পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোয়াইনঘাট, প্লাবিত ৭০ শতাংশ এলাকা

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৪, ১৪: ৪৫
আপডেট : ৩০ মে ২০২৪, ১৫: ০৬

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বাসিন্দারাই এখন বিপর্যস্ত। উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গোয়াইনঘাটের ৭০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে পানি উঠে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার। অনেকের ঘরের ভেতরে কোমরপানি। মালামালও নষ্ট হচ্ছে। ঘরের উনুন তলিয়ে যাওয়ায় রান্নাবান্নাও করতে পারছে না মানুষ। 

গতকাল বুধবার সকাল থেকেই গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়তে থাকে। রাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় বানের পানি কমার খবর পাওয়া গেছে।

উপদ্রুত মানুষ বলছে, এবারের পরিস্থিতি ২০২২ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। এদিকে, এ অবস্থায় বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের নানা টিম কাজ করছে।

পাহাড়ি ঢলের পানি সারী-পিয়াইন ও ডাউকি নদ-নদী দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পশ্চিম জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, বিছনাকান্দি, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ী, ফতেহপুর, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও এবং সদর ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সব কটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গোয়াইন নদে পানি ছিল ১১.৫১ মিটার (বিপৎসীমা ১০.৮২ মিটার) পিয়াইন নদে ১২.২৫ মিটার (বিপৎসীমা ১৩.০০ মিটার) এবং সারী নদীতে ১৩.৩০ মিটার (বিপৎসীমা ১২.৩৫ মিটার)।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোট ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর আবাদি জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ৩৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যাদুর্গত মোট পরিবার ৪২ হাজার ৯০০, মোট বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫০।

গোয়াইনঘাটের অনেক বাড়ি-ঘরেই পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ছাড়া ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ২ হাজার ৩৫৬ জন আশ্রয় নিয়েছে। গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে ৬৪৫টি। বিপুলসংখ্যক মানুষ নিকটস্থ আত্মীয়স্বজনের নিরাপদ উঁচু স্থাপনায়ও আশ্রয় নিয়েছে।

উপদ্রুত কয়েকটি এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বাড়িঘরে পানি উঠে আতঙ্কের মধ্যে আছেন তাঁরা। 

আসামপাড়া এলাকার সমলা বেগম বলেন, এমন ভয়াবহ বন্যা আগে দেখিনি। খুব দ্রুতগতিতে পানি বাড়ছে। পানি বেড়ে ঘরের সমস্ত জিনিস নষ্ট করছে। উনুনও জ্বলছে না ঘরে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব ভয়ে দিন কাটছে।

গোয়াইনঘাটের ইউএনও মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৭০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের সমন্বয়ে স্থানীয় ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে জাফলং পর্যটক ঘাটের দেড় শতাধিক নৌকা এবং প্রতিটি ইউনিয়নের স্থানীয় নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে। সবাইকে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যে অনেক বানভাসি মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে, কার্যক্রম চলমান থাকবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত