রৌমারীতে বেড়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৬: ০৪

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত এক সপ্তাহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন বিভিন্ন বয়সের ৬৬ জন রোগী। চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তন, রোটা ভাইরাস ও ফুড পয়জনিং জনিত কারণে এ রোগ দিয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে জানা যায়, গত (৭ এপ্রিল-১৩ এপ্রিল) এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৬৬ জন শিশু ও বৃদ্ধ। এদের মধ্যে কেউ চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। এ ছাড়া বর্হি বিভাগে আরও প্রায় দুই হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তারা সু-চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র স্যালাইন, মিলছে না অন্য কোনো ওষুধ। কিনে আনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীর অভিভাবকেরা।

রাজীবপুরের কোদালকাটি ইউনিয়নের চরসাজাই এলাকার মারুফা খাতুন। তাঁর আট মাস বয়সের ছেলে যোবায়ের হোসেনকে নিয়ে চার দিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুধুমাত্র কলেরার স্যালাইন দিয়েছে। এ ছাড়া কেনোলা, লাইন সেট ও টেপসহ অন্য সব ওষুধ বাইরের দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।’ তাঁর ভাষ্য, ‘সরকারি হাসপাতালে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে গরিবেরা যাবে কোথায়’।

উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের উজান ঝগড়ারচর গ্রামের রফিকুল ইসলাম। তাঁর ১৬ মাস বয়সের ছেলে হোসাইনকে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এখান থেকে শুধু একটি স্যালাইন পেয়েছেন। অন্য সব ওষুধ বাইরের দোকান থেকে কিনে আনতে হয়েছে তাঁকে।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর এলাকার মাহমুদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বুধবার বিকেলে হঠাৎ ডায়রিয়া শুরু হয় তাঁর দুই বছর বয়সের শিশু সন্তান তোফা খাতুনের। আজ সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় তাঁর শিশু সন্তানকে শুধুমাত্র স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলার ডাটিয়ারচর এলাকার গোলজার হোসেনের দুই বছরের শিশু সন্তান সালমাকে ডায়রিয়া আক্রান্ত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে স্যালাইন ছাড়া অন্য কিছু মিলে না।’

রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তন, রোটা ভাইরাস ও ফুড পয়জনিং জনিত কারণে ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে এক সপ্তাহে ৬৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে বেশি ভাগই শিশু।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া বর্হি বিভাগে আরও প্রায় দুই হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। এ সময় সবাইকে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। এ ছাড়া আক্রান্তকে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত