ানের বাসা রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়। বাবা মারা গেছেন। মা একটি সরকারি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

‘ঘটক জি’ নিয়ে বড় স্বপ্ন রয়েছে রিদওয়ানের। প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান সারা দেশে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট খুলেছেন। আছে ফেসবুক পেজ। ভবিষ্যতে এর সঙ্গে যোগ করতে চান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। বিয়েশাদি সংক্রান্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করতে চান বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়ের পরিবারকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত