তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চলে ঢুকছে পানি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৮
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ৩৬

কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে ঢলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়ার সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। এ অবস্থায় ভাটিতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় তিস্তার নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করার পাশাপাশি ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগামী ১৮ ঘণ্টা তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তীতে পানি কমতে শুরু করবে। 

এদিকে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় জেলার রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের চর, সরিষাবাড়ি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়িরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে ভাঙন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। 

ইউনিয়নের গতিয়াশাম গ্রামের বাসিন্দা রাকিবুল বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে পানি বাড়তেছে। শনিবার কিছু বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সঙ্গে কিছু এলাকায় ভাঙনও আছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গতিয়াশাম গ্রামে ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের বসতভিটা ও গ্রামীণ সড়ক।’ 

 ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিচু এলাকার বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকতেছে। আমার বাড়িতেও পানি ঢুকছে। রাত পোহাতে পোহাতে আরও পানি ঢুকতে পারে।’ 

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস প্রামানিক বলেন, ‘ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে।’ 

পাউবো নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়াও ধরলার পানি কুড়িগ্রাম শহর (ধরলা সেতু) পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি ভূরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘জেলার সককটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তিস্তা ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছার সম্ভাবনা নেই। পূর্বাভাস অনুযায়ী তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টা পর পানি কমতে শুরু করবে।’ 

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, ‘শনিবার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছি। কিছু বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ স্থানীয়দের উদ্ধার ও খাদ্য সহায়তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত