বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপরে পানি, বন্যার আতঙ্কে তিস্তাপারের মানুষ

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১৫: ৪৮
Thumbnail image

রংপুরের কাউনিয়ায় উজানের ঢল আর টানা বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতীরবর্তী আমন ও সবজিখেত তলিয়ে গেছে। এদিকে ভোর থেকে নদীর পানি হু হু করে বাড়তে থাকায় পানিবন্দী হওয়ার আতঙ্কে চরাঞ্চলের অনেকেই গবাদিপশু উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। 

আজ শনিবার বেলা ৩টায় কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শনিবার সকাল ৬টার দিকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে বেলা ৩টার দিকে কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে করে কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন জানান, টানা বৃষ্টি ও নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চলে দুই শতাধিক বিঘা জমির আমনের চারা তলিয়ে গেছে। 

রংপুরের কাউনিয়ায় উজানের ঢল আর টানা বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছেপরিস্থিতি সম্পর্কে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। আজ শনিবার ভোর থেকে দ্রুত পানি বেড়ে ইউনিয়নের চর  ঢুষমারা গ্রামের কিছু বসতবাড়ির উঠানে পানি ঢুকেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে নদীতে পানি বাড়ছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী গ্রামের অনেক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে।’ 

টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোর থেকে তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে আমার ইউনিয়নের চর গনাই, বিশ্বনাথ, হয়বৎখাঁ, আজমখাঁ গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে চরাঞ্চলের অনেক আমনখেতসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।’ 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, ‘সার্বক্ষণিকভাবে তিস্তার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকাসমূহ তদারক করা হচ্ছে। বেলা ৩টা পর্যন্ত কোথাও প্লাবিত বা পানিবন্দী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। মাঠ পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সরকারিভাবে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। যখন যা প্রয়োজন হবে, তখন তা পৌঁছে দেওয়া হবে।’ 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ‘ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তায় পানি বাড়ছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ভাটি অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত