পাটগ্রামে ভাতা পেতে ভোগান্তি, টাকা যাচ্ছে অন্য নম্বরে

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯: ৪৪
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ১৭

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ভাতা পেতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সুবিধাভোগীরা। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীরা নানা অভিযোগ করছেন। অনেকের বিকাশ নম্বর সঠিক থাকলেও টাকা পাচ্ছেন না তাঁরা। টাকা যাচ্ছে অন্য নম্বরে। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়েও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। 

আজ সোমবার পাটগ্রাম উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, বিধবা ও প্রতিবন্ধীরা ভিড় করছেন। সবার অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না। প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা থেকে একাধিকবার সমাজসেবা কার্যালয়ে ঘুরেও কোনো কাজ হচ্ছে। উল্টো যাতায়াতের জন্য টাকা খরচ হচ্ছে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ জানান ভুক্তভোগীরা। 
 
পাটগ্রাম পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জারকোর্ট এলাকার আব্দুল আজিজ (৬৬) বলেন, ‘অনেকে টাকা পাইছে। আমি ৩ হাজার ও ১৫০০ টাকা পাইনি। যে নম্বর বিকাশ করে দিয়েছি ওই নম্বরে টাকা ঢোকেনি। সমাজসেবা কার্যালয়ের লোক অন্য একটা নম্বর বের করে লিখে দিয়ে বলল ওই নম্বরে নাকি টাকা গেছে। আমি তো ওই নম্বর চিনি না।’

পাটগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোজাম্মেল হক (৭৪) বলেন, ‘আমার দেওয়া বিকাশ নম্বরে টাকা আসে না। টাকা নাকি অন্য নম্বরে গেছে, এটা কীভাবে হলো?’ 

বুড়িমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বামনদল এলাকার প্রতিবন্ধী সীমা বেগমের বাবা আজিজুল হক বলেন, ‘প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে নিয়ে বেশ কষ্টে আছি। ভাতা পাইলে উপকার হয়। বহুদিন থেকে মোবাইলে ভাতা আসে না। কবে যে ঠিক হবে কে জানে!’ 
 
ভাতার জন্য দিনের পর দিন ঘুরছেন সমাজসেবা কার্যালয়ে। কিন্তু সমাধান মিলছে নাসমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন পাটগ্রাম উপজেলার বয়স্ক, বিধবা ও ‘স্বামী পরিত্যক্তা’, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পারসন) মাধ্যমে দেওয়া শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে। 

হয়রানি এড়াতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভাতাভোগীদের অনেকে অভিযোগ করছেন, তাঁদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে টাকা আসছে না। অন্য অপরিচিত নম্বরে টাকা যাচ্ছে। অনেকের মোবাইলে বিকাশ অ্যাকাউন্ট করা না থাকলেও সে নম্বরে টাকা চলে যাচ্ছে। এসব ঘটনায় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে দিনের পর দিন ধরনা দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘পাটগ্রাম উপজেলায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ২০ হাজার ৯৬ জন ভাতা পান। তাঁদের মধ্যে কিছু ভাতাভোগী নিজেদের ভুলের কারণে সমস্যায় পড়েছেন। কেউ বিকাশ অ্যাকাউন্ট না করেই নম্বর দিয়েছেন। আবার কেউ অন্য কারও নম্বর দিয়েছেন। ফলে টাকা গেলেও যার নম্বর তিনি বলছেন, টাকা আসেনি। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ছয় শর বেশি ভাতাভোগীকে ভাতা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সেগুলো ঠিক করার জোর চেষ্টা চলছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত