দিনাজপুর ফাজিলপুর ইউনিয়ন

পলাতক চেয়ারম্যানের কক্ষে মেম্বারের তালা, বারান্দায় চলছে কার্যক্রম

দিনাজপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image
প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বারান্দায় বসে দাপ্তরিক কাজ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদে কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বিগত তিন মাস ধরে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ। চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক পলাতক থাকায় পরিষদের দায়িত্ব পালনে তৈরি হয়েছে সংকট। নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ইউপি সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। এতে পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে, ভোগান্তিতে পড়ছেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

সরকার পতনের পরদিনই চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জালাল উদ্দীন। তিনি স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

নিয়ম অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে পরিষদের কাঠামো অনুযায়ী ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান বদিউর রহমান ও ২ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান সুমিত্রা রানী রায় দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। হিসেব অনুযায়ী ৩ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিনের অনুসারী কয়েকজন সদস্যের বাধার মুখে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। এ বিষয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে তিনি লিখিত অভিযোগও করেছেন।

প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ‘জালাল মেম্বার পরিষদের সদস্যদের হুমকি দিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছেন। এতে পরিষদের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’

গত বুধবার (২০ নভেম্বর) পরিষদ পরিদর্শনে দেখা যায়, প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বারান্দায় বসে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করছেন। পরিষদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নাজুক। সেবাগ্রহীতারাও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। প্রাণহীন পরিষদ চত্বর, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তূপ। ভবনের সঙ্গে লাগোয়া টয়লেট থেকে ভেসে আসছে দুর্গন্ধ। সেখানে নোংরা পানির সঙ্গে জমে আছে ময়লার স্তূপ।

পরিষদের সচিব মাসুদা আক্তার জানান, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি এবং পরিষদ সদস্যদের দ্বন্দ্বে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। মাতৃত্বকালীন ভাতা ও টিসিবির তালিকা প্রস্তুত করতেও সমস্যা হচ্ছে। নিয়মিত সভা না হওয়ায় অনেক কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউপি সদস্যদের মধ্যে অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আমরা প্যানেল চেয়ারম্যানকে মেনে নিয়েছি। কিন্তু জালাল মেম্বারের প্রভাব ও হুমকির কারণে প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারছি না। অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালাবদ্ধ করা ইউপি সদস্য জালালউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সিরাজুল মেম্বারের (প্যানেল চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে ১১ জন মেম্বার (ইউপি সদস্য) অনাস্থা আইনছি, আপনাদের কী করার আছে করেন। আমরা ওকে মানি না।’

কেন অনাস্থা এনেছেন, জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করলেও তিনি আর ধরেননি।

দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান জানান, চেয়ারম্যান পলাতক এবং সচিবের কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্বে থাকার কথা। তবে অনাস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত সমস্যার সমাধানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। "

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত