আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
‘তোমাকে দেখার মতো আর চোখ নেই, তবু গভীর বিস্ময়ে আমি টের পাই আজ নতুন বাংলাদেশের স্বাদ।’ —এমন অভিব্যক্তিই যেন ঠিকরে বের হচ্ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে চোখ হারানোর শঙ্কায় কাতর সঞ্জু মিয়ার মুখচ্ছবি থেকে। স্বৈরশাসক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের সাধারণ মানুষ প্রাণ খুলে মুক্ত বাতাস আর দুচোখ দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে দেখছেন।
কিন্তু ঠিক একই সময়ে চোখ হারানোর শঙ্কা ও সারা শরীরে বুলেটের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন সঞ্জু মিয়া। সারা দেশের ছাত্র-জনতার মিছিলে যখন গুলি চলছিল, তখন বিবেকের তাড়নায় রাস্তায় নেমেছিলেন গাইবান্ধা সদরের খোলাহাটি ইউনিয়নের সঞ্জু মিয়া (২৬)।
উপজেলার মিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. ইয়াসিন মিয়ার ৩ সন্তানের মধ্যে বড় সঞ্জু ছিলেন পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সংসারের হাল ধরার জন্য শহরের একটি ওয়ার্কশপে কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করতেন তিনি। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে দেশের মানুষ সম্ভাবনার নতুন সূর্য দেখলেও তাঁর জীবনে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ অন্ধকার।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা শহরের প্রাইম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন সঞ্জু। বাম চোখের ভেতরটা লাল হয়ে আছে। সারা শরীরে অসংখ্য বুলেটের দাগ। সাক্ষ্য দিচ্ছে, যৌক্তিক দাবি আদায়ে তাঁর প্রত্যক্ষ সংগ্রামের। শরীর এক পাশ থেকে অন্য পাশ করতে পারছেন না। কথা বলার সময় কাঁপছে শরীর।
৪ আগস্ট, গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একটি মিছিলে অংশ নিয়ে সঞ্জু আহত হন। আন্দোলন চলাকালে পুলিশের অতর্কিত গুলিতে তাঁর বাম চোখে তিনটি এবং হাতে একটি রাবার বুলেট লাগে। গুরুতর আহত হয়ে সঞ্জু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাঁকে তৎক্ষণাৎ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে দ্রুত রংপুরের গ্লোবাল আই অ্যান্ড হেলথ কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দুই দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সঞ্জুকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বাংলাদেশ আই হসপিটালে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ আই হসপিটালে সঞ্জুর চোখ থেকে একটি রাবার বুলেট সফলভাবে অপসারণ করা সম্ভব হলেও, বাকি দুটি বুলেট এখনো চোখের ভেতরে রয়ে গেছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। সঞ্জুর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন, তবে দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে তা বহন করা অসম্ভব।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আহত সঞ্জু বলেন, ‘সারা দেশের মানুষের ওপর পুলিশ চালিয়ে হতাহত করা হয়েছে। যাদের কোনো দোষ ছিল না। আমি সহ্য না করতে পেরে ৪ তারিখে ছাত্রদের মিছিলে যাই। মিছিলটি গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ অতর্কিত গুলি শুরু করে। গুলি লাগার পর বুঝতে পারি চোখে কিছু একটা লেগেছে এরপর আর আমি কিছু বলতে পারি না।’
সঞ্জু বলেন, ‘পরে আমাকে লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। আমার বাম চোখে তিনটি রাবার বুলেট লাগে। ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে একটি রাবার বুলেট অপসারণ করা হলেও বাকি দুটি এখনো রয়ে গেছে। আমি বাম চোখ দিয়ে কিছু দেখতে পাচ্ছি না এবং প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছি। এই চোখ দিয়ে আদৌ দেখতে পারব কি না জানি না!’
