Ajker Patrika

অর্ধশত ভাতাভোগীর টাকা যাচ্ছে অন্য নম্বরে, ব্যবস্থা নেয়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর

মাসুদ পারভেজ রুবেল, ডিমলা (নীলফামারী)
অর্ধশত ভাতাভোগীর টাকা যাচ্ছে অন্য নম্বরে, ব্যবস্থা নেয়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর

স্বামীর মৃত্যুর পর গত দুই বছর ধরে বিধবা ভাতা পেয়েছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খতেজা বেগম। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না তিনি। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়েছে ভাতার টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে তাঁর ভাতার তথ্যে অন্য ব্যক্তির মোবাইল নম্বর যোগ করা হয়েছে। 

টাকা ফেরত পেতে সম্প্রতি ওই কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন খতেজা। ঈদের আগে টাকা না পাওয়ায় খতেজা এখন শুধুই কাঁদছেন। 

খতেজা বলেন, ‘ভাতার টাকায় তাঁর চিকিৎসা খরচ চলত। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগে মানবেতর জীবন যাপন করছি। বাকিতে দোকান থেকে ওষুধ কিনেছি। সেই টাকাও পরিশোধ করতে পারছি না। দিনের পর দিন সমাজসেবা অফিসে ঘুরেও টাকা পাচ্ছি না।’ 

শুধু খতেজা নয়, তাঁর মতো উপজেলার অনেক ভাতাভোগী মোবাইল নম্বরের ভুলের কারণে ভাতা পাচ্ছেন না। ভাতা না পাওয়ায় ম্লান হয়েছে তাঁদের ঈদের স্বপ্ন। 

সম্প্রতি টাকা পেতে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন শতাধিক ভাতাভোগী। এর মধ্যে সমাজসেবা অফিস কিছু ভাতাভোগী অ্যাকাউন্ট ঠিক করে দিলেও বেশির ভাগ ভাতাভোগীই এখনো টাকা পায়নি। 

ভুক্তভোগীরা বলছেন, সমাজসেবা কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার গিয়েও কোনো সমাধান হচ্ছে না। যে পরিমাণ ভাতা পাওয়ার কথা বিভিন্ন অফিসে ঘুরতে ঘুরতে তার দ্বিগুণ বেশি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জবাবদিহি এড়াতে বেশির ভাগ সময়ে তাঁর কার্যালয়েই থাকেন না। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে নুরুন্নাহার নুরী চার বছর আগে এ উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি সকাল ১১টার পরে অফিসে আসেন। আর বেলা ৩টা বাজতে না বাজতেই চলে যান। 

উপজেলার পশ্চিম খড়িবাড়ি গ্রামের রজব আলী ব্যাংক থেকে তাঁর বয়স্ক ভাতার টাকা তুলেছেন বেশ কয়েকবার। পরে তিনি সমাজসেবা কার্যালয়ে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দেন। তবে ভাতার টাকা মোবাইলের মাধ্যমে দেওয়া শুরু হতেই তৈরি হয় জটিলতা। গত চার বছরে তিনি কোনো ভাতা পাননি। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জানতে পারেন তাঁর ভাতার সব টাকা চলে গেছে অন্য নম্বরে। 

রজব আলী বলেন, ‘ভাতার টাকা কোথায় যাচ্ছে, কেন পাচ্ছি না, তা জানতে সমাজসেবা অফিসে চার বছর ঘুরছি। কারও কাছ থেকে সঠিক জবাব পাইনি। সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দিলে তিন মাসের ভাতার টাকা পেয়েছি। তবে আগের টাকার কোনো হদিস পাইনি।’ 

একই সমস্যার কারণে প্রায় ৩০ মাস সরকারি ভাতা বঞ্চিত বালাপাড়া ইউনিয়নের সিরাজুল হক ও ঝুনাগাছ চাপানির আলেমা বেওয়া। তাঁরা জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবা কার্যালয়ে গেলে শুধু আশ্বাস দেয়, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ঠিক আর হয়নি। 

