পঞ্চগড়ে গুজব ছড়িয়ে সড়ক অবরোধ ও মাইক্রোবাসে আগুন, আটক ১৯

শিপুল ইসলাম ও আল মামুন জীবন, পঞ্চগড় থেকে 
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ১১: ০১
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩, ১২: ২২

পঞ্চগড়ে দুজনকে গলা কেটে হত্যার গুজব ছড়িয়ে সড়ক অবরোধ ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে গাড়িটিতে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। 

এদিকে শনিবার দিবাগত রাত ১টার পর থেকে পঞ্চগড় শহরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শহরের ইন্টারনেট সংযোগ স্বাভাবিক হয়নি। 

এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাকেলে কয়েকজন যুবক শহরের মোড়ে মোড়ে গিয়ে গুজব রটায়—আহমেদনগরে আহমেদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন দুজনকে হত্যা করেছে। তখন দোকানপাট বন্ধ করে লোকজন দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। কিছু যুবক হোটেলের রান্নার জ্বালানি কাঠ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে সড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। এরপর তাঁরা ধাক্কামারা মোড়ে ঢাকা-পঞ্চগড় সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নগরীর ট্রাক টার্মিনালের সামনে কয়েক শ ক্ষুব্ধ মানুষ একত্রিত হয়ে একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয়। এ সময় পঞ্চগড়ের শহরের কদমতলা এলাকায় একটি জুতার দোকানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। 

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চগড় সদর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই তরুণ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রাতে গুজবের ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। গুজব রটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে।’ 

পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাৎ সম্রাট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গুজবের বিষয়ে মসজিদের মাইকে ব্যবসায়ী ও বাজারে আসা লোকজনকে জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। আশা করা যায়, আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।’ 

উল্লেখ্য, আহম্মদনগর এলাকায় তিন দিনব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসার আয়োজন করা হয়। এই জলসা বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পঞ্চগড় শাখা, সম্মিলিত খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ পরিষদ, ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ সমিতি, পঞ্চগড় কওমি ওলামা পরিষদ ও জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। এরপর শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল করেন ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় মিছিলে বাধা দেওয়ায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত