সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে ডাকাতি করে ফেরার পথে গণপিটুনিতে ডাকাত দলের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। আত্মরক্ষার জন্য ডাকাতদলের সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে স্থানীয় ৫ জন আহত হয়। 

জানা যায়, রোববার রাত ৩টার দিকে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়া গ্রামে স্থানীয় জ্ঞান সেনের বাড়ির গেট ভেঙে ৫ / ৬ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ঢুকে পড়ে। বাড়িতে ঢুকে জ্ঞান সেনের ছেলে দুলাল সেনসহ (৪০) পরিবারের সদস্যদের অস্ত্র ধরে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে এবং মারধর করে। এ সময় ডাকাতেরা নগদ ২ লাখ টাকা, ক্যামেরা, ১ হাজার কানাডীয় ডলার, ৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন দুলাল সেন। 

ডাকাতির পরে ভোররাতে ডাকাতদল উপজেলার ঢাকাদক্ষিণের পশ্চিম দত্তরাইল জামে মসজিদের ইমামকে জিম্মি করে তাঁর ঘরে আশ্রয় নেয়। মসজিদের ইমাম বিষয়টি কৌশলে স্থানীয়দের জানিয়ে দিলে স্থানীয়রা ডাকাত দলকে ঘিরে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলের দুজন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে এবং কয়েকজন স্থানীয়দের ধাওয়ায় আহত অবস্থায় পালিয়ে যায়। তবে গণপিটুনিতে একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ সময় স্থানীয় ৫ জন আহত হয়েছেন। 

আহতরা হলেন পশ্চিম দত্তরাইল গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২২), মানোয়ার হোসেন (২৪), একই এলাকার আতিব আলীর ছেলে সাইদুল ইসলাম (৪০), বকু মিয়ার ছেলে আরমান আহমদ (৩০), মনন আহমদের ছেলে দুলাল আহমদ (২৭)। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় প্রতিবেশীরা। তবে নিহতের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। 

এ ঘটনার পর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে গোপালগঞ্জ থানা-পুলিশ। অপরিচিত সন্দেহভাজন কাউকে দেখা মাত্রই পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের কয়েকটি দল স্থানীয় টিলাসহ বিভিন্ন সম্ভাব্য জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া ওই মসজিদের ইমামকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

এই বিষয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় গণপিটুনিতে একজন নিহত হয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।

নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

এ ঘটনায় সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব বিজয় তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আলম রোকনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।