সঞ্জুর মা মনজু রানি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছোলটা একটা ওয়ার্কশপে কাজ করত। ছাত্রদের পুলিশ গুলি করে হত্যা করছে—বিষয়টি আমার ছেলে মিছিলে গিয়েছিল। পুলিশের রাবার বুলেটে ছেলেটার চোখটা নষ্ট হওয়ার পথে। সারা শরীরে অসংখ্য রাবার বুলেট লাগছে। ছেলেটা উঠে দাঁড়াতেও পারছে না। ওর আয় দিয়েই আমাদের পরিবারটা চলত। এখন যে কী হবে বুঝতে পারছি না।’
মনজু রানি বলেন, ‘ডাক্তার যেভাবে বলেছে, তাতে ওর চোখটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উন্নত চিকিৎসা করালে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে উন্নত চিকিৎসা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কেউ ছেলেটার খোঁজখবর নিচ্ছে না। আমি বড় অসহায় হয়ে পড়ছি।’
সঞ্জুর মা সমাজের বিত্তবান ও সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন তাঁরা এগিয়ে এসে সঞ্জুর চিকিৎসায় সহায়তা করেন এবং এই বিপদ থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন। সঞ্জুর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে না আনা গেলে পরিবারের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
গত ৪ আগস্ট সারা দেশের মতো গাইবান্ধায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়। ছাত্র-জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনের দিকে গেলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ যৌথভাবে অতর্কিত ছাত্র-জনতার ওপর ইট-পাটকেল, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি করে। এতে কমপক্ষে পাঁচ শ আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত হন তিন শতাধিক।
‘তোমাকে দেখার মতো আর চোখ নেই, তবু গভীর বিস্ময়ে আমি টের পাই আজ নতুন বাংলাদেশের স্বাদ।’ —এমন অভিব্যক্তিই যেন ঠিকরে বের হচ্ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে চোখ হারানোর শঙ্কায় কাতর সঞ্জু মিয়ার মুখচ্ছবি থেকে। স্বৈরশাসক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের সাধারণ মানুষ প্রাণ খুলে মুক্ত বাতাস আর দুচোখ দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে দেখছেন।
কিন্তু ঠিক একই সময়ে চোখ হারানোর শঙ্কা ও সারা শরীরে বুলেটের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন সঞ্জু মিয়া। সারা দেশের ছাত্র-জনতার মিছিলে যখন গুলি চলছিল, তখন বিবেকের তাড়নায় রাস্তায় নেমেছিলেন গাইবান্ধা সদরের খোলাহাটি ইউনিয়নের সঞ্জু মিয়া (২৬)।
উপজেলার মিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. ইয়াসিন মিয়ার ৩ সন্তানের মধ্যে বড় সঞ্জু ছিলেন পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সংসারের হাল ধরার জন্য শহরের একটি ওয়ার্কশপে কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করতেন তিনি। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে দেশের মানুষ সম্ভাবনার নতুন সূর্য দেখলেও তাঁর জীবনে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ অন্ধকার।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা শহরের প্রাইম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন সঞ্জু। বাম চোখের ভেতরটা লাল হয়ে আছে। সারা শরীরে অসংখ্য বুলেটের দাগ। সাক্ষ্য দিচ্ছে, যৌক্তিক দাবি আদায়ে তাঁর প্রত্যক্ষ সংগ্রামের। শরীর এক পাশ থেকে অন্য পাশ করতে পারছেন না। কথা বলার সময় কাঁপছে শরীর।
৪ আগস্ট, গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একটি মিছিলে অংশ নিয়ে সঞ্জু আহত হন। আন্দোলন চলাকালে পুলিশের অতর্কিত গুলিতে তাঁর বাম চোখে তিনটি এবং হাতে একটি রাবার বুলেট লাগে। গুরুতর আহত হয়ে সঞ্জু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাঁকে তৎক্ষণাৎ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে দ্রুত রংপুরের গ্লোবাল আই অ্যান্ড হেলথ কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দুই দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সঞ্জুকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বাংলাদেশ আই হসপিটালে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ আই হসপিটালে সঞ্জুর চোখ থেকে একটি রাবার বুলেট সফলভাবে অপসারণ করা সম্ভব হলেও, বাকি দুটি বুলেট এখনো চোখের ভেতরে রয়ে গেছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। সঞ্জুর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন, তবে দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে তা বহন করা অসম্ভব।