ঠাকুরগাঁওয়ে খরায় পুড়ছে সবজির খেত, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪, ১৭: ৫৩

একদিকে খরা অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে ঠাকুরগাঁওয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে ফসলের মাঠে। প্রচণ্ড গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবজির খেত। তাপে ঝলসে যাচ্ছে গাছের কুঁড়ি ও পাতা। 

কৃষকেরা বলছেন, অনাবৃষ্টি ও খরার হাত থেকে ফসল রক্ষায় সকাল-বিকেল খেতে পানি দিয়েও গাছ বাঁচাতে পারছেন না। এতে সবজির উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত তাঁরা। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য মতে, চলমান গ্রীষ্মকালীন সবজি আবাদের তালিকায় আছে লাউ, মিষ্টি কুমড়া চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, করলা, টমেটো, শসা ও মরিচসহ প্রায় সব ধরনের সবজি। তবে তীব্র গরমসহ রোদের তাপে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এই সব ফসলি মাঠে। 

সদরের রুহিয়া কুজিশহর এলাকার কৃষক তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘তীব্র গরমে পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে তার ৫ বিঘা জমির মিষ্টি কুমড়া খেত। সকালে পানি দিলে দুপুরের আগেই শুকিয়ে যায়। বৃষ্টি না হলে কোনো গাছই টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।’ 

একই এলাকার সবজি চাষি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘অতিরিক্ত খরার কারণে সেচ কাজে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সেচ লাগছে জমিতে। কৃষিকাজে শ্রমিকও লাগছে বেশি। এবার বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে।’ 

সদরের মোহাম্মদপুর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, মিষ্টি কুমড়ো, করলা, টমেটো, শসা, মরিচ ও লাউয়ের মতো সবজি গাছগুলো শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। কিছু কিছু গাছের পাতার রস শুকিয়ে পাতা কুঁকড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। 

ওই গ্রামের বাদামচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, রোদ আর তাপমাত্রায় বাদাম গাছ শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ভয়াবহ এই তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কাঙ্ক্ষিত ফলন হবে না। 

খেত-তাপপ্রবাহে মিষ্টি কুমড়া খেতের পাতা শুকিয়ে কুঁকড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া কুজিশহর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা৫৬ শতক জমিতে চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, করলাসহ বিভিন্ন জাতের শাক লাগিয়েছেন সদরের জগন্নাথপুর এলাকার কৃষক হামিদুর। তীব্র রোদে গাছগুলো পুড়ে যাচ্ছে জানিয়ে হামিদুর বলেন, এ বছর এমনিতেই চাষাবাদে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেশি। এখন ফলন ধরার সময়ে এসে গরমে বিবর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে মাঠে লাগানো বিভিন্ন সবজি গাছ। সকাল-বিকেল পানি দিচ্ছি। তারপরও গাছগুলা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। 

জেলায় চলতি মৌসুমে পাঁচ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে জানালেন ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখনো খরিফ এক মৌসুমের আবাদ চলছে। চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে শাকসবজির গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফসল রক্ষায় কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। বিশেষ করে জমিতে রসের ঘাটতি যেন না হয় সে দিকে কৃষকদের সেচ ব্যবস্থা চালু রাখাসহ নানা রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত