ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
Thumbnail image

মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের আয়োজনে ১১৮টি চা বাগানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার আলীনগর চা বাগানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. উর্মি বিনতে সালাম। সমাবেশে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভুক্তির জোর দাবি জানানো হয়। 

বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি অনিরুদ্ধ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও চা ছাত্র–যুব পরিষদ নেতা সজল কৈরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন, আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক হাবিব আহমদ চৌধুরী, লোক গবেষক আহমদ সিরাজ, আলীনগর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি গণেশ পাত্র, সাংবাদিক শাহীন আহমদ, আলীনগর ইউপি সদস্য রামবরচ কৈরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহাদেব ভূঁইয়া। 

মহাসমাবেশে পরিষদের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজারের ডিসি ড. উর্মি বিনতে সালামের কাছে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের কৃতি শিক্ষার্থী ও সমাজসেবকদের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। 

মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৌলভীবাজারের ডিসি উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘কাউকে পেছনে ফেলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ডিসি। তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান। 
 
সমাবেশ শেষে চা বাগানের ঐতিহ্যবাহী কাঠিনৃত্য, ঝুমুর নৃত্যসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মহাসমাবেশে সারা দেশের ১১৮টি চা বাগানের ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, হিন্দু ‘ভৌমিক’ আর মুসলমান ‘ভূঁইয়া’ প্রায় একই অর্থ বহন করে। ‘ভূঁইয়া’র উৎস সংস্কৃত শব্দ ‘ভূমি’। ‘ভূঁইয়া’ কোনো কোনো সময় ‘ভূঞা’ও লেখা হয়। এটি অহমিয়া ভাষায় বেশি লেখা হয় ভূমির মালিকানা অর্থেই। অর্থাৎ এই জনগোষ্ঠীকে আদি কৃষিজীবী সম্প্রদায় হিসেবেই মনে করা হয়। 

বাংলাদেশের ভূঁইয়া সম্প্রদায় বহুকাল ধরে তাঁদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, রীতি–রেওয়াজ লালন করে আসছে। বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের চা বাগান ও চা বাগানের বাইরে সরকারি ভূমিতে বসবাস করে আসছে তারা। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে এ সম্প্রদায় নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি হারাতে বসেছে। 

ভারতে স্বাধীনতার পর উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকার ভূঁইয়াকে তফসিলি জাতি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে। তবে এই উপজাতীয় পদবি শুধু সোনভদ্র জেলার জন্য প্রযোজ্য। ভূঁইয়া বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের তফসিলি জাতিতে অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা ঝাড়খণ্ডের মোট তফসিলি জাতি জনসংখ্যার ২১ শতাংশ। আর ভারতের উত্তর প্রদেশের ২০১১ সালের জনশুমারিতে ভূঁইয়া তফসিলি জাতির জনসংখ্যা ৪ হাজার ৯৫ জন দেখানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত