হাতীবান্ধার দ্বীপচরে তিস্তার ভাঙনের শিকার ৪০ বাড়ি, নানা সংকটে দুর্গতরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ২০: ১৩

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার দ্বীপচর উত্তর ডাউয়াবাড়ির অন্তত ৪০টি বাড়ি, দুটি মসজিদ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব স্থাপনা তিস্তায় বিলীন হয়েছে। সেখানকার দুর্গত মানুষেরা নিজেদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে শ্রমিক ও নৌকা সংকটে রয়েছেন।

তিস্তা, ধরলা আর সানিয়াজান নদীবেষ্টিত জেলা লালমনিরহাটের উত্তর সীমান্তে খরস্রোতা ধরলা নদী আর দক্ষিণে পুরো জেলা ঘিরে রেখেছে তিস্তা। নদীর পানিপ্রবাহ কমে গেলেই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। গত বন্যার পানি কমতেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে তিস্তার বাঁ তীর লালমনিরহাটে। ভাঙনের তীব্রতা বেশি হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নে।

ওই গ্রামের নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চোখের সামনে গ্রামের একের পর এক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। একটি বাড়িতে অনেক জিনিসপত্র থাকে। এসব সরিয়ে নিতেও অনেক লোক লাগে। আত্মীয়স্বজনকে ডেকে গ্রামবাসী নিজেরা এই কাজ করছে। কিন্তু নতুন করে ঘরবাড়ি তোলার মতো জমিও নেই আমাদের। তাই আপাতত ঘরবাড়ি জিনিসপত্র সরিয়ে বিদ্যালয় মাঠে রেখেছি।’

গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ওহেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে ১ হাজার টাকা দিলেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামবাসী সবাই মিলে একে অপরের ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র সরানো হচ্ছে। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক জিনিসপত্র ভেসে গেছে তিস্তায়। তবু একটি পরিবারকে সরিয়ে নিতে খরচ পড়ে প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা। যা অনেকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব।’

বন্যার পানি উঠে যাওয়া একটি বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকাগ্রামটির অন্তত ৪০টি বাড়ি, দুটি মসজিদ ও উত্তর ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে উত্তর ডাউয়াবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অসংখ্য বাড়ি ও স্থাপনা। এসব পরিবারের ঘরবাড়ি ও মালপত্র পরিবহনের জন্য ২৮টি নৌকা বিরতিহীনভাবে চলাচল করছে।

ডাউয়াবাড়ি ইউপির সচিব আজহারুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ডাউয়াবাড়ি গ্রামের ৪০টি বসতভিটা, দুটি মসজিদ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সব মিলে প্রায় এক শ পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে চলতি মৌসুমে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ক্রমেই বড় হচ্ছে। 

উত্তর ডাউয়াবাড়ি গ্রামের কালাম মিয়া বলেন, ‘ত্রাণ নয়, তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। যাতে কষ্টে অর্জিত সম্পদ নদী ভাঙনে বিনষ্ট না হয়। আমাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ঠিকানা দরকার। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় তিস্তাপাড়ের মানুষ।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। তাঁরা তালিকা করে পাঠালে এবং বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত