সাজার বদলে অভিযুক্তদের ফুল দিলেন আদালত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ০২

আসন্ন বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে কারাগারে ফুল এবং ডায়েরি দিয়ে ৭০ জন অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধনের লক্ষ্যে ৬ শর্তে বাবা মায়ের জিম্মায় দিলেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জ জেলা জজ আদালতের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। 

এ সময় আদালতের পক্ষ থেকে শিশুদের হাতে রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুল তুলে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে একটি ডায়েরিও উপহার দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়া শিশুরা আদালত প্রাঙ্গণে হাতে ফুল নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। এ সময় তাদের অভিভাবকেরা জানান শিশুদের আর এমন অপরাধমূলক কাজে জড়িত হতে দেবেন না। 

আদালত সূত্র জানায়, অভিযুক্ত এসব শিশুদের পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে মামলায় জড়ানো হয়েছিল। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগে এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হতো। এর ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয় এক অনিশ্চয়তা। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছিল। স্বাভাবিক জীবনে শিশুদের বেড়ে ওঠা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি করে দিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন। 
 
কারাগারের পরিবর্তে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থেকে সংশোধনের কতিপয় পথ বাতলে দিয়ে বিচারক অভিযুক্ত শিশুদের তাদের বাবা মায়ের জিম্মায় ফেরত পাঠালেন। 
 
যে ছয় শর্তে শিশুদের মুক্তি দেওয়া হলো, প্রতিদিন ২টি ভালো কাজ করা এবং তা আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডায়েরিতে লিখে রাখা ও বছর শেষে ডায়েরি আদালতে জমা দেওয়া, বাবা মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা, বাবা মায়ের সেবা যত্ন করা ও কাজে কর্মে তাদের সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং ধর্মকর্ম পালন করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকা, ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো। 

প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, যে সব শর্তে শিশুদের সংশোধনের সুযোগ দিয়ে পরিবারে ফেরত পাঠানো হল সেগুলো প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা আগামী এক বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর প্রতিটি শিশুর অভিভাবককে আদালতে এসে সে বিষয়ে অবহিত করতে হবে। 

সুনামগঞ্জ শিশু আদালতের অতিরিক্ত পিপি হাসান মাহবুব সাদি বলেন, আদালতের এমন রায় একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই রায়ের মধ্য দিয়ে ৭০ জন শিশু তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে এমনটা আমরাও প্রত্যাশা করি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত