কুড়িগ্রাম ও নাগেশ্বরী প্রতিনিধি
‘আমার মাইয়াডারে গুলি কইরা বিএসএফ পাখির মতো মাইরা কাঁটাতারে ঝুলাইয়া রাইখছে। মাইয়াডার কত রক্ত যে মাটিত পড়ছে, তার কোনো কিনারা নাই। ১২ বছর হইয়া গেল, তারও বিচার পাইলাম না। বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে।’ শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সীমান্তে নিহত কিশোরী ফেলানীর মা জাহানারা বেগম।
কাল ৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু কান্না থামেনি মা জাহানারা বেগমের। মাঝেমধ্যেই মেয়ে হারানোর স্মৃতি তাঁকে তাড়া করে, তখন শুধু নীরবে কাঁদেন। এই দুঃসহ স্মৃতির ভার আর তিনি বইতে পারছেন না। প্রতিবছরের এ সময় সেই কষ্ট আরও বেড়ে যায়। কারণ, এ সময় সংবাদকর্মীরা ভিড় করেন বাড়িতে। তাঁদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। স্মৃতি খুঁড়ে বেদনা জাগান তাঁরা। কিন্তু ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচার কবে হবে—সেই উত্তর পান না তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা, এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দেখে যাওয়া।
ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার করতে আর কত দিন লাগবে? ফেলানী হত্যার পর সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন খোঁজ নিলেও এখন আর কেউ খোঁজ নেয় না। আমার অন্য ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে আছি। পরিবারে কারও চাকরির ব্যবস্থা করলে দুবেলা খেয়ে-পরে বাঁচতে পারতাম।’
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে বাড়ি হলেও জীবিকার প্রয়োজনে ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। দেশে ফেলানীর বিয়ে দেবেন বলে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে মেয়েকে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে রওনা দেন নূরুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে মই বেয়ে পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ছোড়া গুলি লাগে ফেলানীর শরীরে। গুলিবিদ্ধ ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলে ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নিথর দেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে সাড়ে চার ঘণ্টা। ফেলানীর ঝুলন্ত মরদেহের ছবি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেলানী হত্যার বিচার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের ওপর চাপ বাড়ে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত আবারও আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন। রায়ের পরে একই বছরের ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬-১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি। এরপর ২০১৯-২০ সালে কয়েকবার শুনানির তারিখ ধার্য হলেও এখন পর্যন্ত তা সম্পন্ন হয়নি।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডে তাঁর পরিবারকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মামলার প্রয়োজনে একাধিকবার ভারতে গেছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও মানবাধিকারকর্মী এস এম আব্রাহাম লিংকন। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে আব্রাহাম লিংকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে করা রিটটি নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। প্রত্যাশা করছি, ভারতের আদালত দ্রুত রিট আবেদনটির শুনানি কার্যতালিকায় নিয়ে আসবেন এবং একটি ইতিবাচক রায় দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের উচ্চ আদালতে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে রিট আবেদন করেছি। শান্তিপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় এখানে জড়িত রয়েছে। ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের পাশাপাশি আমাদের প্রত্যাশা, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক। সীমান্তে যেন আর কোনো নিরপরাধ মানুষের প্রাণ না ঝরে।’
‘আমার মাইয়াডারে গুলি কইরা বিএসএফ পাখির মতো মাইরা কাঁটাতারে ঝুলাইয়া রাইখছে। মাইয়াডার কত রক্ত যে মাটিত পড়ছে, তার কোনো কিনারা নাই। ১২ বছর হইয়া গেল, তারও বিচার পাইলাম না। বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে।’ শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সীমান্তে নিহত কিশোরী ফেলানীর মা জাহানারা বেগম।
কাল ৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু কান্না থামেনি মা জাহানারা বেগমের। মাঝেমধ্যেই মেয়ে হারানোর স্মৃতি তাঁকে তাড়া করে, তখন শুধু নীরবে কাঁদেন। এই দুঃসহ স্মৃতির ভার আর তিনি বইতে পারছেন না। প্রতিবছরের এ সময় সেই কষ্ট আরও বেড়ে যায়। কারণ, এ সময় সংবাদকর্মীরা ভিড় করেন বাড়িতে। তাঁদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। স্মৃতি খুঁড়ে বেদনা জাগান তাঁরা। কিন্তু ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচার কবে হবে—সেই উত্তর পান না তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা, এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দেখে যাওয়া।
ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার করতে আর কত দিন লাগবে? ফেলানী হত্যার পর সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন খোঁজ নিলেও এখন আর কেউ খোঁজ নেয় না। আমার অন্য ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে আছি। পরিবারে কারও চাকরির ব্যবস্থা করলে দুবেলা খেয়ে-পরে বাঁচতে পারতাম।’
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে বাড়ি হলেও জীবিকার প্রয়োজনে ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। দেশে ফেলানীর বিয়ে দেবেন বলে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে মেয়েকে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে রওনা দেন নূরুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে মই বেয়ে পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ছোড়া গুলি লাগে ফেলানীর শরীরে। গুলিবিদ্ধ ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলে ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নিথর দেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে সাড়ে চার ঘণ্টা। ফেলানীর ঝুলন্ত মরদেহের ছবি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেলানী হত্যার বিচার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের ওপর চাপ বাড়ে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত আবারও আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন। রায়ের পরে একই বছরের ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬-১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি। এরপর ২০১৯-২০ সালে কয়েকবার শুনানির তারিখ ধার্য হলেও এখন পর্যন্ত তা সম্পন্ন হয়নি।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডে তাঁর পরিবারকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মামলার প্রয়োজনে একাধিকবার ভারতে গেছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও মানবাধিকারকর্মী এস এম আব্রাহাম লিংকন। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে আব্রাহাম লিংকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে করা রিটটি নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। প্রত্যাশা করছি, ভারতের আদালত দ্রুত রিট আবেদনটির শুনানি কার্যতালিকায় নিয়ে আসবেন এবং একটি ইতিবাচক রায় দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের উচ্চ আদালতে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে রিট আবেদন করেছি। শান্তিপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় এখানে জড়িত রয়েছে। ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের পাশাপাশি আমাদের প্রত্যাশা, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক। সীমান্তে যেন আর কোনো নিরপরাধ মানুষের প্রাণ না ঝরে।’
নির্মাণকাজের দায়িত্ব পাওয়া বেসরকারি আবাসনপ্রতিষ্ঠান কম্প্রিহেনসিভ হোল্ডিংস ছয় দফা সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ না করায় বিপাকে পড়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)।
৯ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি তেলের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী।
৩৪ মিনিট আগেরাজধানীর সবুজবাগ থানাধীন ভাইগদিয়া এলাকায় মো. নয়ন আহম্মেদ ওরফে রমজান নামের এক যুবককে পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রমজানের এক সহযোগীকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
৮ ঘণ্টা আগেরাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের খোলা স্পটে বর্জ্য অপসারণের সময় বোমা বিস্ফোরণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চারজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আহত হয়েছেন। তারা হলেন মো. আলমগীর হোসেন (৩৬), মো. ইয়াছিন (৪০), আসাদ মিয়া (৫৮) ও সাইফুল ইসলাম (৪৭)। আহত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বর্তমানে রাজধানীর শহীদ সোহ্রাওয
৯ ঘণ্টা আগে