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আহত সঞ্জু বলেন, ‘সারা দেশের মানুষের ওপর পুলিশ চালিয়ে হতাহত করা হয়েছে। যাদের কোনো দোষ ছিল না। আমি সহ্য না করতে পেরে ৪ তারিখে ছাত্রদের মিছিলে যাই। মিছিলটি গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ অতর্কিত গুলি শুরু করে। গুলি লাগার পর বুঝতে পারি চোখে কিছু একটা লেগেছে এরপর আর আমি কিছু বলতে পারি না।’
সঞ্জু বলেন, ‘পরে আমাকে লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। আমার বাম চোখে তিনটি রাবার বুলেট লাগে। ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে একটি রাবার বুলেট অপসারণ করা হলেও বাকি দুটি এখনো রয়ে গেছে। আমি বাম চোখ দিয়ে কিছু দেখতে পাচ্ছি না এবং প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছি। এই চোখ দিয়ে আদৌ দেখতে পারব কি না জানি না!’
সঞ্জুর মা মনজু রানি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছোলটা একটা ওয়ার্কশপে কাজ করত। ছাত্রদের পুলিশ গুলি করে হত্যা করছে—বিষয়টি আমার ছেলে মিছিলে গিয়েছিল। পুলিশের রাবার বুলেটে ছেলেটার চোখটা নষ্ট হওয়ার পথে। সারা শরীরে অসংখ্য রাবার বুলেট লাগছে। ছেলেটা উঠে দাঁড়াতেও পারছে না। ওর আয় দিয়েই আমাদের পরিবারটা চলত। এখন যে কী হবে বুঝতে পারছি না।’
মনজু রানি বলেন, ‘ডাক্তার যেভাবে বলেছে, তাতে ওর চোখটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উন্নত চিকিৎসা করালে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে উন্নত চিকিৎসা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কেউ ছেলেটার খোঁজখবর নিচ্ছে না। আমি বড় অসহায় হয়ে পড়ছি।’
সঞ্জুর মা সমাজের বিত্তবান ও সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন তাঁরা এগিয়ে এসে সঞ্জুর চিকিৎসায় সহায়তা করেন এবং এই বিপদ থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন। সঞ্জুর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে না আনা গেলে পরিবারের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
গত ৪ আগস্ট সারা দেশের মতো গাইবান্ধায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়। ছাত্র-জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনের দিকে গেলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ যৌথভাবে অতর্কিত ছাত্র-জনতার ওপর ইট-পাটকেল, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি করে। এতে কমপক্ষে পাঁচ শ আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত হন তিন শতাধিক।
ছেলের দাবি, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁর চাচা ও চাচাতো ভাইরা পরিকল্পিতভাবে আয়েশা বেগমকে হত্যা করেছেন। মরদেহের মুখমণ্ডলে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পুলিশ এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করেছে।
১ মিনিট আগেদেশের অন্যতম ব্যবসায়ী গ্রুপ ট্রান্সকম লিমিটেডের শেয়ার জালিয়াতি করে দখল ও ভুয়া পারিবারিক সেটেলেমেন্ট দলিল তৈরির দুটি মামলায় গ্রুপটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানসহ ৬ কর্মকর্তার জামিন বাতিল করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিভিশন আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
৭ মিনিট আগেরাজধানীর মিরপুরে গ্যাস লিকেজ থেকে সৃষ্ট বিস্ফোরণে দগ্ধ সাতজনের মধ্যে আব্দুল খলিল (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। আজ সোমবার সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি মারা যান।
১১ মিনিট আগেরাজধানীতে বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন খবরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে। এ সময় ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে যাত্রীদের তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
২৭ মিনিট আগে