নাউতারা ইউনিয়নের নিরদা বালার ছেলে সরেস চন্দ্র জানান, তাঁর মা ৪ বছর ধরে বিধবা ভাতার আওতাভুক্ত। আগে নিয়মিত ভাতা পেলেও শেষ দুই বছরে কোনো টাকা পাননি। 

বালাপাড়া ইউনিয়নের ডালিমন নেছা, রাশেদা বেগম, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের মনিজা বেগম, কুলছুম বেগম, ছাতনাই ইউনিয়নের সবুর জান, নাউতারা ইউনিয়নের আলেয়াসহ অন্তত ৫০ জন ভাতাভোগী জানান, তাঁদের টাকা পাঠানো হয়েছে ভুল নম্বরে। 

ডালিমন নেছার ছেলে পাষান আলী বলেন, ‘এটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। মোবাইলে কয়েক দফা টাকা উত্তোলনের পর একই মানুষের ভাতার টাকা ভুল নম্বরে যায় কীভাবে।’ 

সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ২৩০। এর মধ্যে বয়স্ক ১২ হাজার ১৮৫, প্রতিবন্ধী ৬ হাজার ৪৭ এবং বিধবা ভাতাধারী ৭ হাজার ৮৯৮ জন। আগে সুবিধাভোগীরা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তিন মাস পরপর ভাতার টাকা পেতেন। পরে ব্যাংক হিসাবের পরিবর্তে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ টাকা দেওয়ার সুবিধা চালু করে সরকার। এ জন্য প্রত্যেক ভাতাভোগীর মোবাইল হিসাব নম্বর সংগ্রহ করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। 

অভিযোগ উঠেছে, ওই ভাতাভোগীদের অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসার পর তালিকায় নাম থাকা অনেক ভাতাভোগী ভাতা পায়নি। অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। অনেকের মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন হয়ে গেছে। এ জন্য ভুক্তভোগীরা দায়ী করছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও মোবাইল ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষকে। 

তাদের ভাষ্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে মোবাইল নম্বরে অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছে সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিলে তারা বলেন, ‘আপনার ভাতার টাকা ভুল নম্বরে গিয়েছে বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে সমাজসেবা অফিসে এসে মোবাইল নম্বর ঠিক করে গেলেও টাকা গেছে অন্য মোবাইলে। আবার বন্ধ হওয়া অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করলেও আগের টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না। 

এ ছাড়া নতুন ভাতা ভোগীদের অনেকেই টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী ব্যক্তির তালিকায় নাম উঠলেও টাকা চলে যাচ্ছে ভুল অ্যাকাউন্টে। 

পচারহাট গ্রামের জামিলা বেগম বিধবা ভাতা কার্ড পেয়েছেন সাত মাস আগে। কিন্তু তিন মাস পর পর যে টাকা পাওয়ার কথা তাঁর তার মোবাইলে আসেনি। 

জামিলা অভিযোগ করেন, অফিসে গিয়ে সঠিক মোবাইল নম্বর দিয়ে আসলেও তাঁর দুই দফার টাকা অন্য মোবাইলে চলে গেছে। জমিলার আফসোস সামনে ঈদ। এখন অবদি তিনি কোনো টাকা পাননি। 

খালিশা চাপানি গ্রামের আবেদা বেগম ৭ বছর ধরে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। তবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে (নগদ) টাকা বিতরণ শুরুর পর গত এক বছরে তিন দফায় টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। 

উত্তর ঝুনাগাছ চাপানী গ্রামের বাক্প্রতিবন্ধী কুলছুম বেগমও এক বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা পাননি বলে অভিযোগ করে তার স্বজনরা। তাদের ভাষ্যমতে, তারা কোনো ফোন বা খুদে বার্তা পাননি। তারপরও পিন নম্বর পরিবর্তন করে নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার নুরীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

নীলফামারী সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বরের পিন অনেক সময় হ্যাক হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারেন না। হ্যাকাররা নম্বর হ্যাক করে অন্য মোবাইল দিয়ে টাকা তুলতে পারে। 

তিনি জানান, কতজন ভাতাভোগীর টাকা অন্যের মোবাইলে গেছে বা টাকা পাচ্ছে না তাদের তথ্য ওই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছ থেকে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত