Ajker Patrika

সাংবাদিক দেখে পালালেন আসল ও নকল কাজি, বর-কনেও উধাও

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি
সাংবাদিক দেখে পালালেন আসল ও নকল কাজি, বর-কনেও উধাও

একটি বিয়ে নিবন্ধন করতে গিয়ে সাংবাদিক দেখে পালালেন আসল ও নকল দুই কাজি। এরপর বর ও কনেকে নিয়েও উধাও হয়েছেন কয়েকজন যুবক। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের বদরগঞ্জ পৌর শহরে।

জানা গেছে, উপজেলায় দুই সন্তানের জনক এক ব্যক্তির (৪৫) সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীর (২০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেম সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানতে পেরে দুই বছর আগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা এক ছেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেন। বিয়ের পরেও দুই সন্তানের জনক ওই ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থেকে যায় শিক্ষার্থীর। গতকাল মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা ভূমি কার্যালয় সংলগ্ন তাঁর বিকাশের দোকানে ডেকে নেন ওই ব্যক্তি। পড়ে কয়েকজন যুবককে নিয়ে রাত ৮টার দিকে মেয়েটিকে দলিল লেখক আনারুল সরকারের বাড়িতে নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির বাবা তাঁকে আনতে ওই বাড়িতে গেলে বরের হাতে নেওয়া যুবকেরা তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। 

সেই সঙ্গে আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুই সন্তানের জনককে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন ওই যুবকেরা। সেখানে ডাকা হয় দুজন কাজিকে। একজন নিবন্ধন বই বের করে ওই শিক্ষার্থীর তালাকনামায় স্বাক্ষর নেওয়া শুরু করেন, আরেকজন নিবন্ধন বই নিয়ে পাশে বসে থাকেন। যাতে তালাকের পর তিনি দুই সন্তানের জনকের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বিয়ে নিবন্ধন করতে পারেন। এমন মুহূর্তে দুজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হলে তালাক নামায় স্বাক্ষর নেওয়া কাজি তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ত্যাগ করা কাজির নাম নুরুল ইসলাম। তিনি লোহানীপাড়া ইউনিয়নের নিকাহ নিবন্ধক। 

আরেকজন সাংবাদিক দেখে বলেন, আমি আসল কাজি না। কালুপাড়া ইউনিয়নের নিকাহ নিবন্ধক নজরুল ইসলামের বই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছি। আমাকে এখানে জোর করে নিয়ে আসেন কয়েকজন যুবক। এই কথা বলে তিনি প্রাচীর টপকে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়া নকল কাজির  নাম মোবারক উল্লাহ্। তিনি এহিয়াগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। আসল ও নকল কাজি  পালানোর পর মুহূর্তেই ওই যুবকেরা বাড়ি থেকে দুই সন্তানের জনক ওই ব্যক্তি ও কনেকে নিয়েও উধাও হন। উধাও হওয়ার আগে ওই ব্যক্তি বলেন, আমার স্ত্রী প্রতিবন্ধী। প্রেমের সম্পর্ক থেকেই বিয়ে করছি। 

শিক্ষার্থী বলেন, আমার প্রেমের সম্পর্ক বহুদিনের। বাবা-মা আমার অমাতে অন্যের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন।

বাসার মালিক আনারুল সরকার বলেন, ওই ব্যক্তি আমার পরিচিত। তাই তিনি মেয়েটিকে নিয়ে আমার বাড়িতে বিয়ে করার জন্য এনেছিলেন। এই বিয়েতে ঝামেলা হতে পারে ভেবে রাতেই তাঁদেরকে বের করে দিয়েছি।

গতকাল বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, রাতে মেয়েটিকে আনতে গিয়েছিলাম, কিন্তু আসেনি। আর ওই মেয়ের খোঁজ নিইনি। এখন সে আমার মেয়ে না।

তালাকে মেয়েটির স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাজি নুরুল ইসলাম দাবি করে বলেন, ওইটা তালাক হয় নাই। স্বাক্ষর নেওয়ার সময় জানতে পারি মেয়েটির পরিবারের কেউ আসেনি। তাই সেখান থেকে চলে আসি। অন্যের হাতে নিকাহ নিবন্ধন বই দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কালুপাড়া ইউনিয়নের কাজি নজরুল ইসলাম বলেন, ভুল হয়েছে, মোবারক উল্লাহর কাছ থেকে বই নিয়ে নেব। আর দেব না কোনো দিন।

পৌর শহরের নিকাহ নিবন্ধক (কাজি) খাদেমুল ইসলাম বলেন, যে এলাকায় ঘটনা সেই এলাকার কাজি আমি। আমাকে ডাকা হয়েছিল তালাক ও বিয়ে নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু আমি যাইনি। কারণ একই দিনে তালাক ও বিয়ে হতে পারে না। যারা তালাক ও বিয়ে নিবন্ধনের জন্য এসেছিলেন তাঁরা নিয়ম ভঙ্গ করে এসেছিলেন। এ কারণে সাংবাদিক দেখে পালিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম ছেলে বিয়ে করে পরিবারহারা, স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার

মাদারীপুরে ৩ খুন: ঘটনার পেছনে পা ভাঙার প্রতিশোধসহ ৩ কারণ

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

স্ত্রীর সামনে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, বোমা ফাটিয়ে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট

ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত