সিলেটে মুহূর্তেই উধাও ভোটকেন্দ্রের সামনের লম্বা সারি

লবীব আহমদ, সিলেট
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০৭
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ১০

সিলেট নগরীর দুর্গাকুমার পাঠশালায় ভোট দিয়েছেন সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি ভোটকেন্দ্রে ঢোকার খানিক আগে এই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা সারি দেখা যায়। ড. একে আব্দুল মোমেন ভোট দেওয়ার পরপরই সেই লম্বা সারির ভোটারেরা ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন।

আজ রোববার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সিলেট নগরের বন্দর বাজারের মধুবন সুপার মার্কেটের নিচে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেকের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নারীকে অবস্থান করতে দেখা যায়। পরে ৯টা ৫০ মিনিটে তাঁরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সকাল ১০টায় দুর্গাকুমার পাঠশালা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ দলের নেতা-কর্মীরা। ড. এ কে আব্দুল মোমেন ১০টা ২০ মিনিটে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন।

তবে এ সময় তাঁর সঙ্গে বা পরে কাউকে ভোট দিতে দেখা যায়নি। ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রেস ব্রিফিং শেষেই তাঁরা ভোট না দিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান।

ভোট না দিয়ে মুহূর্তেই সরে যান সবাই, শূন্য হয়ে যায় স্থানএ সময় ভোটকেন্দ্রের সামনের সারিতে দাঁড়ানো নারীদের প্রশ্ন করে জানা যায়, তাঁরা সবাই এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের নার্স। ‘কোন এলাকায় বাসা’ জিজ্ঞেস করলে তাঁরা ঘাবড়ে যান।

তবে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাসা বারুতখানা ও হাফিজ কমপ্লেক্সের পাশে। 

পারভীন আক্তার নামে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স প্রথমে তাঁর বাসা মোমিন চত্বর এবং পরে মোমিন খান চত্বর বলে জানান। কিন্তু খুঁজে দেখা গেছে, এই নামে সিলেটে কোনো জায়গা নেই। শেষে তিনি তাঁর বাসার ঠিকানা বলেন, হাফিজ কমপ্লেক্স। বাসার নম্বর বলতে গিয়েও আটকে যান তিনি। বাসার মালিকের নাম জিজ্ঞেস করলে অনেক ভেবে চিন্তে বলেন, আবদুল হামিদ।

লাইনে দাঁড়ানো অপরজনকে ‘কোথা থেকে এসেছেন’ জিজ্ঞেস করলে পাশে থাকা আরেক নারী উত্তর দেন-বারুতখানা। তাঁকে বাসা নম্বর জিজ্ঞেস করলে তিনি পালিয়ে যান। 

সিলেট নগরীর দুর্গাকুমার পাঠশালা কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেনপরে এই আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদক আরেক নারীকে প্রশ্ন করলে তিনিও দৌড়ে স্থান ত্যাগ করেন। 

এ সময় তারা এই ওয়ার্ডের ভোটার কি না জানতে চাইলে এক নারী সেখানকার ভোটার বলে দাবি করেন। কিন্তু নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি নাম ‘বলব না’ বলে চলে যান। 

একপর্যায়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক নারী জানান, সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকেই নার্স। তিনি জানান, বাইরের এলাকারও অনেক নার্স সেখানে এসেছেন।

এ বিষয়ে জানতে ওসমানী মেডিকেল নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দেন।

তবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সরকারি ছুটি চলতেছে। যাদের ডিউটি আছে তারা ডিউটি করতেছে। বাকিরা ছুটিতে। এখন বাইরে কে কী করল সেটা দেখার বিষয় তো আমার না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত